Connecting You with the Truth

সাংসদ এনামুল হকের বিরুদ্ধ দুদকের অনুসন্ধান আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

রাজশাহী প্রতিনিধি:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের বিষয়ে নিজের বক্তব্য জানাতে এনা প্রপার্টিজের কর্ণধার ও রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হককে বেশ কয়েকবার ডাকা হলেও তিনি হাজির না হওয়ায়, তাকে আর কোনো সময় দিতে রাজি নয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চলা দুদকের অনুসন্ধানের প্রতিবেদন আগামী সপ্তাহে কমিশনে দাখিল হবে। প্রতিবেদনটি দাখিল করবেন দুদকের উপপরিচালক যতন কুমার রায়। এরপর কমিশনের অনুমতি পেলে এনামুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হবে। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, দুদকের সংগ্রহ করা তথ্য এবং এনামুলের দেয়া সম্পদ বিবরণীর তথ্যের মধ্যে বিস্তর গরমিল পায় দুদক। এ জন্য তার বক্তব্য নিতে তাকে দুদকে তলব করে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তিনি হাজির হননি। এরপর বেশ কয়েকবার তাকে তলব করা হলেও তিনি দফায় দফায় সময় নিয়েছেন। দুদকের দেয়া সর্বশেষ নোটিশ অনুযায়ী গত সপ্তাহে তার দুদকে হাজির হওয়ার কথা ছিল। এবারও তিনি সময় প্রার্থনা করেন। বিষয়টি দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কমিশনকে জানালে কমিশন এনামুলকে আর সময় না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধান কর্মকর্তা যতন কুমার রায় বলেন, আগামী সপ্তাহে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র জানায়, দুদকের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এনামুল হক নিজ ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের সম্পদের যে হিসাব বিবরণী দুদকে দাখিল করেন, তার সঙ্গে মিল নেই দুদকের সংগৃহীত তথ্যের। দুদকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এমপি এনামুল গত পাঁচ বছরে এক হাজার ২০০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর বেশির ভাগ সম্পদের আয়ের উৎস দুদক খুজে পায়নি। দুদক জানায়, ২০০৮ সালে এনামুল হকের বেতন-ভাতা বাবদ আয় ছিল ২০ লাখ টাকা। এখন কৃষি, বাড়ি ও দোকানভাড়া, ব্যবসা ও পেশা থেকে তার বছরে আয় ৫০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে তার ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় ছিল সাত লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টাকা। এবারের হলফ নামায় নির্ভরশীলদের কোনো আয়ের উৎস নেই। পাঁচ বছর আগে তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল দুই কোটি ৮৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট কোটি ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকায়।
দুদকের প্রতিবেদনে এনা প্রপার্টিজের নিজস্ব ভবনসহ ১৭টি প্রকল্পের কথা উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়েছে, এনা প্রপার্টিজ আয়কর দেয়ার সময় যে অডিট প্রতিবেদন দাখিল করেছে, আর ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণকালীন সময় যে অডিট দাখিল করেছে, তার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এনামুল হক ৩১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা গোপন করেছেন। সালেহা ইমারত কোল্ড স্টোরেজে তিন কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকায় শেয়ার থাকলেও তা আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি।

Comments
Loading...