Connecting You with the Truth

 সাগরে পড়ার মুহূর্তেও অক্ষত ছিল বিমান!

image_112372_0আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভয়ঙ্কর কিছু একটা হতে চলেছে, আঁচ করেছিলেন কি যাত্রীরা? এয়ার এশিয়ার বিমান উধাও হয়ে যাওয়ার চার দিনের মাথায় আপাতত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই প্রশ্নটাই। রোববার ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া থেকে সিঙ্গাপুরের পথে মাঝ-আকাশেই হারিয়ে যায় এয়ার এশিয়ার বিমান কিউজেড-৮৫০১। মঙ্গলবারই প্রথম সমুদ্রে ভাসতে দেখা যায় ধ্বংসাবশেষ। বোর্নিওর কাছে জাভা সাগরের ওই অংশ থেকে এখনও পর্যন্ত সাতটি দেহ মিলেছে। উদ্ধারকারী দলের অনেক সদস্যই জানিয়েছেন, লাইফ জ্যাকেট গায়ে দেওয়া একটি মৃতদেহ পেয়েছেন তারা। অনেকেরই আবার পরনের জামাকাপড় রয়ে গিয়েছে অটুট।

আর এখানেই দানা বাঁধছে সন্দেহ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পানি ছোঁয়া বা ডুবে যাওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত এয়ারবাস ৩২০-২০০ ছিল অক্ষত। তাদের দাবি, মৃতদেহের পরিপাটি জামাকাপড় ইঙ্গিত করছে তেমনটাই। তা ছাড়া, এক জনেরও গায়ে লাইফ জ্যাকেট থাকার অর্থ, সেটি পরার সময় পেয়েছিলেন তিনি। আকাশেই যদি বিমান ভেঙে যেত বা বিস্ফোরণ হতো, লাইফ জ্যাকেট গায়ে দেওয়ার সময়টুকওু পেতেন না কেউ। নজরদারি বিমানের এক চালক আবার বুধবার জানান, হাতে হাত ধরে তিনটি লাশ ভাসতে দেখেছেন তিনি। দুর্ঘটনার অভিঘাতে যাত্রীরা যে সঙ্গে সঙ্গে মারা যাননি, এই ঘটনা তারই প্রমাণ বলে মনে করা হচ্ছে। মৃত্যু যদি এক নিমেষে এতগুলো প্রাণ কেড়ে না-ই নেয়, তা হলে চালক কোনো বিপদ-বার্তা পাঠালেন না কেন সেই প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি আজও।

পানি ছোঁয়ার আগে পর্যন্ত বিমান যদি অক্ষতই থাকে, তা হলে জোরালো হয় অন্য একটি সম্ভাবনাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এক বিমানচালকের মতে, কিউজেড-৮৫০১ আকাশেই যে বড়সড় দুর্যোগে পড়েনি লাইফ জ্যাকেট পড়া দেহই তার আভাস দিচ্ছে। বিপদের কারণ হিসেবে সে ক্ষেত্রে আরও জোরদার হয় আকাশে বিমানের যন্ত্রপাতির কাজ বন্ধ করে দেওয়া বা এরোডায়ানামিক স্টল-এর তত্ত্বই। মাঝ-আকাশে বিমানের ইঞ্জিন-সহ অন্যান্য কলকব্জা বিকল হয়ে যাওয়াতেই আস্ত বিমানটা পানিতে এসে পড়েছিল বলে অনুমান ওই চালকের। তার কথায়, “রাডারে ধরা পড়া শেষ ছবিতে দেখা গিয়েছিল, ওই উচ্চতায় বিমানের যে গতিতে যাওয়ার কথা, কিউজেড-৮৫০১-এর তা ছিল না। মনে হচ্ছে, বিমানের যন্ত্রপাতি সব ঠান্ডায় জমে গিয়েছিল। ভুল রিডিং দেখাচ্ছিল মিটার। এই পরিস্থিতিতে বিমান যাতে ঠিক মতো ওড়ে, চালক সেই চেষ্টাই করবেন। এয়ার এশিয়ার ওই বিমানটির চালকও হয়তো সেটাই করছিলেন। তাই যাত্রীরা লাইফ-জ্যাকেট গায়ে চাপানোর ফুরসত পেলেও বিপদ বার্তা আসেনি এয়ারবাস ৩২০-২০০-র ককপিট থেকে।”

বিমান হারিয়ে যাওয়ার আগে সেটির উচ্চতা ছিল ৩২ হাজার ফুট। তা বাড়িয়ে ৩৮ হাজার ফুটে নিয়ে যাওয়ার আর্জি জানিয়ে ইন্দোনেশিয়ার এটিসিতে শেষ বার যোগাযোগ করেছিলেন ইরিয়ান্তো। এর মিনিট পাঁচেকের মধ্যেও রাডার থেকে পুরোপুরি উবে যায় কিউজেড-৮৫০১। শেষ বার্তা পাঠাতেও কি অনেক দেরি করে ফেলেছিলেন চালক তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন সেই সম্ভাবনাও।

 

Comments
Loading...