সিরিয়ায় রুশ বিমান হামলায় চাপে আইএস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চারমাস ধরে সিরিয়ায় চালানো রাশিয়ার বিমান হামলায় দেশটির বিদ্রোহী বাহিনীগুলো কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অবসানে জাতিসংঘ শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টা নিলেও বিদ্রোহীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অবস্থান ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহীরাই রুশ হামলার শিকার হচ্ছে বেশি। তবে পূর্বাঞ্চলে ও মধ্যাঞ্চলের বিদ্রোহীরা এবং ইসলামিক স্টেটও (আইএস) প্রবল সামরিক চাপ মোকাবিলা করছে। এছাড়া দাম পড়ে যাওয়ায় তেল চোরাচালানে আর আগের মতো লাভবান হচ্ছে না আইএস। ফলে যোদ্ধাদের বেতন কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো প্রবল বিমান হামলা ও স্থল হামলার মুখোমুখি হচ্ছে বলে জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট আসাদের কাছে এই এলাকাটির গুরুত্বই সবচেয়ে বেশি।
সিরিয়ায় রুশ হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে গেল সপ্তাহে দেশটির সরকারি বাহিনী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি জয় পেয়েছে। তারা লাতাকিয়া প্রদেশের সালমা শহরটি দখল করে নিয়েছে। তবে সরকারি বাহিনীর এ সাফল্যে গৃহযুদ্ধে মোড় ঘুরে গেছে এখনও এমন ধারণা পাওয়া যায়নি, কারণ বিদ্রোহীরা পাল্টা হামলা চালিয়ে কিছু কিছু এলাকা পুনঃর্দখল করেছে। অবশ্য সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহীরা লড়াইয়ে দ্রুত লোকক্ষয় হওয়ার কথা জানিয়েছে। দামেস্কর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আছে এমন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তুরস্ক সীমান্তে গোলা ও বোমাবর্ষণ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। সিরীয় সামরিক বাহিনীর এক সূত্র জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের সমর্থন দেয় তুরস্ক। রুশ ও সিরীয় বিমান হামলার কারণে ওই দেশটি থেকে বিদ্রোহীদের কাছে রসদ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। রুশ বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে বিদ্রোহীদের অধিকৃত অধিকাংশ এলাকা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থায় যেতে বাধ্য হয়েছে। কারণ রুশরা অসংখ্য বিমান ব্যবহার করে ব্যাপক হামলা পরিচালনা করছে।- বলেন ফ্রি সিরিয়ান আর্মির (এফএসএ) কমান্ডার জামিল আল সালেহ।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের মতো ভারী অস্ত্র চাইছে বিদ্রোহীরা, সৌদি আরব এসব অস্ত্র সরবরাহ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিরীয় সামরিক বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, উন্নত গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে বিদ্রোহীদের অস্ত্র গুদাম ধ্বংস করে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এতে দুর্বল হয়ে পড়ছে বিদ্রোহীরা। আরো সমর্থনের জন্য তাদের আবেদনে পরিষ্কার তারা লড়াই করার সক্ষমতা অনেকটাই হারিয়েছে।- বলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সমর্থন সত্বেও সিরিয়ার পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ অবসানে জাতিসংঘের উদ্যোগকে বাস্তবতা থেকে দূরে বলেই বোধ হচ্ছে। কারণ লড়াইয়ের ময়দানে থাকা কোনো পক্ষই সম্ভবত শান্তির দিকে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত নয়। রয়টার্স।