Connecting You with the Truth

জাপানের সাথে ১৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ চুক্তি

জাপান বাংলাদেশ Japan-Bangladeshজাপান বাংলাদেশের বড় ৬ প্রকল্পে ১৭৩ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ইয়েন বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা ঋণ দেবে। যা এযাবৎ কালের মধ্যে সর্বোচ্চ। বুধবার (২৯ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং জাইকার প্রধান প্রতিনিধি মিকিও হেতেদা। অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান ও জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াটানাবে উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক উত্তরোত্তর শক্তিশালী হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাপান এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১ লাখ কোটি ইয়েন আনুষ্ঠানিক উন্নয়ন সহায়তা ঋণ, ৫০ হাজার কোটি ইয়েন অনুদান এবং ৬ হাজার ৫০০ কোটি ইয়েন কারিগরি সহায়তা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাপানের দেওয়া এ ঋণের বার্ষিক সুদের হার মাত্র দশমিক শূন্য এক শতাংশ, যা ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৪০ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
যে ৬টি মেগা প্রকল্পে ঋণ ব্যবহার করা হবে তার মধ্যে-যমুনা রেল সেতু নির্মাণে ২ হাজার ৪৬৪ মিলিয়ন ইয়েন, সীমান্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার উন্নয়নে ২৮ হাজার ৬৯৮ মিলিয়ন ইয়েন, মেট্রোরেল প্রকল্পে ৭৫ হাজার ৫৭১ মিলিয়ন ইয়েন, মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৭ হাজার ৮২১ মিলিয়ন ইয়েন, জ্বালানি সাশ্রয় এবং উন্নয়ন প্রকল্পে ১১ হাজার ৯৮৮ মিলিয়ন ইয়েন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পে ১৬ হাজার ৯৯৬ মিলিয়ন ইয়েন ব্যয় করা হবে।
ঢাকায় ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ, বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণকাজে জাইকা ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি দেবে। যমুনা নদীর ওপর প্রায় পৌনে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পৃথক একটি রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি ডুয়াল গেজ ডাবল লাইনের এই সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই বছরের শেষ দিকে এই রেল সেতুর নির্মাণ শুরু করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যমুনা সেতুর ওপর রেল সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিসহ বেশ কিছু কাজ এগিয়ে রেখেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জাইকা ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা ঋণ দেবে।
মাতারবাড়ি প্রকল্পের অধীনে মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৬শ’ মেগাওয়াট করে ১২শ’ মেগাওয়াটের দুটি আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ হবে। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। মাতারবাড়ি প্রকল্পে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা সহায়তা দেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। এরই অংশ হিসেবে দ্বিতীয় ধাপে সংস্থাটি প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে।

Comments
Loading...