সিরিয়ায় রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার আহ্বান বান কি মুয়ের
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অবসানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে একটি রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।
ইরাক ও সিরিয়ায় চরমপন্থি সুন্নি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) মোকাবেলার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় এ সমাধান কাজে আসবে বলে জানান তিনি। ইরাকের আল হায়াত পত্রিকা বুধবার এ খবর দিয়েছে।
লন্ডন ভিত্তিক সৌদি মালিকানাধীন দৈনিক প্যান-আবরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বান কি মুন ওই কথা বলেন।
আসাদের বাহিনী ও অস্ত্রধারী বিদ্রোহী দলগুলোর মধ্যে কয়েক বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে ওই অঞ্চলে ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি দল শেকড় গেঁড়ে বসতে পেরেছে বলে মনে করেন বান কি মুন।
সিরিয়া ও ইরাকের ইসলামিক স্টেস জঙ্গিদের রুখতে যে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে সেখানে আসাদের ভূমিক কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে বান কি মুন বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে এবং রাজনৈতিক আলাচনায় অংশ নিয়ে তিনি (আসাদ) এই উদ্যোগে ভূমিকা রাখতে পারেন।”
জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার অঙ্গ সংগঠন ইসলামিক স্টেট আরব বিশ্বের কেন্দ্রস্থলে তাদের শাসন কায়েম করতে চায়। গত কয়েক মাসে তারা ইরাক ও সিরিয়ার বেশ কয়েকটি এলাকা দখল করে নিয়েছে। যা ওই অঞ্চল ও পশ্চিমা বিশ্বকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।
জুলাইয়ে নতুন মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন আসাদ। ওই সময় তিনি বিদেশে অবস্থানরত বিরোধীদের বিশ্বাসঘাতক বলে বরখাস্ত করেন এবং সিরিয়াকে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের কবল থেকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন।
তবে বর্তমানে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরা যেভাবে প্রভাব বিস্তার করছে তাতে আসাদের মতো অনমনীয় মনোভাবের মানুষও দেশের ভেতরে অবস্থান করা বিরোধীদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
যদিও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু এখনো জানা যায়নি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইরাকের আইএস জঙ্গিদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়াতেও তারা একই ধরণের আক্রমণ করবে কিনা তা এখনো পরিষ্কার নয়।
কারণ, ইরাক সরকার তার দেশের জঙ্গিদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু আসাদ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি তার দেশের বিনা অনুমতিতে কোনো ধরনের হামলা চালানো হয় তবে সেটাকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন বলে বিবেচনা করা হবে।
গত তিন মাস ধরে আইএস এর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে আসাদ বাহিনী। তারপরও আইএস জঙ্গিরা এরই মধ্যে সিরিয়ার এক তৃতীয়াংশ বিশেষ করে উত্তর ও পূর্বের মরুভূমির বেশির ভাগটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।
সিরিয়ায় চার বছর আগে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো আসাদ বিরোধীদের এবং রাশিয়া ও ইরান আসাদ সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। আর পশ্চিমা শক্তি ও আরব উপসাগরের দেশগুলো শুরুতে নিরপেক্ষ থাকলেও পরে আসাদ বিরোধীদের সমর্থন দেয়।
ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বহুজাতিক জোটে রাশিয়াকে নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বান কি মুন বলেন, সেটা রাশিয়ার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।