হিন্দুদের শক্ত অবস্থান নিয়ে থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার:
অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠিত করার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে ‘শক্ত’ অবস্থান নিয়ে থাকতে বলেছেন। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রোববার হিন্দু ধর্মাম্বলীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আপনাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। এই মাটিতে আপনারা জন্মগ্রহণ করেছেন। এখানে আপনাদের অধিকার। “এখান থেকে কেন, কেউ আপনাদের সরাবে। আপনারা নিজের অধিকার নিয়ে, নিজেদের শক্ত অবস্থান নিয়ে বসবাস করবেন, সেটাই আমরা চাই।” গণভবনে রোববার সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “অসাম্প্রদায়িক চেতনাতে এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।” সব সম্প্রদায়ের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ওপরও জোর দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অবৈধভাবে কেউ ক্ষমতা দখল করতে চাইলে তার ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের ব্যবস্থা করেছি। যাতে গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকে। “গণতন্ত্র ছাড়া কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। গণতন্ত্র না থাকলে ধর্মনিরপেক্ষতা বা অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাস্তবায়ন হয় না। সকল ধর্মের মানুষের অধিকারও নিশ্চিত হবে না।” তিনি বলেন, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি যার যার ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিতও করা হয়েছে। অর্পিত সম্পত্তির ১৪(খ) ধারা বাতিল করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “সব থেকে জটিল ছিল অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে। সেই জটিলতা আমরা দূর করতে সক্ষম হয়েছি।”
উত্তরাধিকার আইন সংশোধনের কথাও বলেন তিনি। হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিল আরো শক্তিশালী করার তাগিদও দেন তিনি। ২০০১ সালে নির্বাচনের ওপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “জামাত-শিবির হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়ে, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত হানার চেষ্টা করে। “প্রতিহিংসার রাজনীতি কাকে বলে। বিএনপি-জামাত যখন ক্ষমতায় আসে, তখন প্রতিহিংসার রাজনীতি করে।” দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাতক্ষীরায় ১৭ জনকে হত্যা, অভয়নগরে হিন্দুপাড়ায় হামলা এবং রামুতে বৌদ্ধ বসতিতে হামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “তারা আঘাত করে তাদেরই, যারা স্বাধীনতার সপক্ষে। এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।” ‘দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন’ শ্রী কৃষ্ণের এই বক্তব্য আগস্ট মাসে আরো প্রযোজ্য মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “এই দুষ্টচক্রের আঘাতেই তো আমরা জাতির পিতাকে হারিয়েছি।” অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল দেবনাথ, জন্মাষ্টমী উদডাপন পরিষদের সভাপতি রমেশ চন্দ্র ঘোষ ও সাবেক সভাপতি দেবাশীষ পালিত এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিক।