নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা সদরের মনতলা বাস টার্মিনালের পাশে গত ৩ দিন ধরে সার্কাসের আড়ালে র্যাফেল ড্র’র নামে জমজমাট জুয়ার আসর চলছে বলে জানা গেছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উপজেলা শ্রমিক ইউনিয়ন জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এক সপ্তাহের শর্ত সাপেক্ষে সার্কাসের অনুমতি নিয়ে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে একদিকে জুয়ার ফাঁদে সর্বশান্ত হচ্ছে এলাকার হাজার হাজার শ্রমজীবী সাধারণ লোকজন অন্যদিকে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মারাত্মক বিঘœ ঘটছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কলমাকান্দা উপজেলা সদরের মনতলা বাস টার্মিনালের পাশে উপজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারা মিয়া এক সপ্তাহের জন্য শর্ত সাপেক্ষে সার্কাসের অনুমতি নেয়। তবে সার্কাসের বাইরে অন্য কোন আয়োজনের অনুমতি না থাকলেও প্রথম দিন থেকেই টেলিভিশন, সিলিং ফ্যান, গরু, মোবাইল সেটসহ নানান লোভনীয় উপহারের মাধ্যমে রাফেল ড্র’র টিকিট বিক্রি করে এলাকার হাজার হাজার শ্রমজীবীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজকরা। র্যাফেল ড্র’র জমজমাট প্রচারণা ও মাইকিংয়ের ফলে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মারাত্মক বিঘœ ঘটছে বলে অভিযোগ করেন উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল।
আয়োজক উপজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারা মিয়া বলেন, ৩ দিন ধরে র্যাফেল ড্র চললেও অনুমতির কাগজ এখনো আমার হাতে এসে পৌঁছায় নি। অনুমতির চিঠিটি আমাদের একজন আ’লীগ নেতার কাছে রয়েছে। তিনিই সবকিছুর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ বলেন, শর্ত সাপেক্ষে সার্কাসের বিষয়টি আমার জানা আছে। র্যাফেল ড্র’র বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিমা খানম বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের সার্কাসের অনুমতির ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন বলতে পারবে।
কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়ার বিষয়টি চিন্তা করে সার্কাসের অনুমতির জন্য বার বার নিষেধ করা হলেও জেলা প্রশাসন থেকে ৭ দিনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর ফলে এলাকার সাধারণ শ্রমজীবী লোকজন লোভে পরে সর্বস্ব হারাচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক ড. তরুণ কান্তি শিকদার বলেন, শর্ত সাপেক্ষে এক সপ্তাহের জন্য শ্রমিক ইউনিয়নকে সার্কাসের অনুমতি দেয়া হয়েছে। শর্তের বাইরে কিছু করলে সার্কাসের মাঠ বন্ধ করে দেয়া হবে।