গাজীপুরে গার্মেন্টকর্মীর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল, পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
গাজীপুর প্রতিনিধি:
মহানগরের ভোগড়া এলাকায় ম্যাসট্রেড ইন্টারন্যাশনাল গার্মেন্টস (মাস্টার গার্মেন্টস) নামে একটি পোশাক কারখানায় পানি খেয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পরেছে। প্রতিষ্ঠানের ট্যাংকি থেকে ওই পানি সরবরাহ করা হয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় এক শ্রমিক মারা গিয়েছেন বলেও দাবি করে শ্রমিকেরা। তবে পুলিশ বিষয়টি স্বীকার না করায় ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এক শ্রমিকের মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছে। গতকাল সকাল ১০টায় ওই ঘটনা ঘটে। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, সকালের টিফিনের সঙ্গে কারখানার ট্যাংকি থেকে সরবরাহ করা পানি খেয়ে প্রথমে একজন শ্রমিক অসুস্থবোধ করে এবং এক সময় তিনি মাথা ঘুড়ে পড়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে আরো ২০/২৫ জনের একই অবস্থা হয়। এরপর ক্রমান্বয়ে অসুস্থ শ্রমিকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকজন শ্রমিককে অসুস্থ অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠায়। গাজীপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ৬৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালে বেড না থাকায় বারান্দায় তাদের চিকিৎসা চলছে। জয়দেবপুর চান্দনা চৌরাস্তায় রাফি জেনারেল হাসপাতালে ৮ জন ও বোর্ডবাজারের তারগাছ এলাকায় অবস্থিত তায়রুন্নেছা মেডিক্যালে অপর ২০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। গাজীপুর সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শ্রমিকেরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এটিকে ফুড পয়জনিংও বলা যেতে পারে। এদিকে স্থানীয় সূত্রে নিহত শ্রমিকের নাম শাহিদা আক্তার বলে জানা গেছে। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় তায়রুন্নেছা হাসপাতালে মারা গেছেন বলে শ্রমিকেরা দাবি করলেও নিহতের লাশ পাওয়া যায়নি এখনও। কারখানার ম্যানেজার তাহমিনা বেগম জানান, “সব দিনের মত সেদিনও সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করে। যথারীতি পিপাসা পেলে কারখানার পানির লাইন থেকে পানি পান করার পর শ্রমিকরা একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে শাহিদা পানি পান করে নিহত হননি। তিনি অন্য কোনো অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন।” ভোগরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক ইকরামুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “মৃতদেহ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠানো হবে। তাহলেই ঘটনার সত্যতা জানা যাবে।”