জাতীয়

শতভাগ পাসে অসুবিধা কী: শিক্ষামন্ত্রী

Published

on

স্টাফ রিপোর্টার:

শিক্ষার মান বেড়েছে বলেই পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার বাড়লেও শিক্ষার মান বাড়ছে না বলে যারা সমালোচনা করছেন, বুধবার এইচএসসি পরীক্ষার ফল নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তার জবাবেই এই দাবি করেন তিনি। নাহিদ বলেন, “শিক্ষার্থীরা তৈরি হয়ে শতভাগ পাসের কাছাকাছি যেতে পারলে আমাদের কোনো অসুবিধা নাই।“আমরা তো জোর করে কাউকে ফেল বা পাস করাতে পারি না।”

চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০ হাজার ৬০২ জন। কোনো শিক্ষার্থীই ফেল করতে পরীক্ষায় বসে না- এই মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষার মান বেড়েছে। আমরা গ্রামেও ভালো শিক্ষা নিয়ে গিয়েছি। গ্রামের প্রতিষ্ঠান থেকে এবার ভালো ফল হয়েছে।“বেশি পাস করায় অনেকে এনিয়ে প্রশ্ন করলেও বিষয়টিকে আমরা নেগেটিভটি নেই না। কারণ সন্তানকে ফেল করার জন্য কেউ ভর্তি করায় না।”ভালো শিক্ষক দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে পড়াশোনা করাতে পারলে আরো বেশি শিক্ষার্থী পাস করত বলেও মনে করেন নাহিদ। পাসের হার বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে নম্বর বাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ তুলে শিক্ষা পরিবারকে বিব্রত করার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। নাহিদ বলেন, সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হওয়ায় মুখস্ত ও নকল করে পাস করার কোনো সুযোগ নেই। উচ্চ মাধ্যমিকে এবছর ২৩টি বিষয়ে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়েছে। ইংরেজি ও গণিতে আগে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করায় সাড়ে আট হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে কঠিন বিষয়ে ১১ লাখের বেশি অতিরিক্ত ক্লাস করানো হয় বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। আমাদের বাড়তি চেষ্টার ফলে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমছে। ভবিষ্যতে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরো কমবে।”এবছর ২৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি, গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২৫টি। প্রতি বছরই শিক্ষার মান বাড়ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ বলেন, ফলে ছেলেমেয়েরাও বেশি বেশি পাস করছে। উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবেন বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। পাবলিক পরীক্ষার সূচি এবং ফলাফল ঘোষণা স্থিতিশীল হয়ে গেছে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ঝরেপড়া রোধ ও শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ এখনো রয়ে গেছে। এ থেকেও উত্তরণের চেষ্টা চলছে। এবছর ঢাকা বোর্ডে পাসের হার বাড়ার পেছনে প্রশ্ন ফাঁস কারণ কি না- এমন প্রশ্নে নহিদ বলেন, যেসব বিষয়ে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল ওইসব বিষয়ে নতুন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।“ফেইসবুকে প্রশ্ন ফাঁসের যে অভিযোগ ছিল ফলাফলে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।”আট সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হার সবচেয়ে বেশি ঢাকা বোর্ডে, ৮৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ বছর প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সরকারকে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ৯ এপ্রিল ঢাকা বোর্ডের এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা স্থগিতও করা হয়। স্থগিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৮ জুন। এছাড়া আরো কয়েকটি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। এবছর দেশসেরা মেধা তালিকায় নতুন কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওঠে আসার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “অচেনারা উঠে আসছে এটা উৎসাহের বিষয়, শিক্ষার বিকাশ হচ্ছে। সব জায়গায়ই শিক্ষার মান বাড়ছে।”শিক্ষা সচিব মোহাম্মদ সাদিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন ছাড়াও শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version