কাউনিয়ায় মায়ের কবরে মাটি দেয়া হলো না নবীরের
কাউনিয়া প্রতিনিধিঃ
মৃত মায়ের জানাজা ও কবরে মাটি দেয়া হলো না নবীর হোসেনের। প্রতিপক্ষের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হতে হয় তাকে। ঘটনাটি ঘটেছে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের ছিট নাজিরদহ গ্রামে। এ ঘটনায় ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয় বলে অনেকে মনে করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, নবীর হোসেন এর মা জমিলা বেওয়া (৫০) গত ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ১২ টার দিকে মৃত্যু বরণ করেন। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে নবীর হোসেন ঢাকার গাজিপুর থেকে ১৪ মার্চ বিকালে বাড়িতে পৌছান। সে এসে মায়ের দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করতে থাকেন। এরমধ্যে কথা শুরু হয় মাকে কোথায় কবর দিবে। নবীর জানায় মায়ের অছিয়ত করা জমিতে কবর দেয়া হবে। এই কথার প্রেক্ষিতে নবীরের চাচা আঃ ওহাব এতে বাধা প্রদান করে। নবীর হোসেন ও তার অপর ভাই দবীর হোসেনসহ মায়ের লাশ ছোট ভাই বদিয়ার রহমানের বাড়ি থেকে আনতে গেলে তাদের চাচা ওহাব মিয়ার হুকুমে বদিয়ার, নুরুল, শফিকুল, আশরাফুল, আঃ কাদের বাধা প্রদান করে। একপর্যায়ে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। পরবর্তীতে চাচার আদেশে তারা নবীর হোসেন ও দবীর হোসেনকে গাছের ডাল দিয়ে এলোপাথারী মার ডাং শুরু করে। এতে নবীরের মাথা-নাক ফেটে যায় ও একটি হাত ভেঙ্গে যায় এবং দবীরের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়। তাদের আত্মচিৎকারে তাদের স্ত্রী মহসিনা বেগম ও শাহার বানু এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর আহত করে।
পরে এলাকার লোকজন এসে গুরুতর আহত অবস্থায় নবীর হোসেনকে প্রথমে কাউনিয়া হাসপাতালে এবং তার অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বাকীদের স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করায়। ফলে একদিকে যেমন মায়ের অছিয়ত করা জায়গায় তার কবর দেয়া সম্ভব হয়নি অন্যদিকে ঢাকা থেকে এসে মায়ের জানাজা ও কবর দিতে পারেনি নবীর হোসেন।
হামলাকারীদের বিরুদ্ধে রংপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউনিয়া আমলী আদলতে দবীর হোসেন গত ২০ মার্চ নালিশ দায়ের করেন। কাউনিয়া থানার এসআই মিজান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল ইসলাম জানান, বিষয়টিতে সত্যতা আছে। এলাকাবাসী বলছেন, মায়ের মাটি দিতে এসে চাচার হুকুমে মার ডাং খেয়ে গুরুতর আহত হয়ে ছেলেকে যেতে হলো মেডিকেল। এ যেন ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবী করেছে এলাকাবাসী।