জাতীয়
স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা

Published
8 years agoon
বাঙালির ইতিহাসে ১৯৭১ সাল ছিল সর্বাধিক বেদনাদায়ক এবং একইসঙ্গে সর্বাধিক সাফল্যজনক একটি অধ্যায়। বেদনার বিষয় এই কারণে যে, এ বছর পশ্চিম পাকিস্তানের লাগামহীন অত্যাচার-অবিচার ও জিঘাংসার শিকার হয়ে লাখো বাঙালিকে জীবন হারাতে হয়েছিল, সম্ভ্রম হারিয়েছিল অসংখ্য মা-বোন। বিধ্বস্ত হয়েছিল রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, বাড়ি-ঘর, স্কুল-কলেজসহ অসংখ্য স্থাপনা। কিন্তু তা সত্ত্বেও বছরটি বাঙালির জাতীয় পথচলায় স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে অমর হয়ে আছে আমাদের নয় মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধ ও তৎলব্ধ স্বাধীনতার কারণে। সেই একাত্তর আজও ষোল কোটি বাঙালির প্রাণের প্রেরণায় পরিণত হতে পারে। ঘুণে ধরা এই স্বার্থভিত্তিক সমাজে যখন অপরকে সুখী করতে কেউ স্বশরীরে একটি ফুলের আঁচড় নিতেও রাজী নয়, যখন সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো এ দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটির দিকে শকুণের ন্যায় লোলুপ দৃষ্টি ফেলে রেখেছে, জাতির ঐক্য ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে, সন্ত্রাসীরা স্বজাতির নিরীহ মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে ঝলসে দিচ্ছে, তখন একাত্তরের সেই নিঃস্বার্থ চেতনা বড়ই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। নিপীড়িত, অত্যাচারিত, জনমদুঃখী মানুষের মুক্তির জন্য রক্তে শিহরণ জাগানো সেই স্লোগান আজ আবারও প্রাসঙ্গিক-
‘মোরা একটি মুখের হাসির জন্য যুদ্ধ করি’।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি:
স্বাধীনতা যুদ্ধ হঠাৎ করে শুরু হয় নি, ৯ মাসের এই যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি হতে বহু বছর লেগেছে। শত শত অন্যায়-অবিচারের স্টিম রোলার চলেছে এ জাতির উপরে। পাকিস্তানিরা ক্ষমতালাভের পর থেকেই এ দেশের মানুষের উপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, অপশাসন চালিয়েছে তারই চূড়ান্ত নিষ্পত্তি রচিত হয়েছে এই যুদ্ধের মাধ্যমে। অন্যায়, অবিচার, যুলুমের বিরুদ্ধে বাঙালির সোচ্চার কণ্ঠের এটি একটি পর্যায়মাত্র। বস্তুত পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ কেবল ৯ মাস নয়, বহু বছর ধরে চলেছে। সে যুদ্ধ ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ, স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ।
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে আমাদেরকে আরও আগে থেকে শুরু করতে হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, দীর্ঘ প্রায় আড়াইশ বছর সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শক্তি আমাদেরকে শোষণ করেছে। এ দেশের সম্পদ পাচার করে নিজেদের দেশকে সমৃদ্ধ করেছে, আর আমাদেরকে উপহার দিয়েছে ক্ষুধা-দারিদ্র্য, দুর্ভিক্ষ। কোটি কোটি মানুষকে মরতে হয়েছে শুধু ক্ষুধার জ্বালায়। আমাদের মান-সম্মানকে বুটের তলায় পিষ্ট করেছে, আমাদের প্রতিবাদী কণ্ঠ রুদ্ধ করেছে। বাঙালির আশা-আকাক্সক্ষা বারবার পদদলিত হয়েছে। এরপর যখন ব্রিটিশরা চলে গেল, বলা হলো- তোমরা স্বাধীন। আর কেউ তোমাদের জীবন-সম্পদ দিয়ে খেলা করবে না, তোমাদের বাড়া ভাতে থাবা বসাবে না, না খাইয়ে মারবে না, অন্যায়, অবিচার করবে না, বৈষম্য করবে না। তোমরা একই ধর্মের মানুষ একই সাথে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। আমরা স্বভাবসুলভ সরল হৃদয়ে বিশ্বাস করলাম। ইসলামের সুমহান আদর্শ- সাম্য, ন্যায়বিচার, সম্পদের সুষম বণ্টন ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে অর্থাৎ এই অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইসলামী জীবনাদর্শ উপহার দেওয়ার কথা বলে ভারত থেকে স্বাধীন জাতিসত্ত্বা নিয়ে পাকিস্তান নামক একটি দেশ গঠন করা হলো। পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান উভয় ভূখণ্ডের মানুষই মুসলমান। তারা এক আল্লাহকে সেজদাহ করে, একই দিকে মুখ ফিরিয়ে নামাজ পড়ে। তারা এমন নবীর উম্মত যাঁর স্পষ্ট নির্দেশ- মুসলমান ভাই ভাই, মুসলমানের রক্ত ও মান-মর্যাদা একে অপরের জন্য হারাম (পবিত্র)। কাজেই ভাষা, সংস্কৃতি ও ভূ-খণ্ডের ফারাক ধর্মের মেলবন্ধনকে ছিন্ন করতে পারবে না এমনটাই ভাবা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে হলো ঠিক উল্টোটা। একই ধর্মের মানুষ হিসেবে ভাই ভাই হয়ে বসবাস করার যে আশা করা হয়েছিল তা উবে গেল অল্প দিনেই। প্রতারক, স্বার্থবাজ, পাকিস্তানের নেতারা অচীরেই ভুলে গেল আল্লাহ ও আল্লাহর বান্দাদের সঙ্গে প্রদত্ত ওয়াদার কথা। পাকিস্তানি শাসকরা মুখে মুখে ধর্মকে আলিঙ্গন করে রাখলেও, অল্প দিনেই কার্যত ধর্মের লেবাস ছেড়ে ঘোর অধর্মের ডাল-পালা বিস্তার করল। অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক- সকল দিক দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে পদে পদে বঞ্চিত করা শুরু হলো। ব্রিটিশ শোষকদের প্রেতাত্মা ভর করল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর উপর। ঔদ্ধত্য তাদেরকে এতটাই অন্ধ করে দিল যে, এ দেশের শত বছরের নির্যাতিত, নিপীড়িত সহজ-সরল মানুষের বুকে গুলি চালাতেও তারা দ্বিধা করল না। ভাষার জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য, সর্বপোরি ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য বারবার বাঙালির রক্ত ঝরতে লাগল। এরই ধারাবাহিকতায় রচিত হলো ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন এবং ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট। যখনই পশ্চিম পাকিস্তানিরা এ দেশের নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ছক এঁকেছে, এ দেশের কোটি কোটি মানুষ সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ফলে পাকিস্তানি শোষকরা ব্যর্থতার গ্লানিতে জ্বলে অস্ত্রের ভাষায় নিজেদের ক্ষোভের প্রশমন ঘটাতে চেয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে- বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দৃঢ়তার সাথে শোষকদের প্রতিটি বুলেটকে হজম করেছে, কিন্তু পিছপা হয় নি। ঐক্যের শক্তির বারবার পরাজিত করেছে অস্ত্রের শক্তিকে, এমনকি পরাজিত করেছে ১৯৭১ সালেও।
স্বাধীনতার চেতনা মানে কি ধর্মহীনতা?
একাত্তরে এই জাতির সংগ্রাম ছিল অন্যায়, অবিচার, অনাচার, যুলুম, নির্যাতন তথা অসত্যের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। কোটি কোটি নিরীহ ও শোষিত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর সংগ্রাম। সেই সাথে সেটা ছিল ধর্মের নামে চলা অধর্মের বিরুদ্ধে প্রকৃত ধর্ম প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। নিরীহ মানুষকে আল্লাহু আকবার বলে গুলি করলেই কি সেটা বৈধ হয়ে যায়? না, হয় না, বরং সে কাজ আরও গর্হিত হিসেবে প্রতিভাত হবার যোগ্য। একাত্তরে এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী এমন গর্হিত কাজই করেছে। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা ধর্মের দোহাই দিয়ে তাদের সকল অপকর্মকে জায়েজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু এ দেশের মানুষ ধর্মান্ধের মতো তাদের অন্যায় মেনে নেয় নি। কোনটা ধর্ম, কোনটা ধর্মব্যবসা- বাংলার লাখো কোটি জনতা তা ভালোভাবেই বুঝেছিল। তাই এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ ধর্মের নামে চলা অধর্মের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ধর্মব্যবসায়ীরা লাঞ্ছিত ও অপদস্ত হয়। অর্থাৎ একাত্তরের চেতনা ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াই। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হলো- আজ অনেকেই একাত্তরের চেতনা বলতে ধর্মহীনতাকে বোঝেন, যে ধর্মহীনতা এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার চিন্তা-চেতনা, ভাবধারার সম্পূর্ণ বিপরীত। ইসলামবিদ্বেষী, ধর্মবিদ্বেষী কিছু লেখক-সাহিত্যিকের গল্প-উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, নাটক, ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়ার প্রচারণা এবং ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থার প্রভাবে বর্তমানের তরুণ প্রজন্মের সামনে থেকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা কার্যত উধাও হয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে কৌশলে দেশপ্রেমিক তরুণদের মধ্যে ধর্মহীনতার বিষবাস্প ছড়িয়ে দেওয়ার অপপ্রয়াস চলছে।
আমরা সকলেই জানি- মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে মুক্তির লক্ষ্যে। কী থেকে মুক্তি? যে কোনো অন্যায়, অসত্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি, তা সামাজিক হোক, রাজনৈতিক হোক বা ধর্মীয় হোক। একটি সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী দুর্নীতি করলে তার দায়ভার যেমন ওই সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান নেবে না, ওই দুর্নীতিবাজ কর্মচারীকে নিতে হবে, তেমনই ধর্মের দোহাই দিয়ে যদি কেউ অপকর্ম করে তার দায়ভারও ধর্ম নেবে না, এর জন্য দায়ী করতে হবে ওই ধর্মব্যবসায়ীদেরকে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, যুগে যুগে ধর্মই মানুষকে অসত্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে সত্যের আলোয় আলোকিত করেছে। সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যদি নিজেদের ধর্মহীন দল হিসেবে প্রচার করতো তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো পরের কথা, শোচনীয়ভাবে পরাজিত হতে হতো এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। একইভাবে লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা ধর্মহীনতার চেতনা নিয়ে যুদ্ধ করেছে- এমন ধারণাও নিতান্তই অর্বাচীনসুলভ। কাজেই একাত্তরের চেতনার সাথে ধর্মহীনতাকে জুড়ে দেওয়ার অপপ্রয়াস থেকে সকলের বের হয়ে আসা উচিত।
লেখক: উপদেষ্টা, দৈনিক বজ্রশক্তি।
You may like
জাতীয়
‘দুর্গম পথের নির্ভীক যাত্রী শেখ হাসিনা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

Published
47 mins agoon
মার্চ ২৪, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মদিন উদযাপন এবং বিশিষ্ট চলচ্চিত্র কাহিনীকার, প্রযোজক ও পরিবেশক এবং কথা সাহিত্যিক শেখ শাহ আলম রচিত ‘দুর্গম পথের নির্ভীক যাত্রী শেখ হাসিনা’ বইটির মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে কেক কাটার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন করা হয়।
জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ শাহ আলম এর সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সম্মানিত সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, লেখক ও অর্থনীতিবিদ ডক্টর মহিউদ্দিন খান আলমগীর, এমপি। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দেশ ও জাতির সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ আহমেদ হালিম, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উপদেষ্টা সৈয়দ মাহমুদুল হক, কথা সাহিত্যিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক অনুপ কুমার বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডক্টর মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, ১৯২০ সালের আজকের এই দিনে টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনিই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশের। তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশের সর্বোচ্চ উন্নয়ন এর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সব সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভ্যান গার্ড হিসেবে থাকবে।
জোটের সভাপতি শেখ শাহ আলম বলেন, আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সুশিক্ষিত হতে হবে। সবাইকে দেশ গড়ার কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে, তাহলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অভিনেত্রী ও উপস্থাপিকা, ও বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের চলচ্চিত্র বিষয়ক সম্পাদক রওনক বিশাকা শ্যামলী।
Highlights
হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় কর্মী সম্মেলনে ৬ দফা দাবি উত্থাপন

Published
2 weeks agoon
মার্চ ১১, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক:
অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় কর্মী সম্মেলনে ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। হেযবুত তওহীদের এমাম সরকারের প্রতি ৬ দফা দাবি জানিয়ে বলেন, (১) হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত যে সমস্ত আক্রমণ হয়েছে, সে সমস্ত অভিযোগগুলোকে আমলে নিয়ে আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক। (২) বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলসহ ধর্মীয় অঙ্গনকে ব্যবহার করে যে সমস্ত উগ্রবাদী বক্তা পরিকল্পিতভাবে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে, মিথ্যাচার করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিচার করতে হবে। (৩) ফেসবুক, ইউটিউবসহ সকল সোশ্যাল মিডিয়াতে আসল অথবা ফেইক আইডি ব্যবহার করে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারমূলক কন্টেন্ট প্রচারকারী, হত্যার হুমকি প্রদানকারী, গুজব রটিয়ে, মিথ্যা ফতোয়া প্রদান করে ধর্মান্ধ মানুষকে উস্কানি প্রদানকারীদের পরিচয় ও অবস্থান চিহ্নিত করে আইসিটি আইনে বিচারের আওতায় আনতে হবে। (৪) হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ইতঃপূর্বে যে সমস্ত মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, সে সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। (৫) হেযবুত তওহীদ যেন নির্বিঘ্নে সারাদেশে সভা-সমাবেশ করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে সেজন্য স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অবিলম্বে প্রদান করতে হবে। (৬) সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-ধর্মব্যবসা-সাম্প্রদায়িকতা-মাদক, অপরাজনীতি ইত্যাদির বিরুদ্ধে আদর্শিক লড়াইয়ের জন্য ইসলামের প্রকৃত ও অকাট্য ব্যাখ্যা সংবলিত যে শক্তিশালী আদর্শের প্রস্তাব করা হয়েছে তা দেশ জাতির কল্যাণে বিবেচনা করার জন্য সরকার ও রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারক মহলের কাছে আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার (আজ ১১ মার্চ ২০২৩) রাজধানীর গুলিস্তানে কাজী বশির মিলনায়তন প্রাঙ্গণে এক বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ও উগ্রবাদ মোকাবেলায় করণীয়’ শীর্ষক এ কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব দাবি উত্থাপন করেন তিনি। অনুষ্ঠানে ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সমগ্র ময়দান অতিথিদের আগমনে মুখর হয়ে ওঠে।
হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের উপদেষ্টামণ্ডলীর প্রধান খাদিজা খাতুন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী, নারী ও শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সভাপতি মো. মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে পাবনায় উগ্রবাদীদের হামলায় নিহত শহীদ সুজনের ভাই মো. ইয়াকুব মণ্ডল শহীদ সুজনের স্মৃতিচারণ করলে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এরআগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন রব্বানী।
এদিন সকাল ৯টায় পবিত্র কোর’আন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এরপর একে একে শুভেচ্ছা বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের বিভাগীয় আমিরগণ উপস্থিত সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। তাদের বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের সুদীর্ঘ পথচলার বিপ্লবী ঘটনাপ্রবাহ, ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি কর্তৃক হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দা ও জবাব, অনলাইন-অফলাইনে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে হুমকির প্রতিবাদ এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের স্বর উঠে আসে।
মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের এমাম বলেন, “একাত্তরে লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়া প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশকে নিয়ে আজকে গভীর চক্রান্ত চলছে। পশ্চিমাদের অনুকরণে তৈরি হওয়া পুঁজিবাদী গণতান্ত্রিক, সেক্যুলার আদর্শনির্ভর রাজনৈতিক দলগুলোর হানাহানি, সংঘাত, অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেশকে শেষ করে দিচ্ছে। এদিকে পবিত্র ধর্ম ইসলামকে আশ্রয় করে তৈরি হওয়া বিভিন্ন দল-উপদল নিজেদের মধ্যে হানাহানি-রক্তারক্তিতে লিপ্ত। কয়েকদিন পরপর একেকটা ইস্যু সৃষ্টি করে দেওয়া হচ্ছে। সেইসব ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য হামলা, জ্বালাও পোড়াও ইত্যাদি ঘটনা নিত্য ঘটে চলেছে। এমনি একটি পরিস্থিতিতে সত্যের মশাল নিয়ে জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ।”
হেযবুত তওহীদের বক্তব্য স্পষ্ট, দ্ব্যার্থহীন, অসঙ্গতিমুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “হেযবুত তওহীদের বক্তব্যকে এক শ্রেণির উগ্রবাদী, সাম্প্রদায়িক ধর্মব্যবসায়ী জনগণের কাছে পরিকল্পিতভাবে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। ফলে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠাকামী এই আন্দোলনের নিরপরাধ, নির্দোষ, আইন মান্যকারী সদস্যরা আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, বাড়িঘর আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।”
হেযবুত তওহীদের মূল বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “হেযবুত তওহীদ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সমগ্র মানবজাতিকে প্রকৃত ইসলামের পথে আহ্বান করছে। সকল অন্যায়-অশান্তি, অবিচার, মারামারি, হানাহানি, অনৈক্য থেকে বের হয়ে ঐক্য, শান্তি ও ন্যায়ের পথে সকলকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। আজ যে মহাসঙ্কটের মুখে মানবজাতি পতিত তা থেকে বের হয়ে আসতে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজ শুধু আমাদের একার কাজ নয়। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষেরই আজ একই কাজ, একই দায়িত্ব। তাই সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনারা আসুন; আমাদের হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মানবতার কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করি। যদি আমাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ না হন তাহলে অন্তত অপপ্রচার, প্রপাগান্ডা করবেন না।”
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- ময়মনসিংহ বিভাগীয় সভাপতি এনামুল হক বাপ্পা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি নিজাম উদ্দিন, বরিশাল বিভাগীয় সভাপতি আল-আমিন সবুজ, খুলনা (অঞ্চল-১) সভাপতি মোতালিব খান, খুলনা (অঞ্চল-২) বিভাগীয় সভাপতি শামসুজ্জামান মিলন, সিলেট বিভাগীয় সভাপতি আলী হোসেন, ঢাকা মহানগর প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেসবাউল ইসলাম প্রমুখ।
মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, ঢাকা বিভাগীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক তাসলিমা ইসলাম, ঢাকা জেলা সভাপতি ইউনুস মিয়া, বৃহত্তর মিরপুরের সভাপতি আব্দুল হক বাবুল, বৃহত্তর যাত্রাবাড়ীর সভাপতি ওলিউল্লাহ, সাভার থানা সভাপতি সোহেল তালুকদার প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন হেযবুত তওহীদের তথ্য সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা ও শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক উপকমিটির সম্পাদক শাহনেওয়াজ খান রিপন।
Highlights
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় গুলিস্তানের ভয়াবহ বিস্ফোরণ

Published
2 weeks agoon
মার্চ ৭, ২০২৩
গুলিস্তানে সাত তলা ভবনে বিস্ফোরণে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জন হয়েছে। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন।নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের পাশে সাততলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান শুরু করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. শাহজালাল বলেন, বিকাল সাড়ে চারটার দিকে হঠাৎ বিকট একটি শব্দ হয়। এসে দেখি মানুষ পড়ে আছে, চিল্লাচিল্লি করছে। লোহার গেট, ভবনের দেওয়াল ভেঙে রাস্তায় পড়েছে। একটা বাস ওই ভবনের সামনে ছিল। বাসের যাত্রীদের অনেকেই আহত হয়েছেন। কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
স্থানীয় একটি দোকানের কর্মচারী সম্রাট ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘কস্তুরী হোটেল থেকে খাবার খেয়ে আমি মাত্র বের হয়েছি। তারপরই বিকট শব্দে ধোঁয়া শুরু হয়। ১০০ জনের ওপরে মানুষ আহত হয়েছে। মনে হয় ফিল্ম দেখতাছিলাম। মানুষ উইড়া উইড়া যাচ্ছে চারদিকে। ওপর থেকে যখন গ্লাসগুলো আসতেছে, তখন মনে হয় শুটিংয়ে যেভাবে মানুষের শরীরে ঢুকে যায়, ঠিক সে রকম পরিস্থিতি দেখছিলাম।’
ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, ভবনের নিচতলায় স্যানিটারির দোকান ছিল। নিচতলায় বিস্ফোরণ ঘটে ওপরের কয়েকটি তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে এখনো উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রায় অর্ধশত ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও ১৩ জন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
-
আন্তর্জাতিক8 years ago
গ্রিস প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা
-
আন্তর্জাতিক8 years ago
যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বিমানের সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু
-
স্বাস্থ্য7 years ago
গলা ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা
-
দেশজুড়ে8 years ago
আজ চন্দ্র গ্রহন সন্ধা ৬টা ১২ মিনিট থেকে রাত ৮ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত
-
বিবিধ9 years ago
আর অটো রিক্সা নয় এবার অবিশ্বাস্য কম দামের গাড়ি!
-
জাতীয়7 years ago
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
-
ফিচার8 years ago
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের ইতিহাস
-
Highlights2 years ago
নতুন প্রতারণায় গণধর্ষণ : কাউনিয়ায় দুই ভাইসহ ৪ ধর্ষক আটক