গলাচিপায় রেনু পোনা নিধনে উপকূল থেকে হারাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির ছোটমাছ
সঞ্জিব দাস, গলাচিপা: পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় প্রকাশ্যে বিভিন্ন নদীতে অবাধে সু² ফাঁসের মশারি নেট, বিহিন্দী, কারেন্ট জাল ও বক্স আকৃতির জাল পেতে পোনা মাছ নিধনের এ ভয়াবহ তান্ডব চলছে। স্থানীয় পুলিশ, মৎস্য বিভাগ, নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ডসহ কারও নাকের ডগায় আবার কোথাও গোপনে চলছে মৎস্যসম্পদ নিধনের এমন তান্ডব। এসব পোনার সাথে মারা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেনু। প্রতিদিন শুধুমাত্র গলাচিপা সহ উপকূলীয় নদী ও সাগরবক্ষে কোটি কোটি পোনা নিধন হলেও অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এসব দেখার কেউ নেই। এসব পোনা আবার প্রকাশ্যে বিভিন্ন হাট-বাজারের আড়তে পাইকারি ক্রয়-বিক্রয় চলছে। পোনা ধরা নিষেধ-এমন প্রচার চালিয়ে আবার আড়ত মালিকরা আহরণকারী দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে লোনা পানির পোনা কিনছে পানির দরে। সর্বোচ্চ ৩০টাকায় এক শ’ রেণু পোনা বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছে গরিব জনগোষ্ঠী। যে যেভাবে পারছে কৌশলে লাভবান হচ্ছে। অথচ দেশ হারাচ্ছে মাছের বিশাল ভান্ডার। কোস্টগার্ডসহ মৎস্য প্রশাসন অভিযান চালালে তখন পোনা ধরার প্রবণতা কিছুটা কমে। কিন্তু সম্পুর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। গরিব জনগোষ্ঠী আবার পেটের যোগান দিতে রাতের বেলা পোনা আহরণ করছে। তবে পোনা আহরণের পরিমাণ এখন অনেকটা কমেছে বলে প্রশাসনের দাবি।
জানা গেছে, সরকারী হিসেবে এ উপজেলায় অন্তত ১৩ হাজার ৫শ ৬২ জন জেলের বসবাস রয়েছে। এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষ জেলে পেশায় নিয়োজিত। মুলধন কম লাগায় শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত প্রাই সকল বয়সীরা ক্রমশই ধাবিত হচ্ছেন এ পেশায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপকুলের এক শ্রেনীর লোক মাছ শিকার নামে মশারি, কারেন্ট, বেন্থিজাল সহ বিভিন্ন প্রকারের জাল দিয়ে প্রতিনিয়ত ধ্বংস করছে ছোট মাছ। ফলে উপকুলীয় অঞ্চল হারাচ্ছে মাছে বিশাল ভান্ডার। ছোট মাছের সাথে অন্তত ৩৩৫ প্রজাতির রেণু, পোনা, সহ ছোট মাছ ধ্বংস হচ্ছে বলে মৎস্য বিভাগ সুত্র প্রকাশ করেছেন। সাগর-নদী কিংবা নদীর বাঁকে বাঁকে মশারী নেট পেতে মাছ শিকারের দৃশ্য এখন এ উপজেলায় অহরহ।
এদিকে মৎস্য বিভাগসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা নদীতে টহল দিলেও রোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে রেনু নিধন। তারা (জেলে) মৎস্য বিভাগ ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে খুশি রেখেই রেনু নিধন করায় অভিযোগ রয়েছে জনশ্রæতিতে। স্থানীয় লোক সূত্রে জানা যায়, রেনু নিধনের ব্যাপারে নাম মাত্র অভিযান চালায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ। যারা প্রতিমাসে মাসোয়ারা দিতে পারবে তারাই মাছ ধরা চালিয়ে যেতে পারবে। জেলে মো: টুটু বয়াতী বলেন, কিছুদিন পূর্বে ১৫/২০ টি লোতর জাল সহ ছোট ফাঁসের বিভিন্ন প্রকার জালের দেখা পেলেও মাত্র ৩টি জাল তুলে নিয়ে পুরে ফেলা হয়েছে কিন্তু বাকি অবৈধ জালগুলো দেখা সত্বেও না দেখার ভান করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সদস্যরা। “আমরা কোন মাসোহারা না দেয়ার কারনেই আমাদের জালগুলো পুরে ফেলা হয়েছে। অন্যান্য জেলেরা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপরে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বাবু অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, এরকম কোন ঘটনার কথা আমার জানানেই তবে খতিয়ে দেখছি ।