মাগুরার বিখ্যাত ওস্তাদ খালেক সাপুড়িয়ার মৃত্যু
ওবায়দুর রহমান, মহম্মদপুর, মাগুরা:
বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ সাপুড়িয়া ওস্তাদ আ. খালেক বিশ্বাস (৬৫) গত রবিবার সকাল ১০টায় বার্ধক্যজনিত কারণে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি———রাজিউন)। তিনি দীর্ঘদিন লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি স্ত্রী, ২ কন্যা ও ১ পুত্র রেখে গেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতে তার অসংখ্য শিষ্য রয়েছে। তার বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা গ্রামে। তিনি ছোটবেলা থেকেই সাপ ধরা, সাপের খেলা দেখানো, কবিরাজী ঔষধ বিক্রি করা পেশায় ঝুঁকে পড়েন। তিনি ভারতের নদীয়ার বিখ্যাত মাজু বিবির কাছে প্রথম শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। পরে বাংলাদেশের কালো কোকিল, নিহাল উদ্দিনসহ ১০১ জন ওস্তাদের কাছ থেকে তিনি সাপ ধরা, সাপ বশ করা, সাপের বিষ নামানো বিষয়ে দীক্ষা গ্রহণ করেন বলে জনশ্র“তি রয়েছে। তিনি ভারতের আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গে সুপরিচিত ছিলেন। বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলায় ওস্তাদ খালেকের মলম এক সময় সুপ্রসিদ্ধ ছিল। বাংলাদেশ সরকার খালেক মিয়াকে সাপ খেলা এবং ঔষধ তৈরি ও বিক্রয়ের রেজিস্ট্রেশনও দিয়েছিল (যার নম্বর-০৩)। সাপ খেলা দেখানোর সময় তিনি সাপের কামড় ও সাপের বিষ পান করে খেলা প্রদর্শন করতেন। সাপে কাটা রোগী ভাল করাই ছিল তার পেশা। এছাড়া তিনি নিজে তৈরি করতেন বিভিন্ন রোগের কবিরাজী ঔষধ। বর্তমানে নহাটায় তার প্রধান শিষ্য মহানন্দ বিশ্বাস জানান, ওস্তাদের কাছ থেকেই সে ছোটবেলা থেকে সাপ ধরা, বিষ নামানো, ঔষধ তৈরি শিখেছে। এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মহানন্দ। খালেক সাপুড়িয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে তাকে শেষবারের মত দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত লোক তার বাড়িতে ভিড় করে। রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতিতে নহাটা-ইন্দ্রপুর ঈদগাহে জানাযা শেষে নহাটা-ইন্দ্রপুর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।