সুরমার পানি বিপদসীমার ৬৩ সে.মি ওপরে
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ের লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল সকাল ১১টায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সুনামগঞ্জ নিবার্হী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টায় সুরমা নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মিটারে ৮.৮৮ মিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ আরও জানায়, জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সুরমা নদীতে ৮.২৫ মিটার পানি স্বাভাবিক। তবে এর উপরে হলেই বিপদসীমা অতিক্রম করে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী সাঈদ আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে গড় বৃষ্টিপাত ৬৮ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহ¯পতিবার ২৭৫ সেন্টিমিটার, শুক্রবার ৮৯ সেন্টিমিটার গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রকৌশলী সাঈদ আহমদ কেন্দ্রীয় বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে জানান, গতকাল থেকে আগামী বৃহ¯পতিবার পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাতের কারণে যে পরিমাণ পানি বাড়ছে তার চেয়ে বেশি পানি উজান থেকে আসছে। জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, নদীতে যে পরিমাণ পানি বৃদ্ধি পেয়েছে এটা হাওর এলাকার জন্য বন্যা হিসেবে ধরে নেওয়া যায়না। বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলার কোথাও বন্যার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিকেল ৩টায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় আহ্বান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এদিকে, সুনামগঞ্জ কৃষি অধিপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় জানায়, সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টির কারণে জেলার ৬টি উপজেলার নিুাঞ্চলের ৩ হাজার ২১৯ হেক্টর আমন ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ৪২৭ হেক্টর রোপা আমনের বীজ তলা ও ৫০ হেক্টর আউশ ধান রয়েছে। উপজেলা গুলো হচ্ছে, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৩০ হেক্টর, বিশ্বম্ভরপুরে ৫শ’ হেক্টর, তাহিরপুরে ৩শ’ হেক্টর, দোয়ারাবাজারে এক হাজার ২শ’ হেক্টর, ছাতকে ৩৬৭ হেক্টর, শাল্লায় ৪৫ হেক্টর রোপণকৃত রোপা আমন ধান রয়েছে। অপরদিকে, রোপা আমন বীজ তলা রয়েছে, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ২০ হেক্টর, দোয়ারাবাজারে ৩০ হেক্টর, ছাতকে ৩১৪ হেক্টর, শাল্লায় ৪০ হেক্টর জামালগঞ্জে ২০ হেক্টর, দিরাইয়ে ০৩ হেক্টর। শুধুমাত্র দোয়ারাবাজর উপজেলায় ৫০ হেক্টর আউশ ধান রয়েছে। সুনামগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পারিচালকের কার্যালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আরো নতুন নতুন এলাকায় রোপা আমন তলিয়ে গেছে সেগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।