হবিগঞ্জে শুরু হয়েছে ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচার ও তাণ্ডব সৃষ্টির ষড়যন্ত্র
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে একটি চিহ্নিত ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী ওয়াজ করে, জুমার খোতবায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদেরকে উসকানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ হেযবুত তওহীদের হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. শাহজাহান একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে একটি চিহ্নিত ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তারা ওয়াজ করে, জুমার খোতবায় হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদেরকে উসকানি দিচ্ছে, এমন কি হ্যান্ডবিল ও পোস্টার ছাপিয়ে সেগুলো সর্বসাধারণের মধ্যে বিতরণও করছে। এটা সকলেই অবগত আছেন যে, আমাদের দেশে ধর্মের নামে উন্মাদনা ও হুজুগ সৃষ্টি করে কথিত তওহীদী জনতার আড়ালে দাঙ্গা ও সহিংসতামূলক ঘটনা ঘটাতে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী অত্যন্ত দক্ষ। তারা একটি ভিত্তিহীন গুজব সৃষ্টি করে দিয়ে থেকে বহু মানুষকে হত্যা, বাড়িঘরে হামলা, জ্বালাও পোড়াও করার মত ঘটনা প্রায়শই ঘটিয়ে থাকে। কেবল সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নয়, যে কোনো ভিন্ন মতের প্রতিই তারা সহনশীল নয়।”
তিনি তার বিবৃতিতে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর দ্বারা ইতোপূর্বে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার কিছু চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “গত জানুয়ারি মাসে হবিগঞ্জ সদর থানাধীন নারায়ণপুর গ্রামের হেযবুত তওহীদ সদস্য জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছিল এই ধর্মান্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীটি। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে যায় দরিদ্র মানুষটির সহায় সম্পত্তি। হেযবুত তওহীদের সদস্যদের মধ্যে যারা হবিগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা তাদেরকে অন্যায়ভাবে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে তাদের ভ‚-সম্পত্তি জবরদখল করে নেওয়াটাও ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর একটি অভিসন্ধি। গতবছর ১৪ মার্চ এই ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণিটিই নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে আমাদের কয়েকটি পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে হেযবুত তওহীদের দুই জন সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোকে গরু জবাই করা ছুরি দিয়ে জবাই করে, তাদের চোখ তুলে ফেলে, তাদের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়, বাড়িঘর লুটপাট, ভাঙচুর শেষে ভস্মীভ‚ত করে দেয়। সম্পূর্ণ আইনমান্যকারী মানবতার কল্যাণে আত্মনিবেদিত এই আন্দোলনের সদস্যদের বিরুদ্ধে কায়েমী স্বার্থবাদী ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর এই রকম হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। আমরা দেখতে পাচ্ছি, হবিগঞ্জে আবারও একই ধরনের বিপর্যয়কর ঘটনা ঘটানোর ষড়যন্ত্র চলছে।”
হেযবুত তওহীদের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি তার বিবৃতিতে বলেন, “দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যখন বার বার জঙ্গিবাদী ও সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে, ধর্মের নামে চলছে ব্যবসা, অপরাজনীতি তখন মো’মেন মুসলিম হিসাবে আমাদের ঈমানী কর্তব্য হয়ে যায় ধর্মের এইসব অপপ্রয়োগের বিরুদ্ধে, ধর্মের অপব্যাখ্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করা যেন আমাদের দেশকে ইরাক-সিরিয়া-আফগানিস্তানের পরিণতি ভোগ না করতে হয়, মানুষ যেন এই সব ঘটনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এই কাজটি করা আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব, দেশের নাগরিক হিসাবে সাংবিধানিক অধিকার ও কর্তব্য। হেযবুত তওহীদ নিঃস্বার্থভাবে বিগত ২২ বছর ধরে ইসলামের প্রকৃত রূপ মানুষের সামনে তুলে ধরার কাজটি করে যাচ্ছে।”
মো. শাহজাহান তার বিবৃতিতে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যমকর্মীসহ সর্বশ্রেণির জনসাধারণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।