রংপুরে ৯৫৬টি পূজামণ্ডপে রং-তুলির অপেক্ষায় প্রতিমা
রংপুর প্রতিনিধি:
হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে সারাদেশের ন্যায় রংপুরেও পুরোদমে চলছে প্রতিমা ও পূজা মন্ডপ তৈরির কাজ। প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। রংপুর জেলায় ৯৫৬ টির পূজা মন্ডপের বেশীর ভাগ মন্ডপে বাকি শুধু রং তুলির ছোয়া।
মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন পূজা মন্ডপ ও মন্দির ঘুরে দেখা যায়, দূর্গাপূজা উৎসবকে পরিপূর্ণরূপ দিতে মন্দির গুলােতে চলছে ব্যাপক সাজসজ্জার প্রস্তুতি।প্রতিটি পূজা মন্ডপের জন্য তৈরি হচ্ছে দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী,কার্তিক, অসুর, সিংহ, হাস, পেঁচা,সর্পসহ বিভিন্ন প্রতিমা। ইতােমধ্যে অনেক মন্ডপে শুরু হয়েছে তুলি ও সাজসজ্জার কাজও। বৃষ্টির হাত থেকে প্রতিমা বাচাতে মাথার উপর ত্রিপলের ছাউনি তৈরি করা হয়েছে।
রংপুর নগরীর চিলমন পূর্বপাড়া শারদীয় দূর্গা মন্দির কমিটির সদস্য গৌরাঙ্গ রায় বলেন, প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হচ্ছে। স্থানীয় শিল্পী ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিল্পীরা এখানে এসে রং তুলির কাজ করছেন।
নগরীর একটি মন্দিরে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত শিল্পী শ্যামল কুমার পাল জানান, ‘প্রতিবছর পূজার তিনমাস আগে থেকে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ততা শুরু হয়। এই কয়েক মাস দিনরাত সমানে কাজ করতে হয়। আর মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে দুর্গাপূজার। প্রতিমা মােটামুটি তৈরি হয়ে গেছে। এখন শুধু রঙ দিয়ে সৌন্দর্য বর্ধিত করতে হবে’।
সদর উপজেলা পূর্জা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব সঞ্জিত কুমার নাড়ু বলেন, করােনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পূজা মন্ডপের সংখ্যা কোথাও কমে গিয়েছে। সেই সঙ্গে গতবারের থেকে এবার বেড়েছে প্রতিমার মজুরি। দূর্গাপূজাকে ঘিরে তাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক ধীমান ভট্টাচার্য বলেন, এবার রংপুরে ৯৫৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এর মধ্যে মহানগরীতে ১৫৪টি ও জেলার ৮ উপজেলায় ৮০২টি মণ্ডপ।
কয়টি মণ্ডপ ঝুঁকিপূর্ণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কতটি তা সংখ্যায় বলা সম্ভব নয়। দেশের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে সবকিছু। তবু আমরা আট উপজেলায় ২০ থেকে ২২টির মত মন্ডপ ঝুঁকিপূর্ণ বলে গণ্য করছি।
তিনি জানান, এরই মধ্যে মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরিতে মাটির কাজ শেষ হয়েছে।ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপনে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক ধনজিৎ ঘোষ তাপস বলেন,দুর্গাপূজা যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় এজন্য জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলােচনা করে দুর্গোৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য কাজ করা হচ্ছে । স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা পাঁচ দিন ব্যাপী শারদীয় উৎসব পালন করবাে।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, ‘প্রতিমা তৈরি, পূজা উদযাপন এবং প্রতিমা বিসর্জনসহ দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক ও সজাগ থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে স্বাস্থবিধি মেনে পূজা উদযাপনের বিষয়টি নিয়েও মতবিনিময় করা হয়েছে।’
‘পাশাপাশি যেসব স্থানে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে সেখানেও ওই স্থানের থানা পুলিশ সদস্যদের প্রতিদিন খোঁজখবর রাখতেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।’