জাতীয়
সুরমার পানি বিপদসীমার ৬৩ সে.মি ওপরে

Published
8 years agoon
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ের লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল সকাল ১১টায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সুনামগঞ্জ নিবার্হী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টায় সুরমা নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মিটারে ৮.৮৮ মিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ আরও জানায়, জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সুরমা নদীতে ৮.২৫ মিটার পানি স্বাভাবিক। তবে এর উপরে হলেই বিপদসীমা অতিক্রম করে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী সাঈদ আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে গড় বৃষ্টিপাত ৬৮ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহ¯পতিবার ২৭৫ সেন্টিমিটার, শুক্রবার ৮৯ সেন্টিমিটার গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রকৌশলী সাঈদ আহমদ কেন্দ্রীয় বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে জানান, গতকাল থেকে আগামী বৃহ¯পতিবার পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাতের কারণে যে পরিমাণ পানি বাড়ছে তার চেয়ে বেশি পানি উজান থেকে আসছে। জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, নদীতে যে পরিমাণ পানি বৃদ্ধি পেয়েছে এটা হাওর এলাকার জন্য বন্যা হিসেবে ধরে নেওয়া যায়না। বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলার কোথাও বন্যার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিকেল ৩টায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় আহ্বান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এদিকে, সুনামগঞ্জ কৃষি অধিপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় জানায়, সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টির কারণে জেলার ৬টি উপজেলার নিুাঞ্চলের ৩ হাজার ২১৯ হেক্টর আমন ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ৪২৭ হেক্টর রোপা আমনের বীজ তলা ও ৫০ হেক্টর আউশ ধান রয়েছে। উপজেলা গুলো হচ্ছে, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৩০ হেক্টর, বিশ্বম্ভরপুরে ৫শ’ হেক্টর, তাহিরপুরে ৩শ’ হেক্টর, দোয়ারাবাজারে এক হাজার ২শ’ হেক্টর, ছাতকে ৩৬৭ হেক্টর, শাল্লায় ৪৫ হেক্টর রোপণকৃত রোপা আমন ধান রয়েছে। অপরদিকে, রোপা আমন বীজ তলা রয়েছে, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ২০ হেক্টর, দোয়ারাবাজারে ৩০ হেক্টর, ছাতকে ৩১৪ হেক্টর, শাল্লায় ৪০ হেক্টর জামালগঞ্জে ২০ হেক্টর, দিরাইয়ে ০৩ হেক্টর। শুধুমাত্র দোয়ারাবাজর উপজেলায় ৫০ হেক্টর আউশ ধান রয়েছে। সুনামগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পারিচালকের কার্যালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আরো নতুন নতুন এলাকায় রোপা আমন তলিয়ে গেছে সেগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
You may like
জাতীয়
গাজীপুরে ধর্মীয় লেবাসধারীদের সন্ত্রাসী হামলা: মামলা নেয়নি আদালত-পুলিশ কেউই

Published
22 hours agoon
ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩
গাজীপুরে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে আদালত-পুলিশ দু’ পক্ষই। গত ২৮ ডিসেম্বর শ্রীপুরের বরমি বাজার এলাকায় হেযবুত তওহীদের কিছু সদস্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছিল। এসময় তাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায় স্থানীয় কিছু উগ্রবাদি সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পরদিন এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ উভয়পক্ষের মীমাংসার কথা বলে মামলা গ্রহণে বিলম্ব করে। পরবর্তীতে বিবাদীরা মীমাংসার তোয়াক্কা না করে উল্টো হুমকি-ধামকি দিলেও পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানা। আইনানুযায়ী আক্রান্তরা নিম্ন আদালতের শরণাপন্ন হলে সেখানেও মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো হয়। আসামিরা সমাজের চিহ্নিত মানুষ এবং তাদের পিছনে প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে তাই পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (শ্রীপুর) আদালত-১ এ মামলাটি গ্রহণের আবেদন জানানো হয়। শুনানির সময় আদালতের বিচারক শাকিল আহমেদ হেযবুত তওহীদকে ‘নিষিদ্ধ ঘোষণা’র কথা উল্লেখ করে মামলাটি খারিজ করে দিতে চায়। তবে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কড়া প্রতিবাদ জানানো হলে আদালত দলটি ‘নিষিদ্ধ নয়’ বলে স্বীকার করে। তবে হেযবুত তওহীদের সদস্যরা দাড়ি রাখে কিনা, গান হারাম মনে করে কিনা- এমন সব অবান্তর প্রশ্ন উত্থাপন করে আবেদনটি খারিজ করে দেয়।
এদিকে এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন আক্রান্ত বাদীপক্ষ। তারা বলছেন, এভাবে প্রথমে থানা ও পরে আদালত কর্তৃক মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর ঘটনায় দেশে আইনের শাসনের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। মামলা দায়ের করার সুযোগ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। মামলা যেরকমই হোক পুলিশের কর্তব্য হচ্ছে, তা আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অভিযোগের সত্যতানিশ্চিত না হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অব্যাহতি প্রদান করার সুযোগ তো রয়েছেই। তা না করে মামলা গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ আইনের শাসনের পরিপন্থী।
এদিকে আসামিরা সমাজের চিহ্নিত মানুষ এবং তাদের পিছনে প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে বলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বাদীপক্ষ জানায়, এজাহারভুক্ত এক ও দুই নম্বর আসামি যথাক্রমে আবদুস সাত্তার ও মোহাম্মদ আলী স্থানীয় জামিয়া আন ওয়ারিয়া মাদ্রাসার ‘বড় হুজুর’ বলে পরিচিত। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামিরা একই মাদ্রাসার ছাত্র। ওই মাদ্রাসা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দান-খয়রাতে চলে। এই প্রভাবশালী হুজুরদের বিব্রত না করতেই পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করেছে। এছাড়াও সেদিনের ঘটনা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটেছে, ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তাই একবার মামলা গ্রহণ করলে আসামিদের অব্যাহতি প্রদানের সুযোগ নেই।
এ ব্যাপারে গাজীপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি শাজাহান প্রধান বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর আমরা আশাবাদী ছিলাম কোর্ট অন্তত আমাদের মামলা গ্রহণ করবে। কিন্তু সেখান থেকেও আমাদের ফিরিয়ে দেওয়ায় আমরা সংক্ষুদ্ধ। একটা স্বাধীন দেশে আমাদের উপর হামলা হলো, আমাদের মা-বোনদের গায়ে হাত তুলল, তাদের লাঞ্ছিত করলো, মাদ্রাসার ভিতর ঢুকিয়ে ধর্ষণের হুমকি দিল কিন্তু আমরা এর বিচার পাচ্ছি না। বিচারতো দূরের কথা, বিচার চাওয়ার সুগোগটুকুও পাচ্ছি না। আসামিরা এলাকার চিহ্নিত অপরাধী, এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থানায় এসেছে। কিন্তু কোনটাই আমলে নেওয়া হয় নি। তারা এভাবে কেবল ধর্মের বেশ ধারণ করার দরুন পার পেয়ে যাচ্ছে। এটা না ইসলাম সমর্থন করে, না দেশের আইন সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে শ্রীপুর উপজেলার বরমি বাজার এলাকায় সংগঠনের প্রকাশনা সামগ্রী বিক্রির সময় হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সংগঠনটির অন্তত ১২ জন কর্মী আহত হন। স্থানীয়রা জানায়, জামিয়া আন ওয়ারিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে কিছু ছাত্র-শিক্ষক লোহার রড, লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। তারা হেযবুত তওহীদের সদস্যদের এলোপাতাড়িভাবে মারধর, হত্যার উদ্দেশে মাথায় আঘাত ও নারী সদস্যদের শ্লীলতাহানি করে। এছাড়াও কর্মীদের সাথে থাকা সংগঠনের বেশকিছু বই, দাবি মোবাইল, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা জোরপূর্বক ছিনতাই করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
Highlights
দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১২তম অবস্থানে

Published
3 days agoon
জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। আগের বছর ছিল ১৩তম। মানে এক ধাপ অবনমন হয়েছে। দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০২২ -এ এ তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
জার্মানির বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)-এর প্রতিবেদনে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় দুর্নীতি ধারণাসূচকে বাংলাদেশের স্কোর ও অবস্থানে এক ধাপ অবনমন হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০২২ সালের এ সূচক অনুযায়ী ১০০ এর স্কেলে বাংলাদেশে দুর্নীতির স্কোর ২৫, যা এর আগের বছর ২০১৪ ও ২০১৫ সালের অনুরূপ। যা গত বছরের তুলনায় ১ পয়েন্ট অবনমন। তালিকার নিম্নক্রম অনুযায়ী বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ১২তম অবস্থানে রয়েছে গিনি ও ইরান।

সারাদেশে ২০২২ সালে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৫৩২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের এই সমীক্ষার তথ্য বলছে, আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৪০ জন বা ৬৪ শতাংশই স্কুল পর্যায়ের।
এছাড়া কলেজ পর্যায়ে ১০৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। সমমান প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী রয়েছেন ৫৪ জন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮৬ জন শিক্ষার্থী এই এক বছর আত্মাহুতি দিয়েছেন বলে উঠে এসেছে আঁচলের সমীক্ষায়।
শুক্রবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ‘স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা: সমাধান কোন পথে?’ শীর্ষক এই সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
আঁচল ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ইউনিটের টিম লিডার ফারজানা আক্তার লাবনী জানান, দেশের দেড় শতাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে শিক্ষার্থীদের আত্মহননের তথ্য নেওয়া হয়েছে তাদের এই সমীক্ষায়।
আত্মহত্যায় শীর্ষে ঢাকা-
দেশের আট বিভাগে আত্মহত্যা করা স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে, যা মোট আত্মহত্যার প্রায় ২৩.৭৭ শতাংশ।
আত্মহত্যায় এগিয়ে নারী শিক্ষার্থীরা –
আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন বলছে, আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি।
আত্মহত্যা করা স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৩.৯০ শতাংশ, অর্থাৎ ২৮৫ জনই মেয়ে; বাকি ১৬১ জন, অর্থাৎ ৩৬.১ শতাংশ ছেলে।
বয়ঃসন্ধিকালে ঝুঁকি বেশি-
সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
২০২২ সালে যে শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করেছে, তাদের মধ্যে ৪০৫ জন বা ৭৬.১২ শতাংশই টিন এজার। তাদের মধ্যে ৬৫.৯৩ শতাংশ মেয়ে; ৩৪.০৭ শতাংশ ছেলে।
আবার আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের ৪৩ জন বা ৮.০৮ শতাংশের বয়স ছিল ৭ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে ৪৬.৫২ শতাংশ মেয়ে। আর ছেলেদের সংখ্যা তার চেয়েও বেশি, ৫৩.৪৮ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের সাথে শিক্ষার্থীদের মানিয়ে নিতে প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়, সে কারণে ওই বয়সে আত্মহত্যার হার বেশি।
আত্মহত্যার কারণ-
আঁচলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আত্মহত্যাকারী স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের তথ্যে জীবদ্দশায় তাদের নানা ধরের জটিলতার মুখোমুখি হওয়ার বিষয় এসেছে। সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী এ পথ বেছে নিয়েছে ‘মান-অভিমান’ থেকে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি।
তবে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে আরো বেশ কিছু বিষয় এসেছে প্রতিবেদনে।
আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় ৪ জন, শিক্ষকের হাতে ‘অপমানিত’ হয়ে ৬ জন, গেইম খেলতে বাধা দেয়ায় ৭ জন, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে ২৭ জন, মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় ১০ জন, মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় ৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে তথ্য এসেছে সমীক্ষায়।
আশা জাগাচ্ছে সরকারি পদক্ষেপ-
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি ঘটনার আশা জাগছে। এর মধ্যে একটি হল মানসিক স্বাস্থ্য আইন প্রণয়ন। এছাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য ‘মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক ফার্স্ট এইড (পার্ট-১)’ নামের একটি অনলাইন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতি-২০২২ এর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। প্রত্যেক জেলায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জন্য একজন করে মনোবিদ নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন। ২০২৩ সালে ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণির ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ বইটিতে মনের যত্ন নেওয়ার একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মকে মানসিকভাবে তৈরি হতে সহায়তা করতে পারে।
আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি তানসেন রোজ বলেন, শিশু কিশোরদের মন হয় ‘ভঙ্গুর প্রকৃতির’। এ বয়সে ছোট ছোট বিষয়গুলোও তাদের আন্দোলিত করে। বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক বিকাশের সাথে অনেকেই খাপ খাওয়াতে পারে না। ফলে প্রত্যাশার ক্ষেত্রে ছোটখাটো ঘাটতিও তাদের আত্মহত্যার মত বড় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।
“আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমাদের শিক্ষক এবং বাবা মায়েদের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে। শিশুকালে বাচ্চাদের উপর বাবা মায়ের প্রভাব যেমন বেশি থাকে, কৈশোরে সেই দায়িত্ব বর্তায় শিক্ষকদের উপর। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিক গঠনে তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যও বেশি।
তিনি বলেন, স্কুল ও কলেজ শিক্ষকরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো শুনে মেন্টরের ভূমিকা পালন করতে পারেন।
“আমাদের মনে রাখতে হবে, এই বয়সে একজন শিক্ষার্থীর সঠিক পরামর্শ পাওয়ার জায়গা অপ্রতুল।”
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট শাহরিনা ফেরদৌস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০২২ সালের এই জরিপে দেখা যাচ্ছে, ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোর কিশোরীদের মধ্যে আত্মহননের প্রবণতা অনেক বেশি।
“এ সময়ে কিশোর কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন এবং সচেতনতা তৈরির কোনো বিকল্প নেই। রোগী দেখার সময় আমি দেখেছি, কোভিড-১৯ এর একটি বড় প্রভাব পড়েছে আমাদের কিশোর বয়সীদের ওপর, যা কাটিয়ে উঠতে এখনো আরো সময়ের প্রয়োজন।
“সর্বোপরি বয়সন্ধিকালীন মনের যত্ন বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার সুযোগ ভীষণ প্রয়োজন। স্ক্রিন বা মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারিবারিক বন্ধন, পরিবারের সাথে ভালো সময় কাটানোর চর্চা বাড়াতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই আত্মবিশ্বাসী এবং সুস্থ মনন গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপগুলো অনস্বীকার্য।”
আঁচলের প্রস্তাব-
১. হতাশা, একাকিত্ব ও নেতিবাচক ভাবনা থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ বৃদ্ধি করা।
২. সন্তানদের মানসিক বিকাশ এবং তাদেরকে সহানুভূতির সাথে শুনতে ও বুঝতে অভিভাবকদের জন্য প্যারেন্টিং কার্যক্রম চালু করা।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষক-কর্মচারীদের আচরণ ও পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ণে কৌশলী ও সহানুভূতিশীল হতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৪. স্কুল, কলেজ পর্যায়ে আত্মহত্যা প্রতিরোধী পোস্টার প্রদর্শন করা।
৫. প্রতিটি আত্মহত্যার ঘটনায় পরিবারের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে ও দায় বৃদ্ধিতে তাদের আইনি বাধ্যবাধকতার অন্তর্ভুক্ত করা।
৬. স্কুল-কলেজের ছাত্রকল্যাণ ফান্ডের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করে তা সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সমস্যা সমাধান অনেকাংশে সম্ভব। এতে আর্থিক সংকটজনিত আত্মহত্যার হার কমে আসবে।
৭. প্রেম-প্রণয় ঘটিত সম্পর্কে বা অজ্ঞাতসারে ধারণ করা গোপন ছবি, ভিডিও ইত্যাদি প্রচার তথা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গ ও সাইবার ক্রাইমের বিষয়ে শাস্তি উল্লেখপূর্বক বিশেষ প্রচারণাভিযান পরিচালনা করা।
৮. স্কুল-কলেজ পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা সতর্কতা চিহ্ন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। এর মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য আত্মহত্যাকারীকে বাঁচানো যাবে।
৯. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেন্টাল হেলথ কর্নার খোলা। শিক্ষার্থীদেরকে বৃত্তির আওতায় এনে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ট্রেনিং দেওয়া।
১০. কার্যকর মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য ক্লিনিক্যাল সুবিধার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা।
১১. শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল ও ধৈর্য্যশীলতার পাঠ শেখানো ।
সংবাদ সম্মেলনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা ইসলাম, আঁচল ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সামিরা আক্তার সিয়াম উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদসূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
-
আন্তর্জাতিক7 years ago
গ্রিস প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা
-
আন্তর্জাতিক7 years ago
যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বিমানের সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু
-
স্বাস্থ্য7 years ago
গলা ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা
-
দেশজুড়ে8 years ago
আজ চন্দ্র গ্রহন সন্ধা ৬টা ১২ মিনিট থেকে রাত ৮ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত
-
বিবিধ8 years ago
আর অটো রিক্সা নয় এবার অবিশ্বাস্য কম দামের গাড়ি!
-
জাতীয়7 years ago
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
-
জাতীয়8 years ago
স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা
-
ফিচার8 years ago
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের ইতিহাস