Connect with us

জাতীয়

শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী, তদবির ঠেকাতে এমপিওভুক্তির নীতিমালা প্রণয়নের তাগিদ

Published

on

 

 

 

 

 

স্টাফ রিপোর্টার:
স্কুল-কলেজ এমপিওভূক্তির ক্ষেত্রে তদবিরের ওপর নির্ভর না করে নতুন পদ্ধতি বের করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন। শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “যেখানে প্রয়োজন নাই সেখানে ১০টি স্কুল দেওয়া হচ্ছে। যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেখানে একটাও হচ্ছে না। তদবির করতে পারছে না দেখে হচ্ছে না। এ জায়গা থেকে বের হয়ে একটা সুষ্ঠু নীতিমালার ভিত্তিতে চাহিদা অনুযায়ী সেভাবে বাজেট করে আমরা শিক্ষা সহায়তা দিবো। এটা দেবার একটা পদ্ধতি বের করেন।” তিনি বলেন, “এমপিওভূক্তি আজকে ২টা করবো, কালকে ৪টা করবো, ওভাবে না করে একটা সুষ্ঠু নীতিমালার ভিত্তিতে কোন এলাকায় কত ছাত্র ছাত্রী, কতটা স্কুল আমাদের দরকার, কতজন শিক্ষক দরকার তা ঠিক করতে হবে।” নিরক্ষর মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ও সব ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশে একটা লোকও নিরক্ষর থাকতে পারবে না। প্রত্যেকের অন্তত স্বাক্ষর জ্ঞান থাকতে হবে, শিক্ষিত হতে হবে। সেভাবেই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। কোন ছেলে-মেয়ে পড়াশুনার বাইরে থাকতে পারবে না।” তিনি বলেন, “দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমাদের শিক্ষিত জাতি একান্ত প্রয়োজন। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষাই আমাদের দারিদ্র বিমোচনের একমাত্র হাতিয়ার।” শিক্ষিতদের সব পেশার কাজ করতে আগ্রহী করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শিক্ষিত হয়েও সবার মাঝে কৃষি কাজ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। নইলে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দিবে।” উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকায় ধান লাগানো ও ফসল কাটার লোক পাওয়া যায় না। পারিবারিক পেশাভিত্তিক শিক্ষার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। পারিবারিক পেশাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। নইলে অনেক কিছু আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে যাবে- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকায়ন করতে শিক্ষামন্ত্রণায়ল সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “মাদ্রাসার শিক্ষার কারিকুলাম ঠিক করে দিতে হবে। মাদ্রাসার শিক্ষার কারিকুলাম থাকার পাশাপাশি যেন আধুনিক শিক্ষাকে সামনে নিয়ে আসতে পারি। উভয় ধরণের শিক্ষা যেন তারা পায়। একটা বাদ দিয়ে আরেকটা করতে গেলে মাদ্রাসা থাকবে না। এটা খেয়াল রাখতে হবে।” পাবর্ত্য এলাকায় আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে যাতায়াতের অসুবিধা। সেখানকার ছেলেমেয়েদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে সাধারণ নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে সেখানে আবাসিক স্কুল তৈরি করা যেতে পারে। বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী চর এলাকার ছেলেমেয়েদের মাধ্যমিক পর্যায়ে লেখাপড়া নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে বলেন, “সেখানে শিশুরা প্রাথমিকের পর ঝরে পড়ে। এটা বন্ধ করতে হবে।” বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উদ্যোক্তার হুজুগে না মাতার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মেডিকেল কলেজ হচ্ছে, আরও মেডিকেল কলেজ তৈরি করতে হবে। কথায় বলে বাঙালি হজুগে মাতে। হজুগে মাতলে চলবে না। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাহিদার ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপণ করতে হবে।” ছেলেমেয়েদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি। বিজয় জাতির ইতিহাস সঠিক ভাবে ছেলে মেয়েদের জানতে হবে। তাহলে তাদের চরিত্র গঠনে, মনমানসিকতা গঠনে, দেশপ্রেমের তারা উদ্বুদ্ধ হবে। তাদের চেতনা জাগ্রত থাকবে। তাদের ভিতর আÍবিশ্বাস তৈরি হবে।” শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশ উন্নত হয়। আমাদের ভেতর সে চেতনা রয়েছে। যারা উড়ে এসে ক্ষমতায় বসে তাদের ভেতর এ চেতনা থাকে না।” আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “আমরা একটি দিনও নষ্ট করতে চাই না। প্রতিটি দিন মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই।” শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষা সচিব মোহাম্মদ সাদিকসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *