‘চামচাগিরি-তোয়াজ-তোষণের প্রয়োজন নেই’
প্রশাসনের কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সত্য কথা বলুন, নিরপেক্ষভাবে ও সচ্ছতার সঙ্গে কাজ করুন। চামচাগিরি করা, তোয়াজ-তোষণ করার কোনো প্রয়োজন নেই।
বুধবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সচিবালয়ে যারা কাজ করেন, শেখ হাসিনার সরকার আপনাদের কাছে সততা চায়, স্বচ্ছতা চায় নিরপেক্ষতা চায়। পক্ষ নিয়ে এখানে তোয়াজ-তোষণ করবেন, এটা আমরা চাই না। এই তোয়াজ-তোষণের ফল ভাল নয়। পরিণতি শুভ নয়।
তিনি বলেন, কর্মকর্তাদের সঙ্গে, প্রশাসনের সঙ্গে, ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে একটা সেতুবন্ধন থাকতেই হবে। আইন প্রণেতারা আইন প্রণয়ন করবে। আর পলিসি নির্ধারণ করবেন রাজনৈতিকরা, সেটা বাস্তবায়ন করবেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
‘তবে সেখানে বিরোধপূর্ণ কোনো পরিবেশ প্রত্যাশিত নয়। সেখানে সংঘাতের কোনো অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। যার যার অবস্থানে তার তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সচিবালয়ে একটা স্বস্তির পরিবেশ বজায় রয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সচিবালয়ে কথায় কথায় মারামারি দেখেছি। সচিবালয়ে দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্মবিরতি দেখেছি, ধর্মঘট দেখেছি। অচল করার হুমকিও দেখেছি।’
‘আমি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগের বাংলাদেশকে দেখেছি। ১৫ আগস্টের পরের ছবিও দেখেছি। আমার ভয় হয়- যখন আমি সচিবালয়ের আশপাশে বিলবোর্ড, পোস্টার আর ব্যানারে আকাশ পর্যন্ত ঢেকে গেছে, এমন পরিবেশ দেখি। চোখের পলকে ১৫ আগস্ট ঘটে গেল, যাদের দেখতাম নব্য আওয়ামী লীগার সেজে মুজিবকোট পরত, ১৫ আগস্টের পর মুজিবকোট লুকানোর দৃশ্যপটও ভুলিনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজ বাংলাদেশের যত্রতত্র অনেকেই বঙ্গবন্ধুর মুরাল তুলেছে। যদি হঠাৎ চোখের পলকে কোনো অঘটন ঘটে যায়, তখন কী এ সব মুরাল রাখবেন। যারা করেছেন তারাই ভেঙে ফেলবেন। এই দৃশ্যপট অনেক দেখেছি।
তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি, আপনারা যদি আমার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার হন, তাহলে দুঃখ লাগে। এখন অনেকেই নব্য আওয়ামী লীগার আমাদের চেয়েও যেন বড় আওয়ামী লীগার। কথায় কথায় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। কিন্তু এটা কী মনের কথা! অনেককেই দেখেছি ১৫ আগস্টের আগে কী বক্তব্য দিয়েছেন। ১৫ আগস্ট ঘটার পর রাতারাতি ভোল পাল্টে ফেলেছে। এই ভোল পাল্টানো আওয়ামী লীগারদের আমার প্রয়োজন নেই।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আমি আশা করি ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকতা, সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন, আমি এটা বিশ্বাস করি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা শেখ মুজিবকে ইতিহাস থেকে মুছে দিতে দিয়েছিলো, তারাই আজ মুছে যাচ্ছে ইতিহাসের পাতা থেকে। এটা হলো ইতিহাসের অমোঘ সত্য। তাদের ঠাঁই হচ্ছে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে।
সরকারের উন্নয়ন বিএনপি দেখে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। তারা পূর্ণিমার ঝলমলে আলোতে অমাবশ্যার অন্ধকার দেখে।