Connecting You with the Truth

ভারতের আদালত দুই নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করল

শিশু অপহরণ ও তাদের দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্যকরা এবং শিশুখুনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে রেনুকা কিরণ সিন্ধে ও তার সৎবোন সিমা মোহান গাভিত মহারাষ্ট্রে এই অপরাধগুলো ঘটান।

জুলাইয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এই দুইবোন রেনুকা কিরণ সিন্ধে ও সিমা মোহান গাভিতের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন।

ক্ষমাভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি প্রত্যাখ্যান করায় ধরে নেয়া হয়েছিল, এই প্রথম দেশটিকে কোন নারী অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে যাচ্ছে।

প্রাণভিক্ষা নাকচ ও ফাঁসি কার্যকর করার মধ্যে যে সময় মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার পেয়ে থাকে তা আগামী শনিবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই উচ্চ আদালতের আদেশে দণ্ড কার্যকর স্থগিত হয়ে গেল।

দণ্ডিত দুই নারী রেলস্টেশন, মন্দির, মেলা এবং বিভিন্ন পার্ক থেকে ১৩ শিশুকে অপহরণ করেন। এদের মধ্যে অন্ততপক্ষে ৫ শিশুকে তারা হত্যা করেন।

এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৬ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতে পাওয়া তাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। রায়ে সুপ্রিমকোর্ট জানায়, “শুধুমাত্র তারা নারী এ ছাড়া এই দুই নারীর শাস্তি কমাতে তাদের পক্ষে যাওয়ার মতো কোন পরিস্থিতিই তৈরি হয়নি।”

পুলিশ নিহত ওই ৫ শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল। তাদের সবার বয়স ছিল ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে।

মঙ্গলবার দণ্ডিত ওই দুই বোন মুম্বাই হাই কোর্টে আপিল করেন। আপিল আবেদনে তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরে ১৩ বছর বিলম্ব হওয়ার বিষয়টিকে অতিরিক্ত দাবি করে তার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি বিবেচনার আর্জি জানান।

দণ্ডিত দুই বোনের আইনজীবী সুদীপ যশওয়াল বলেন, “আদালত দণ্ড কার্যকরে এই অত্যাধিক বিলম্বের বিষয়টি আমলে নিয়ে তাদের আবেদন গ্রহণ করেছে।”

এ ব্যাপারে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

গত দুই বছরে ভারতে দুইজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

তাদের একজন ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার একমাত্র জীবিত জঙ্গি মোহামেদ আজমল কাসাবকে ২০১২ সালের নভেম্বরে পুনেতে ফাঁসি দেয়া হয়। আর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২০০১ সালে ভারতের পার্লামেন্টে হামলার অভিযোগে কাশ্মিরের আফজাল গুরুকে দিল্লির তিহার জেলে ফাঁসি দেয়া হয়।

ভারতের ইতিহাসে কতজন এ পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলেছেন তা নিয়ে বির্তক আছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, এই সংখ্যাটি ৫২।

কিন্তু ‘পিপলস ইউনিয়ন অব সিভিল রাইটস’ এর দাবি শুধুমাত্র ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৩ সালের মধ্যেই ১৪২২টি ফাঁসির ঘটনার দালিলিক উপাত্ত আছে তাদের সংগ্রহে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ভারতে কোন নারীর ফাঁসি কার্যকর হয়নি।

রেনুকা ও সিমার অপরাধের সঙ্গী ছিলেন তাদের মা আনজানাবাই। ওই শিশুদেরকে দিয়ে তিনি জোর করে ভিক্ষাবৃত্তি করাতেন। যে শিশুদের ‘উপার্জন ক্ষমতা’ কমে যেত তাদের হত্যা করা হত।

Comments
Loading...