Connect with us

Highlights

এক সপ্তাহেও সরকার গঠন করতে পারেনি তালেবান

Avatar photo

Published

on

নিউজ ডেস্ক:
প্রায় পুরো আফগানিস্তান দখলের এক সপ্তাহ পেরুলেও এখনও সরকার গঠন করতে পারেনি তালেবান। ফলে এক সপ্তাহ ধরে সরকারবিহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছে দেশটির প্রায় পৌনে ৪ কোটি মানুষ। জানা যাচ্ছে, আফগানিস্তানের কর্তার আসন নেওয়া তালেবান অন্য সবাইকে নিয়েই সরকার গঠন করতে চাইছে। সেই লক্ষ্যে প্রভাবশালী বিভিন্ন আফগান নেতাদের সঙ্গে তালেবান নেতাদের বৈঠকও চলছে। এছাড়াও দুই দশক আগের চেয়ে অনেকটাই বদলে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে গোষ্ঠীটি।

তবে নানা গোত্র আর উপদলে বিভক্ত আফগানিস্তানে তা করতে গিয়েও বেগ পেতে হচ্ছে গোঁড়া এই গোষ্ঠীর নেতাদের। তালেবানবিরোধী নেতা হিসেবে পরিচিত আহমদ মাসুদ তো হুমকিই দিয়েছেন, ক্ষমতার ভাগাভাগি ঠিকমতো না হলে আবার গৃহযুদ্ধ শুরু হবে। তিন দশক আগে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর গৃহযুদ্ধের মুখে পড়েছিল আফগানিস্তান। তার মধ্যেই মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে ক্ষমতা দখল করে নিয়েছিল তালেবান।

এরপর পাঁচ বছর তালেবান শাসনে ছিল আফগানিস্তানে। ২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলার পর ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ায় আফগানিস্তানে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর অভিযান, তাতে ক্ষমতা হারায় তালেবান। গত দুই দশক কোনঠাসা হয়ে থাকা তালেবান আমেরিকান সৈন্যদের ফিরে যাওয়ার প্রাক্কালে এক মাসের মধ্যে একের পর এক শহর দখল করতে থাকে।

১৫ অগাস্ট তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে ঢুকে পড়লে পালিয়ে যান আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। ফলে বিনাযুদ্ধেই রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। তবে কাবুল বিমানবন্দর এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দখল সম্পূর্ণ হওয়ার পর নির্বাসিত তালেবান নেতারা কাতার থেকে আফগানিস্তানে আসতে শুরু করে, যার মধ্যে রয়েছেন দলের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার।

কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবানের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন যে তারা সবাইকে নিয়েই সরকার গঠন করতে চান। তবে বিভক্ত আফগানিস্তানে সেই কাজটি বেশ কঠিন বলেই স্পষ্ট; আর সেই কঠিন কাজটিই করা শুরু করেছেন বারদার, যার স্বাক্ষরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল।

আফগানিস্তানের সংবাদ মাধ্যম টলোনিউজ জানিয়েছে, শনিবার তালেবানের রাজনৈতিক শাখার নেতারা বেশ কয়েকজন রাজনীতিকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, জাতীয় পুনর্গঠন কমিশনের প্রধান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ। তালেবানের পক্ষে বৈঠকে ছিলেন শাহাবুদ্দিন দেলাওয়ার, আবদুস সালাম হানাফি, মোল্লা খায়েরুল্লাহ খয়েরখা, আবদুর রহমান ফিদা।

তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ রোববার টলোনিউজকে বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক শাখার নেতারা কাবুলে অন্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কারণ তাদের মতামতদ জানাটা গুরুত্বপূর্ণ।” আলোচনা আরও চলবে জানিয়েই তিনি বলেন, “শিগগিরই সরকার গঠনের ঘোষণা দেওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি।”

আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ তার ফেইসবুকে এক পোস্টে বলেছেন, আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এবং সবাইকে নিয়ে একটি সরকার গঠনের বিষয়ে।

তবে আফগানিস্তানের কিছু নেতা এই ধরনের বৈঠকের সাফল্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। নাহজাত-ই-হামবাস্তাগি আফগানিস্তান পার্টির নেতা সৈয়দ ইশহাক গিলানি টলোনিউজকে বলেছেন, “আমি এই খেলাটা পছন্দ করছি না। কারণ এটা মনে হচ্ছে একজনের খেলা। সবাই নিজেদের আখের গোছাতে চাইছে, জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা কেউই দেখাচ্ছে না।”

বলখ প্রদেশে সাবেক গভর্নর আতা মোহাম্মদ নূর হুঁশিয়ার করেছেন, সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন না হলে সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি, এখনও বহু দূর যেতে হবে। আমরা তাদের (তালেবান) পরীক্ষা নিচ্ছি, আমরা আবার জেগে উঠতে পারি। হয় সঙ্কটের সমাধান করতে হবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের মধ্য নিয়ে, নইলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

প্রায় গোটা দেশ দখল করলেও পাঞ্জশির উপত্যকা এখনও তালেবানের নিয়ন্ত্রণেরি বাইরে রয়েছে। ওই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছেন এক সময়ের মুজাহিদিন নেতা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমদ মাসুদ। ২০০১ সালে আল কায়দার হাতে নিহত হয়েছিলেন শাহ মাসুদ।

পাঞ্জশির দখল করতে শয়ে শয়ে তালেবান যোদ্ধা অভিযান শুরু করেছে বলে গণমাধ্যম জানিয়েছে। কাবুলের উত্তরের এই অঞ্চলটিতেই তালেবান বড় প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।

তালেবানের এক ‍টুইটে বলা হয়েছে- “যেহেতু পাঞ্জশির রাজ্যের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ শান্তিপূর্ণ পথে কর্তৃত্ব হস্তান্তরে রাজি হয়নি, তাই ইসলামিক আমিরাতের মুজাহিদরা সেদিকে রওনা হয়েছে।”

আফগান সামরিক বাহিনীকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নানা সমরাস্ত্র এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে; এই অভিযানে তা ব্যবহার করা হচ্ছে। এর জবাবে আহমদ মাসুদ তালেবানকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, “এভাবে চললে তালেবান টিকবে না। আফগানিস্তানকে রক্ষায় আমরা প্রস্তুত, তার জন্য রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতে পারি।”

মাসুদ ন্যাশনাল রেজিস্টেন্স ফোর্স অব আফগানিস্তানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার আশ্রয়েই এখন রয়েছেন তালেবানের ভয়ে পালিয়ে যাওয়া আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। তার সশস্ত্র বাহিনীকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি।

মাসুদ বলেন,“আমরা সোভিয়েত সেনাদের বিরুদ্ধে লড়েছি, তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সক্ষমতাও আমাদের আছে।” মাসুদের মতো তালেবানবিরোধী আরও দলও রয়েছে আফগানিস্তানে। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বাগলানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি জেলার নিয়ন্ত্রণও তালেবান হারিয়েছে বলে কদিন আগেই খবর আসে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এখনও তালেবানি শাসনের স্বীকৃতি কারা কারা দেবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তালেবান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি চায় কি না, এখন তাদেরকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়নি বলে ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে রয়টার্স।

তবে কিছুটা নরম সুর দেখিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি কাবুল সফরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে টলো নিউজ।

কোরেশি ইতোমধ্যে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাতেও আফগানিস্তানে সবার অংশগ্রহণে একটি সরকার গঠনের বিষয়ে জোর দেওয়া হয় বলে খবর প্রকাশ হয়েছে।

তালেবান কাবুল দখলের আগেই চীনে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল। তালেবান কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর চীন সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে দৃঢ় ‘বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক’ সম্পর্কের জন্য চীন প্রস্তুত।

বিশ্বের অনেক দেশ তাদের দূতাবাস বন্ধ করে কূটনীতিক এবং নাগরিকদের আফগানিস্তানে থেকে সরিয়ে নিতে থাকলেও চীন কাবুলে তাদের দূতাবাস খোলাই রেখেছে। তবে গত দুই দশকে আফগানিস্তানে বিপুল বিনিয়োগ করা ভারতের জন্য তালেবান শাসন অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

ওরা সওমকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করেছে : হেযবুত তওহীদের এমাম

Avatar photo

Published

on

রাজধানীতে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে বিশাল আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ ২০২৪) সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-আইডিইবি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হেযবুত তওহীদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মো. তসলিম উদ্দীন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম সওমের নিয়ম, উদ্দেশ্য, শিক্ষা এবং দেশ ও সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বিদ্যমান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি, মুসলমানদের দুর্দশা এবং এ থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সওম মানে আত্মসংযম, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা, বিরত থাকা। রোযা তথা সওমের উদ্দেশ্য এই যে, মো’মেন ব্যক্তি সারাদিন পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন, নিজের আত্মাকে শক্তিশালী করবেন। তিনি অপচয় করবেন না, পশুর ন্যায় উদরপূর্তি করবেন না। তিনি হবেন নিয়ন্ত্রিত, আত্মত্যাগী। বঞ্চিত, ক্ষুধার্ত, দরিদ্র মানুষের দুঃখ অনুভব করে তিনি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেবেন। আল্লাহর হুকুম মানার ক্ষেত্রে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন অর্থাৎ তিনি হবেন তাকওয়াবান। তার এই চরিত্রের প্রতিফলন ঘটবে সামাজিক ও জাতীয় জীবনে। গড়ে উঠবে এমন এক সমাজ যেখানে সবাই একে অপরের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে উৎসাহী হবে, বিরাজ করবে পরস্পর সহমর্মিতা, সহানুভূতি, ভ্রাতৃত্ব। প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি।

তিনি আরও বলেন, আজকের বাস্তবতা এই যে, বর্তমানে এই মৌলিক শিক্ষা হারিয়ে সওম বা রোযা যেন হয়ে গেছে কেবল না খেয়ে থাকা। দেখা যায়, রমজান আসলেই মুসলিমদের মধ্যে হুলুস্থুল পড়ে যায়। নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে ওঠে আকাশছোঁয়া। সংযমের মাস এলেই মুসলিমদের সংযমের সব বাঁধ যেন ভেঙে যায়। আজ রোযাকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানুষ বাজারে গিয়ে নিত্য পণ্যের দাম শুনে অসহায় হয়ে পড়ে। সবাই যেন অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি। ধর্মব্যবসাও জমজমাট হয়ে ওঠে এই মাসে। এ জাতীয় অপরাধ ঢাকা দেয়ার জন্য আত্মপ্রচারের আশায় কিছু দান-খয়রাত করতে দেখা যায় মাত্র। কিন্তু রোযা তথা সওমে সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়ের বোধ অর্থাৎ তাকওয়া সৃষ্টি হয়না, প্রকৃত সিয়ামের সাধনা হয় না মন্তব্য করেন তিনি।

উপস্থিত অতিথি ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, রোজার নির্দেশনাটা মূলত মো’মেনদের জন্য। তার মানে মো’মেনরা রোজা পালন করবে। প্রশ্ন হচ্ছে- এই মো’মেন কারা? তারাই মো’মেন যারা আল্লাহ ও রাসুলের উপর ঈমান আনে, কোনো সন্দেহ পোষণ করে না এবং সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করে। এই মো’মেনের জন্যই হলে রোজা, নামাজ, হজ্ব সবকিছু। আমরা হেযবুত তওহীদ আমাদের জীবন ও সম্পদ আল্লার রাস্তায় কোরবান করে দিয়ে প্রকৃত মোমেন হবার চেষ্টা করছি বলেন তিনি।

এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তোলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তোলওয়াত করেন কারি মো. আসাদ। এরপর দলীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিন তার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের প্রধান উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন, ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, হেযবুত তওহীদের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা প্রমুখ।

এক পর্যায়ে হামদ নাত ও গজল পরিবেশন করেন মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর নিয়মিত শিল্পী শাহীন আলম, রাফে আহমেদ, তাহমিনা আক্তার চাঁদ, তাহী ও ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ। তাদের পরিবেশনায় মুগ্ধ হয় দর্শকরা।

দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তার আগমনে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল।

নামাজ শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। বক্তব্য শেষে তিনি মানবজাতির শান্তি কামনা করে দোয়া করেন। মোনাজাত শেষে মাগরিবের আযান দিলে সবার মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়। অতিথিরা সবাই মিলে একাকার হয়ে ইফতার করেন।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, হেযবুত তওহীদের সাহিত্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, মিরপুর শাখার সভাপতি আব্দুল হক বাবুল, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আহমেদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান, ঢাকা জেলার সভাপতি ইউনুস মিয়া, উত্তরা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিনসহ ঢাকার বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

Continue Reading

Highlights

দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জাতীয় ঐক্যের ডাক হেযবুত তওহীদের

Avatar photo

Published

on

হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ ২০২৪) বিকালে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন তেলিপাড়াস্থ সাগর সৈকত কনভেনশন হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, রাজতন্ত্রের কবর হয়ে গেছে বহু আগে। ফ্যাসিবাদ মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বহু ফ্যাসিস্ট আত্মহত্যা করেছে। সমাজতন্ত্রও ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্রও লাইফ সাপোর্টে আছে- মন্তব্য করেন তিনি।

হেযবুত তওহীদের এই নেতা বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য আমরা দেখেছি। প্রতি ৫ বছর পর পর মহা সংকটে পরতে হচ্ছে জাতিকে। একদল ক্ষমতায় গেলে পরের দিন থেকেই শুরু হয় তাকে টেনে নামানোর চেষ্টা। সমানে চলে জ্বালাও পোড়াও। বাসে আগুন দিয়ে নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। সাপের মত পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করা হচ্ছে। ক্ষমতায় যাবার লড়াইয়ে হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটের নামে নৃশংসতা মানুষ দেখেছে। এই সিস্টেম আর মানুষ দেখতে চায় না। মানুষের তৈরি সব সিস্টেমই তো আমরা অ্যাপ্লাই করলাম। সবগুলো ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের তৈরি তন্ত্রমন্ত্র বাদ দিয়ে আল্লার দেওয়া সিস্টেমে প্রত্যাবর্তন করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পশ্চিমারা আমাদের ব্যাপারে মাতব্বরি করে আসছে বরাবরই। তারা একে একে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন তাদের শকুনি দৃষ্টি পড়েছে আমার প্রিয় জন্মভূমির উপর। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের কূট চাল চালছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, শকুন যত ভয়ঙ্করই হোক না কেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে কোনো সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। হেযবুত তওহীদ থাকতে তাদের এই দুরাশা কোনো দিন পূর্ণ হবে না। প্রয়োজনে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য জীবন দেব তবুও দেশকে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান হতে দিব না- বলেন এই নেতা।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় ও ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের আন্তর্জাতিক প্রচারণা বিষয়ক সম্পাদক মো. মশিউর রহমান, হেযবুত তওহীদের সমন্বয়কারী মো. নিজাম উদ্দিন, দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান, হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও গুলশান শাখার সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন রাব্বানী, ঢাকা বিভাগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস মিয়া ও মো. তসলিম উদ্দিন এবং হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা সভাপতি মো. শাহজাহান প্রধান, মহানগর সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Continue Reading

Highlights

রাজধানীতে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা

Avatar photo

Published

on

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচি-কাচার মেলা হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হৃদয়ে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদ।

সংগঠনটির উপদেষ্টা শাহ মুহাম্মদ সেলিম রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘বাংলা ভাষা বিকৃত করার প্রবণতা তরুণদের মধ্যে বেশ লক্ষণীয়। অফিস-আদালত, চলচ্চিত্র, নাটক, বিজ্ঞাপনসহ প্রায় জায়গাতেই চলছে বিদেশি ভাষার ব্যবহার। বিদেশি ভাষার আগ্রাসনে খাঁটি বাংলা ভাষার চর্চা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয় হলো, আমাদের সমাজে কিছু সুশীল ব্যক্তিবর্গ আছেন যারা বেশি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন। যার প্রভাব পড়ে দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে। তারাও মিশ্র ভাষায় কথা বলতে শেখে। বেসরকারি বেতারগুলোর উপস্থাপকরা তো বাংলা বলেন না বললেই চলে। পৃথিবীর প্রায় ২৮ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলা ভাষার স্থান সপ্তম। বাংলা ভাষার ঐতিহ্য এবং সাহিত্যসম্ভারও বিপুল। অথচ নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার প্রতি উৎসাহী ও মনোযোগী নয়। আরেকদিকে ইংলিশ মিডিয়ামের দৌরাত্বে অনেক ছেলেমেয়ে যদিও বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে কিন্তু লিখতে পারে না। একটু শিক্ষিতরা বাংলার সাথে ইংলিশ শব্দ মিশ্র করে ককটেল বানিয়ে ব্যবহার করে গৌরব করে। অন্যদিকে একজন অশিক্ষিত কৃষক শ্রমিকের কথায় যদি আঞ্চলিকতা প্রকাশ পায় তাকে আমরা ক্ষেত বলে পরিহাস করতে ছাড়ি না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু আমরা কি বাংলা ভাষাকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারছি? আমরা কি বিশুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারি? আমরা কি বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধ করতে পেরেছি? ১৯৪৮ সালে করাচিতে নিখিল পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলনে পাকিস্তানিরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রয়াসে আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব করেছিল। আমরা কিন্তু তাদের অযৌক্তিক প্রস্তাব গ্রহণ করিনি। হয়েছে প্রতিবাদ, আন্দোলন। কিন্তু এখন তরুণ প্রজন্মের বড় অংশই ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লিখছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কোনো মহল থেকেই এর কোনো প্রতিবাদ উঠছে না -বলেন এই বক্তা।

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলা ভাষার শুদ্ধ ও সঠিক ব্যবহারের প্রতি অনেকের আগ্রহ কমছে বলে মনে হয়। বিশেষ করে আমাদের শিশু ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভাষার প্রতি মমত্ব ও আগ্রহ নিয়ে উদাসীনতা মোটেও ভালো কিছু নয়। শিশু ও তরুণদের একাংশ বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। এর জন্য আমাদের বিদ্যমান পরিস্থিতিও অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি ভাষা শিক্ষা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু নিজের ভাষাকে অবহেলা করার পক্ষেও আমি নইÑ বলেন হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

তিনি বলেন, ‘বিমা-ব্যাংকে গেলে বাংলার ব্যবহার প্রায় অদৃশ্য। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানেও ইংরেজিতে প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা হয়; এমনকি কর্মরতদের নাম, পদবিও থাকে ইংরেজিতে। ব্রিটিশরা আমাদের মনে পরনির্ভরতা ও বিদেশি ভাষার প্রতি যে অনুরাগ তৈরি করে গেছে, সেটি বদলাতে হবে। বিদেশি শব্দ ও ভাবধারার প্রতি আমাদের দুর্বলতা দূর করতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশ সরকারিভাবে তাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহারে সাফল্য দেখিয়েছে; তাহলে আমরা কেন পারব না?”

সবশেষে তিনি বলেন, মানবজাতি এক জাতি। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ইসলামের নিষিদ্ধ। সব ভাষাই আল্লাহর দেওয়া। প্রকৃতির বৈচিত্র্য যেমন স্বাভাবিক তেমনি ভাষার বৈচিত্র্যও স্বাভাবিক। ইসলাম ভূপ্রকৃতির কারণে জাতীয়তাবাদ এবং ভাষার কারণে বিভিন্নতার কারণে জাতীয়তাবাদ কোনটাকেই স্বীকার করে না। ইসলামের বিধানে সমস্ত মানুষ এক জাতি ভাষার কারণে কোনো জাতি অন্য জাতির উপরে শ্রেষ্ঠ হতে পারে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, লায়ন কেফায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি সৈয়দ হুমায়ুন কবির, অতিথি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও লায়ন সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ নারী উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রূপা আহমেদ, দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান প্রমুখ।

বিশেষ অতিথি মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান তার বক্তব্যে বর্তমানের বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা ইংরেজি ভাষার বিভিন্ন দুর্বলতা তুলে ধরে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধ সুশৃঙ্খল রূপ তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথি দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা তার বক্তব্যের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ আদালতে ইংরেজি ভাষার ব্যবহারের নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে এসব দপ্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশিত ভাষার গানে দেশের গানে মুখরিত হয় মিলনায়তন।

Continue Reading