১০ টাকার গ্রাহকদের জন্য ২০০ কোটি টাকার তহবিল
স্টাফ রিপোর্টার:
কৃষক, পোশাক শ্রমিকসহ ১০ টাকার ব্যাংক হিসাবধারীদের জন্য ২০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে ১০ টাকার হিসাবধারী শ্রমজীবী মানুষ স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে বেশি আয় হয় এমন কর্মকাণ্ডে তা লাগাতে পারবে। এ ঋণ হবে সম্পূর্ণ জামানতবিহীন। এক্ষেত্রে পেশাগত দক্ষতা ও কায়িক শ্রমের মানসিকতাই হচ্ছে মূল জামানত। বৃহস্পতিবার ১০টি ব্যাংকের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলো তহবিল থেকে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে তার সঙ্গে আরো কিছু যোগ করে বিতরণ করবে। তবে সব মিলিয়ে এ ঋণের সুদের হার যাতে ১০ শতাংশের বেশি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, “একটি দেশের সার্বিক ও টেকসই উন্নয়ন শুধু বড় উদ্যোক্তা ও কর্পোরেট ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সম্ভব নয়। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই এই বিপুল সংখ্যক কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে অর্থনীতির মূল ধারায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে ২০০ কোটি টাকার এ আবর্তনশীল পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে।” ৩২টি ব্যাংক এ তহবিল থেকে মোট ১৩৯ কোটি টাকা ব্যবহারের আগ্রহ দেখালেও বৃহস্পতিবার প্রথম পর্যায়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটিসহ ১০টি ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হল। ব্যাংকগুলো হলো- সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও এনআরবি ব্যাংক। চুক্তি অনুসারে এই ১০ ব্যাংক ১১০ কোটি টাকা ব্যবহার করবে। আর্থিক সেবাবঞ্চিত তৃণমূল জনগোষ্ঠীকে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে দেশের কৃষক, গার্মেন্টস শ্রমিকসহ স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষের জন্য মাত্র ১০ টাকা স্থিতি রেখে ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দেয়া হয়। বর্তমানে এই গ্রাহক সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি জানিয়ে আতিউর বলেন, এই হিসাবগুলো সচল রাখার মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে অধিকতর গতিশীল করার উদ্দেশ্যেই এই তহবিল গঠন করা হয়েছে। এখন থেকে ১০ টাকার হিসাবধারী শ্রমজীবী মানুষ সরাসরি ব্যাংকের কাছ থেকে অথবা এনজিওগুলোর মাধ্যমে এই তহবিল থেকে স্বল্প সুদে ঋণ নিতে পারবে। গভর্নর বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথাগত দায়িত্বের পাশাপাশি একটি জনমুখী কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে নতুন পরিচয়ে আবির্ভূত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই তহবিল গঠন করা হয়েছে। ১০ টাকার হিসাবধারী দরিদ্র জনসাধারণ সরাসরি ব্যাংকের ঋণ সুবিধা নিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।