সমুদ্রের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে-প্রধানমন্ত্রী
‘ব্ল“ ইকোনমি বিষয়ক আন্তর্জাতিক কর্মশালা’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমুদ্র ও সমুদ্রসম্পদের অপার সম্ভাবনাকে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাজে লাগিয়ে দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যে দেশ সমুদ্রকে যতো বেশি ব্যবহার করতে পেরেছে, সে দেশ তার অর্থনীতিকে ততো এগিয়ে নিতে পেরেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দুদিনব্যাপী ‘ব্ল“ ইকোনমি বিষয়ক আন্তর্জাতিক কর্মশালা’ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশের বিপুল সমুদ্রসীমা থেকে সমুদ্রসম্পদ আহরণে দক্ষ জনবল তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রের জলরাশি এবং এর তলদেশে রয়েছে জানা-অজানা জৈব এবং খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার। তিনি বলেন, এসকল সম্পদের প্রাপ্যতা, উত্তোলন এবং ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের পর্যাপ্ত দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। সুতরাং দেশের বিপুল জলসীমা থেকে সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে আমাদের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ এবং বঙ্গোপসাগরের তলদেশে বিদ্যমান খনিজ সম্পদের উত্তোলনেও আমাদের প্রযুক্তির অভাব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা,জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলাসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সমুদ্র সম্পদের ভূমিকা অপরিসীম। তিনি আরো বলেন, ভূ-কেন্দ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রমের পাশাপাশি সমুদ্রভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকান্ড তথা ব্ল ইকোনমি উপকূলীয় রাষ্ট্র এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের সামনে খুলে দিতে পারে উন্নয়নের নতুন দিগন্ত। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের রয়েছে বঙ্গোপসাগরের অসীম সম্ভাবনাময় সমুদ্র সম্পদ। বাণিজ্য সম্প্রসারণ, জ্বালানি নিরাপত্তায় সমুদ্রের খনিজ সম্পদের ব্যবহার, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, সমুদ্রের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরকে আমরা উন্নয়নের নিয়ামক ভূমিকায় দেখতে পারি। দেশের আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যকে পুরোপুরি সমুদ্রনির্ভর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১৩০ ডলারের জিডিপি নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি জিডিপি’র আকারে আজ বিশ্বে ৪৪তম। প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূর দৃষ্টিসম্পন্ন উদ্যোগের কথা স্মরণ করে বলেন, বঙ্গোপসাগরের বহুমাত্রিক বিশাল সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড ম্যারিটাইম জোন্স অ্যাক্ট, ১৯৭৪’ আইন প্রণয়ন করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রী সায়েদুল হক, বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর জেনারেল আর্নি ম্যাথিসেন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী স্বাগত বক্তব্য রাখেন।