Connecting You with the Truth

রাজবাড়ীতে কার্বনহ্রাস প্রকল্পের নামে কোটি টাকা উত্তলোন

arab-see-moneyআরবসাগর,মুম্বাই,লক্ষ লক্ষ টাকারাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীতে কার্বনহ্রাস প্রকল্পের নামে প্রায় কোটি টাকা উত্তলোন করে সাধারন মানুষদের ধোকা দিচ্ছে এক প্রতারক চক্র। রাজবাড়ী ,গোয়ালন্দের সাধারন মানুষ প্রতারনার ব্যাপারটা বুঝতে পারলেও তাদের টাকা উঠাতে পারছে না।

জানা গেছে রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলা ও গোয়ালন্দ উপজেলার সহজ সরল লোকদেরকে কার্বন হ্রাস প্রকল্পের সদস্য বানিয়ে এক একটি গাছ প্রতি ১৫০/১৬০ টাকা করে ধারাবাহিক ১০ বছর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা করে নিয়েছে রুপালী হেলথ কেয়ার ফাউন্ডেশনের কর্মীরা । এভাবে প্রায় দের লক্ষাদিক লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। এছারাও শতাধিক বেকার ছেলে-মেয়েদের কার্বন হ্রাস প্রকল্পে চাকুরী দিয়ে প্রত্যেক জনের নিকট হতে ৬ হাজার টাকা হতে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অলিখিত জামানত হিসাবে নিয়েছে রুপালী হেলথ কেয়ার ফাউন্ডশনের গোয়ালন্দ উপজেলা ব্যবস্থাপক -মো: মোজম্মেল হোসেন ও রাজবাড়ী সদর উপজেলা ব্যবস্থাপক  মো: তিতাস খান ।

রুপালী হেলথ কেয়ার ফাউন্ডশেন এর -গোয়ালন্দ উপজেলা ব্যবস্থাপক মোঃ মোজাম্মেল হোসেন তার গোয়ালন্দ কার্যালয়ে সাক্ষাৎ কালে জানান , আমাদের এই বায়ুমন্ডলে কার্বন হ্রাস করন প্রকল্পের সহযোগীতায় আছে জাতীসংঘের বিশেষ কমিটি (ঁহভপপপ),অর্থায়নে বিশ্ব ব্যাংক , তত্ত্বাবধানে- গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয় এবং বন বিভাগ । অবগত আছেন , জাতীসংঘের মহাসচিব – বান কি মুন , রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ , প্রধানমন্ত্রী- শেখ হাসিনা । বাস্তবায়নে রূপালী হেলথ কেয়ার ফাউন্ডেশন ।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা ব্যবস্থাপক মো: তিতাস খান জানান, যার যতগুলো কাঠ জাতীয় গাছ আছে, এই গাছ দেখিয়ে আমাদের কার্বন হ্রাস প্রকল্পের সদস্য হলে একেকটি গাছ প্রতি পাবে ২.৫ ডলার অর্থাৎ ১৫০-১৬০ টাকা । (যে ১০০ টি গাছ দেখিয়ে সদস্য হবে সে পাবে প্রতিবছরে ১৫-১৬ হাজার টাকা করে ধারাবাহিক ১০ হাজার পর্যন্ত) । একজন সদস্য হতে আমরা মেমো ভাউচার দ্বারা ৫০ টাকা হতে ১০০ টাকা করে নিচ্ছি।
টাকা পাওয়ার কথা শুনে আমাদের প্রকল্পে আনেক লোক সদস্য হয়েছে । প্রতিটি ইউনিয়নে ৫ জন করে মাঠ কর্মী ও ১ জন করে সুপার ভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে । প্রতিটি ইউনিয়নে সদস্য টার্গেট ৫ হাজারজন গাছ মালিক। আরও বলেন বাংলাদেশের ১৯ টি জেলায় কার্বন হ্রাস প্রকল্পের কাজ চলছে। জঊউউ+ প্রকল্পের ঈঊজ (পবৎঃরভরবফ বসরংংড়হ ৎবফঁপঃরড়হ ঢ়ৎড়লবপঃ নু ঃৎববং) প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেইস লাইন সার্ভের অনুমতি প্রসঙ্গে রাজবাড়ী জেলা প্রসাশকের কার্যালয়ের সাধারন শাখার মোঃ কাওসার হোসেন (সহকারী কমিশনার) ও রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান মাহাবুবুর রহমান এদের স্বাক্ষরিত অনুমোদন আছে। গাছ মালিকদের সদস্য বানিয়ে টাকা নেওয়ার সরকারী কোন অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে , তিনি বলেন জেলা প্রশাষক ও উপজেলা প্রশাষক কার্যলয়ের আনুমোদন আছে । কিন্তু টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোন সরকারী অনুমোদন দেখাতে পারেন নাই।
০১/০৯/২০১৫ইং তারিখে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান কার্বন হ্রাস প্রকল্পের গাছ জরিপ করার জন্য ( সার্ভেয়ারের জন্য ) লিখিত আনুমোদন দিয়েছি। কিন্তু কোন গাছ মালিকের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেওয়ার জন্য অনুমোদন দেই নাই ।
২৫/০৮/২০১৫ইং তারিখে রাজবাড়ী জেলা বন বিভাগের বন কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন (ঋজ) জানান , কার্বন হ্রাস প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে বন মন্ত্রনালয় হতে লিখিত ও মৌখিক কোন নির্দেশনা পাই নাই। এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা ।
বিভিন্ন ইউনিয়নে কাবর্ন হ্রাস প্রকল্পের কয়েকজন সদস্যদের সাথে দেখা করলে তাদের মধ্যে রাজবাড়ী পৌরসভার লক্ষীকোল গ্রামের বাসিন্দা রুপালি বেগম জানান আমি ও আমার ভাসুর আব্দুস সালাম কার্বন হ্রাস প্রকল্পের সদস্য হয়েছি। আমি ১০০টি গাছ দেখিয়ে সদস্য হয়েছি ১০০শত টাকা দিয়ে, আমার ভাসুর ২০০টি গাছ দেখিয়ে সদস্য হয়েছে ২০০শত টাকা দিয়ে । এখন আমার কাছে মনে হচ্ছে এরা ডেসটিনির মতো প্রতারক , আমি চাই সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।
আরেকজন সদস্য মিজানপুর ইউনিয়নের বড়চর বেনীনগর গ্রামের মো: কুরবান আলী বলেন, গাছের জন্য নাকি টাকা দেবে এই জন্য সদস্য হয়েছি । আমার কাছে এখন মনে হচ্ছে এরা ভুয়া ও প্রতারক বিষয়টি যেন সরকার দেখেন। এরকম অনেকের সাথে কথা হয়।
কয়েকজন মাঠ কর্মীর সাথে কথা হলে তাদের মধ্যে- কার্বন হ্রাস প্রকল্পের দাদশী ইউনিয়নের মাঠকর্মী জামদুল আওয়াল বলেন, দাদশী ইউনিয়নে অনেক গাছ মালিককে সদস্য বানিয়ে ১০০ টাকা করে নিয়ে হাজার হাজার টাকা অফিসে তিতাস খানের কাছে জমা দিয়েছি অলিখিত ভাবে। আমাদের সার্ভেয়ার কালীন বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো কোন বেতন দেয় নাই। ২২/১২/২০১৪ইং তারিখ থেকে কাজ শুরু করেছি প্রায় ৮ মাস হয়ে গেল এখন পর্যন্ত গাছ মালিকদের টাকা দেওয়ার নামে খবর নাই। চিন্তায় আছি এরা যদি ডেসটিনির মত চলে যায় তাহলে আমার জামানতের ৬ হাজার টাকা মার যাবে এবং গাছ মালিকদের যদি টাকা ফেরত দিতে হয় তাহলে আমি কোথা থেকে সে টাকা ফেরত দিব।
আরেকজন মাঠকর্মী খন্দকার শহিদুজ্জামান বলেন ৬ হাজার টাকা জামানত দিয়ে চাকুরীতে যোগদান করেছি । অনেক মানুষের কাছ থেকে গাছের সদস্য বানিয়ে টাকা নিয়ে প্রকল্প অফিসে তিতাস খানের কাছে জমা দিয়েছি। এ প্রকল্প কি সত্যি নাকি ভুয়া তা বুঝতে পারছি না। সরকারের কাছে আমার আবেদন বিষয়টি যেন খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। কর্মী এস এম রিয়াজুল করিম সহ এলাকার মানুয়ের একটাই দাবী সরকার যেন বিষয়টি খতিয়ে দেখে সাধারন মানুষদের পাশে দাড়ায়।

Comments
Loading...