Connecting You with the Truth

রাণীশংকৈলে জমে উঠেছে ক্রিকেট জুয়ার আসর

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার, খেলার মাঠসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলও পিছিয়ে নেয় ক্রিকেট জুয়াতে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে যেন পুরো জেলা মেতে উঠেছে জুয়ায়। দিনকে দিন পুরাতনদের সাথে নতুন করে তরুণরাও মত্ত হচ্ছে এ খেলায়। ফতুর হচ্ছে অনেকেই।
জানা গেছে, জেলা শহরসহ উপজেলাগুলোর শত শত স্পটে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়ার বাজি চলছে। এ সব জুয়াড়িদের সাথে রিক্সা-ভ্যান চালক, হোটেল কর্মচারী এমনকি স্কুল-কলেজের ছাত্ররাও মেতে উঠেছে। সারা বছর অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ফুটবলে উয়েফা চ্যাম্পিয়নলীগ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, উয়েফা ইউরোপা লীগ, লা-লীগা, কোপা ডেলরে, এফএ কাপ, সিরি-এ, আফ্রিকান নেশনস কাপ, ফেঞ্চলীগ ওয়ান, বুন্দেস লিগা, ক্যাপিটাল ওয়ান কাপসহ বিভন্ন খেলায় গোল ব্যবধান-ড্র-ম্যাচে কয়টি গোল হবে, কে গোল দিবে, হ্যাট্রিক হবে কিনা, কত মিনিটের মধ্যে গোল হবে আর ক্রিকেটের টি-২০, টেস্ট, ওয়ানডে, আইপিএল, বিপিএল, বিগব্যাস, বিশ্বকাপ আসর এমনকি দেশ-বিদেশের ঘরোয়া লীগগুলোকে ঘিরে বাজিকরদের চলে রমরমা বাণিজ্য। চলতি বিশ্বকাপকে ঘিরে প্রতিটি এলাকায় প্রকাশ্যে জুয়া খেলার দৃশ্য চোখে পড়ছে। ক্রিকেটে দলগত হার-জিত নির্ধারণ বাজির পাশাপাশি চলে প্রতি ওভার বল বাই বল বাজি, কোন খেলোয়াড় কত রান করবে, প্রতি ওভারে কয়টি চার, ছক্কা বা কত রান হবে, কোন খেলোয়াড় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্ধারিত হবে, কোন দল কত রান করবে, ম্যাচের ক্যাচ ধরা, কোন খেলোয়াড় বেশি রান করবে, খেলায় কার সেঞ্চুির বা হাফ সেঞ্চুরি হবে আরো অনেক কিছুতে চলে লাখ লাখ টাকার বাজি। শক্তিশালী দলের সাথে দুর্বল দলের খেলা থাকলে সেক্ষেত্রে দেয়া হয় লোভনীয় অফার।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ক্রিকেট নিয়ে জুয়ার কথা শুনেছি তবে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা তথ্য নেই। তবে এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে।
জুয়াড়িরা সাধারণের দৃষ্টি এড়াতে ৫ হাজার টাকাকে ৫ টাকা ১ হাজার টাকাকে ১ টাকা বলে সংকেতের মাধ্যমে জুয়ার অংক নির্ধারণ করে থাকে। সরাসরি জুয়ার বাজি ধরার মতো মোবাইল ফোনেও জুয়ার বাজি ধরা হয় তবে এ ক্ষেত্রে একজন মাধ্যম থাকে।
একাধিক সূত্র জানায়, ক্রিকেট বাজি খেলায় উপজেলার নেকমরদ বাজারে অনেক তরুণ, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে বাজি খেলায় নিঃস্ব হতে দেখা গেছে। পরিবারের লোকজনের কাছে ধরা পড়ার ভয়ে তারা ২/৩টি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জুয়াড়ি জানায়, শুধু নগদ অর্থে নয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও বিশ্বস্থতার জায়গা থেকে বিভিন্ন জেলার বন্ধুদের সাথে বাজি ধরা হয়। যা নির্দিষ্ট সময়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করা হয়ে থাকে। পুরাতনদের সাথে নতুন করে তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে এ নেশায়। অনেক জুয়াড়ি সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হতে বসেছে, ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েছে অনেকে, কেউ কেউ সুদে টাকা নিয়ে চালাচ্ছে আসর। আর এসব কারণে বাড়ছে তাদের পরিবারে অশান্তি।
অভিভাবক মহল স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আকুতি জানিয়েছে জুয়াড়িদের আড্ডায় হানা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে।

Comments
Loading...