Connecting You with the Truth

মানুষ অতি বাস্তব পরিণতিও এড়িয়ে যায় কেন?

মানুষ মানুষের ব্রেইন যে সমস্যার সমাধান বের করতে পারে না সেটা অতি দ্রুত মাথা থেকে আউট করে দেয়। কেবল যে চাপ সে সহ্য করতে পারবে সেটা নিয়ে চিন্তা করে। সমস্যা হলো- এটার যেমন সুফল আছে তেমন কুফলও আছে ভয়াবহ।উক্ত ঘটনার
যেমন- মানুষের ব্রেইন যদি তার সাধ্যের অতীত বিষয়গুলোকে অতি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে থাকে, দেখা যাবে সে হাজার প্রকারের দুর্ঘটনার কথা ভেবে রাস্তায় বেরই হতে পারবে না। কিংবা কীভাবে সে মারা যাবে সেটা নিয়ে এতই চিন্তিত হয়ে পড়বে যে, তার পক্ষে স্বাভাবিক জীবনযাপন করাটাই অসম্ভব হয়ে দাড়াবে। মানুষের ব্রেইন এই বাড়তি চিন্তাগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে নিজেকে শক্ত-সমর্থ রাখে। এটা সুফল।
আর কুফল হলো- নিজের দায় এড়ানোর প্রবণতা। যেমন সমাজে ভয়াবহ অশান্তি, হত্যা, গুম, হানাহানি, রক্তারক্তি, প্রতারণা, স্বার্থচর্চা, পাশবিকতা দেখার পরও বউ-বাচ্চা, পরিবার-পরিজন নিয়ে দিব্যি জীবনযাপন করা। সমাজের অধঃপতনকে আমলে না নেওয়া।
সে যখন দেখে পুরো সমাজটাই অধঃপতনে গেছে, রাতারাতি এ অবস্থা পরিবর্তন করা তার একার পক্ষে সম্ভব নয় তখন মুহূর্তেই তার ব্রেইন অতি বড় এই সমস্যার গুরুত্বকে সর্বনিম্নতে নামিয়ে আনে। এটা নিয়ে তার আগ্রহই হারিয়ে যায়।
একই কারণে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়া কিংবা পরমাণু যুদ্ধে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়া ইত্যাদি বাস্তব অতি গুরুতর সমস্যা নিয়ে কোনো আর্টিকেল নজরে পড়লে দেখা যায় শিক্ষিত-সচেতন মানুষও বিষয়টিকে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যায়। ‘সবার যা হবে আমারও তা হবে’ এই ভেবে স্বস্তি লাভ করা হয় তখন।
এভাবে নির্লিপ্ত থাকতে থাকতে বর্তমানে যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে মানবজাতি তাকে আক্ষরিক অর্থেই মুত্যুখাদ বললে ভুল বলা হবে না। নিজের অস্তিত্বকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে রেখে মানুষ নির্বিকার চিত্তে খাচ্ছে-দাচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, খেলাধুলা করছে, কারও কোনো চিন্তাই নেই।
মানুষের আত্মিক অধঃপতন, সামাজিক ও পারিবারিক অশান্তি, যুদ্ধ, সংঘাত, প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা ও পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাব্য বিভীষিকা ইত্যাদি সমস্যাগুলো মানুষ নিজেই সৃষ্টি করেছে। এর সমাধানও তাকেই করতে হবে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এত গুরুতর ব্যাপারে তাদের সীমাহীন নির্লিপ্ততা ও অনাগ্রহ শেষাবধি তাদেরকে কোন বাস্তবতার জগতে নিক্ষেপ করবে তা অনুমান করলে গা শিউরে ওঠে।

আসাদ আলী/কলামিস্ট

Comments
Loading...