ই-ক্যাবে ইভ্যালি-ধামাকাসহ ৪ প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত
ইভ্যালি, ধামাকাসহ চার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করেছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। এ বিষয়ে আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ইক্যাব। একই সঙ্গে ভোক্তা ও বিক্রেতার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংগঠনটির পরিচালক আসিফ আহনাফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ইভ্যালি ডটকম লিমিটেড, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপ ও গ্লিটার্স আরএসটি ওয়ার্ল্ডের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।
ই-ক্যাবের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ই-ক্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কয়েকটির নামে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ই-ক্যাব অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। ভোক্তা ও বিক্রেতাদের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ প্রতিষ্ঠানকে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছে। এর মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে জবাব না দেওয়া, অথবা সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ার কারণে চারটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলো হলো—অর্থ আত্মসাৎ, ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তি না করা, ই-ক্যাবের কারণ দর্শানো ও সতর্কীকরণ পত্রের জবাব না দেওয়া, ই-ক্যাবের পাঠানো অভিযোগের সমাধান না করা, ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২১’ প্রতিপালন না করা এবং এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করা।
এতে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নয়টি প্রতিষ্ঠানের কেউ কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কেউ কেউ অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১ মেনে চলার প্রতিশ্রুতিসহ সময় চেয়েছে। তাই, নয়টি প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষণে রেখে অধিকতর তদন্ত চলছে। সন্তোষজনক সমাধান না হলে তাদের বিষয়ে অনুরূপ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
এ ছাড়া ই-ক্যাব জানিয়েছে, ক্রেতা-ভোক্তারা কোনো প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রতারিত হয়ে থাকলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন।
সংগঠনটি জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনসহ বিভিন্ন সরকারি তদন্ত সংস্থাকে ই-ক্যাব অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করে আসছে।
সদস্যপদ স্থগিতের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ হাজার ডলার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে পারবে না, যা ইক্যাবের সদস্যরা পারে। এ ছাড়া জোটবদ্ধ অন্য সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত হবে তারা।
ইক্যাবের সহসভাপতি মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন বলেন, সদস্যপদ স্থগিতের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা পরিচালনাসংক্রান্ত কোনো সমস্যায় পড়বে না। তবে গ্রাহকেরা একটা বার্তা পাবে যে তারা নিয়মগুলো মানছে না। অন্য ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি দায়িত্বশীলতা থেকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইক্যাব।
গত ১৮ জুলাই ইক্যাবের নোটিশ পাওয়ার পর তিন মাস সময় চেয়েছিল ইভ্যালি। সাহাবউদ্দিন বলেন, ‘ইভ্যালি দীর্ঘদিন ধরে বারবার সময় নেওয়ার পরও ক্রেতাদের সমস্যার সমাধান হয়নি। ইক্যাবের ওপর নির্দেশ ছিল ১৫ দিন পরপর তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার। ইভ্যালি আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়নি।’
এ ছাড়া ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ প্রকাশিত হওয়ার পর ১০ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি করেনি, এমনকি ইক্যাবের অন্য সদস্যদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে সন্তোষজনক পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে ইভ্যালির বিরুদ্ধে।