Connecting You with the Truth

মৃত্যু উপত্যকায় পাথরখণ্ডের চলাচলের রহস্য উম্মোচন

death-valley_35439_0
রকমারী ডেস্ক:
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালি বা মৃত্যু উপত্যকার দুর্গম এলাকার দানবীয় পাথরখন্ডগুলোর বিক্ষিপ্তভাবে স্থানান্তরনের রহস্যের সমাধান হয়েছে। পিএলওএস ওয়ান নামে একটি বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকীতে বৃহ¯পতিবার এ স¤পর্কিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে পাথরগুলোর স্থানান্তরনের পেছনে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে বায়ুতাড়িত ভাসমান বরফখন্ড। মৃত্যু উপত্যকার রেস র্ট্যাক প্লায়া নামক এলাকার পাথরগুলো হঠাৎ করেই কেন স্থানান্তরিত হত তা এতদিন রহস্যাবৃতই ছিল। বিষয়টি সাধারণ মানুষ ও বিজ্ঞানীদেরকে এতদিন প্রায় হতবুদ্ধিই করে রেখেছিল। এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন স্ক্রিপস ইনস্টিটিউশন অফ ওশেনোগ্রাফির জীবাশ্ম প্রাণী ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানী রিচার্ড নরিস। গত ডিসেম্বরে তিনি বিষয়টি সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণত নড়াচড়া ছাড়াই কয়েকযুগ বা তারও বেশী সময় ধরে পাথরগুলোর কোনও একটা জায়গায় স্থির হয়ে বসে থাকার সম্ভাবনাই বেশি। তবে বিশেষ বিশেষ সময়ে সেগুলো ধীরগতিতে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে। এরকমটা ঘটে মূলত বাতাস ও বরফের এক অদ্ভূত সংমিশ্রনের সৃষ্ট তাড়নার ফলে। আর ডেথ ভ্যালির মতো অসহনীয় তাপমাত্রাযুক্ত এলাকাতেই এ ধরণের অদ্ভূত সংমিশ্রন দেখা যায়। শীতের শেষে এ ধরণের শুষ্ক উপত্যকার উপরিভাগে জমে থাকা পাতলা বরফের আবরন হালকা বাতাসেই ভেঙ্গে যায়। এরপর পানিতে ভাসমান ভেঙ্গে যাওয়া বরফখন্ডগুলো বাতাসের প্রভাবে পাথরগুলোকে ঠেলে নিয়ে যেতে থাকে। বরফ ও বাতাসের এই সংমিশ্রন পাথরগুলোকে প্রতি মিনিটে অন্তত কয়েকগজ পর্যন্ত দূরে নিয়ে যায়। পানিতে ভাসমান এই বরফখন্ডগুলোর কোন কোনটির ওজন সর্বোচ্চ ৭০০ পাউন্ড বা ৩১৮ কেজি পর্যন্তও হয়ে থাকে। বাতাস ও পানির প্রভাবেই পাথরগুলোকে স্থানান্তরে সক্ষম হয়। এর আগে ভাবা হত যে, আকস্মিক ভূমি ধস বা ভূতলের দানবীয় চুম্বকখন্ডগুলোর কারসাজিতেই পাথরগুলো স্থানান্তরিত হত। গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী বিজ্ঞানী নরিস বলেন, ‘মৃত্যু উপত্যকার পাথরগুলোর স্থানান্তরিত হওয়ার ঘটনা হয়তো অন্যরাও দেখে থাকতে পারে। কিন্তু এতটাই ধীর গতিতে পাথরগুলো স্থানান্তরিত হয় যে, খোলা চোখে দেখে তা বোঝা সম্ভব নয়। আর পানি শুকানোর আগ পর্যন্ত পাথরগুলোর স্থানান্তরিত হওয়ার পথরেখাও দেখা যায়না। পাথরের ভেতরে স্থাপিত মোশন একটিভেটেড জিপিএস ইউনিট ও ক্যামেরা ব্যবহার করে গবেষকদল এই রহস্য উম্মোচন করেন।

Comments
Loading...