জিয়ানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রোগীরা
কেফায়েত উল্লাহ, জিয়ানগর(পিরোজপুর)প্রতিনিধি: দক্ষিন অঞ্চলের উপকুলবর্তী পিরোজপুরের জিয়ানগরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকতেও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ । জিয়ানগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নামে আাছে কিন্তু কাজে নাই । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় ডাক্তার আছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৩ তলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর ভবন আছে, নার্সসহ জনবল রয়েছে তারপরও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইনডোর ও আটডোর চালু হয়নি। এর নাম পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালে এ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সর র্নিমান কাজ শুরু হয়ে বিভিন্ন প্রতিকুলতার মধ্যে ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে শেষ হয়। তখন থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ডাক্তার, নার্স, অফিস সহকারী সহ বিভিন্ন পদে লোক পদায়ন দেওয়া হয়। কিন্তু ঔষধ সরবরহ, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, ইনডোর ও আটডোর চালু না হওয়ায় ডাক্তারা শুধূ ব্যাবস্থা পত্র দিয়ে রোগীদের খালী হাতে ফিরিয়ে দেয়। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সব কিছু থাকার পরও ইনডোর ও আটডোর ৭ বছরেও চালু না হওয়ায় কোন কাজ না থাকায় ডাক্তার ও নার্সদের ডেপুটেশনে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে হয়। অথচ প্রতিমাসে জিয়ানগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাদের বেতন ভাতা উত্তোলন করতে হয়। ৭বছর ধরে এ অবস্থা থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একাধিক বার বিভিন্ন প্রশাসনিক সভায় হাসপাতালের সমস্যা নিয়ে কথা বললেও তা বাস্তবে রুপ লাভ করেনি। ফলে দক্ষিন অঞ্চলের উপকুলবর্তী এ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ হাসপাতাল থাকতে ও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ডাক্তাররা তাদের চেম্বারে বসে আছে, রোগীরা লাইন দিয়ে দাড়িয়ে ডাক্তার দেখাবার জন্য অপেক্ষা করছে। ডাক্তারা অনেক সময় পর রোগী দেখলেও শুধু ব্যবস্থা পত্র দিয়ে রোগীদের খালি হাতে ফার্মেসী থেকে ঔষধ নিতে বলছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে ১৪ কিঃ মিঃ দূরের চন্ডিপুর কলারন থেকে ডাক্তার দেখাতে এসে ৭৫ বছরের আ. মজিদ হাওলাদার বলেন “মুই ডাক্তার দেহাইছি মোরে কোন ঔষুধ দেয় নায়”। এভাবে প্রতিদিন শত শত লোক ঔষধ না পেয়ে শুকনা মুখে খালি হাতে ফিরে যায়। তেমনি জরুরী কোন রোগীকে এখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায় না। তাদেরকে ১৮ কিঃ মিঃ দুরে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়।
এ বিষয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শংকর কুমার জানান, ডাক্তার আছে, জনবল আছে শুধূ ঔষুধ সরবরহ ও ইনডোর চালু হলে এ এলাকার মানুষের কিছুটা স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া যেত। কিছু দিন আগে একটি এ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে ।
উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী বলেন, আমাদের এলাকার পিরোজপুর-২ আসনের এমপি ও বন ও পরিবেশে মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু মহোদয়কে যাবতীয় সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। হয়তবা কিছুদিনের মধ্যে হাসপাতালটি সম্পূর্ণরূপে চালু হতে পারে। যদি চালুকরা সম্ভব না হয় তবে এলাকার লক্ষ্যাধীক মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবে। এলাকা বাসীর দাবী দ্রুত জিয়ানগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ সরবরহ সহ ইনডোর ও আডটডোর চালু হলে এলাকা বাসী দীর্ঘ দিনের প্রতিক্ষিত স্বাস্থ্য সেবা পেত।