টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের আরও একটি ‘শ্রেষ্ঠত্ব’র লড়াই আজ
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে ভালো খেলে না। এটা কোনো গোপন কথা নয়। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান যখনই সুযোগ পাচ্ছেন সেটা জানিয়ে দিচ্ছেন। এ ফরম্যাটে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের চেয়ে কতটা পিছিয়ে সেটা র্যাঙ্কিংয়ে দুই দলের ব্যবধান টেনে বারবার বলছেন সাকিব। আসলেই কতটা পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ?
আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি খেলবে র্যাঙ্কিংয়ে সাতে থাকা আফগানিস্তান। দশে থাকা বাংলাদেশের সে সুযোগ হচ্ছে না। বিশ্বকাপের ‘সুপার টুয়েলভে’ জায়গা করতে চাইলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রথম রাউন্ডে পার করে আসতে হবে। গত বিশ্বকাপেও এ রাউন্ডে থাকা আফগানিস্তান তিন বছরের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের অবস্থান গড়ে নিলেও এখনো আগের অবস্থানে রয়ে গেছে বাংলাদেশ। অথচ এর মাঝে একটি টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানা দুটি সিরিজে হারিয়েছে। তবু এখনো অধিকাংশ টি-টোয়েন্টি ম্যাচই বাংলাদেশ শুরু করছে আন্ডারডগ হিসেবেই।
ত্রিদেশীয় সিরিজে গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচে জয় পেলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অন্তত এক ম্যাচের জন্য হলেও টপকে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু নয়ে উঠে এলেও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের করুণ দশা আড়াল করা যাবে না। র্যাঙ্কিংয়ে দশে থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে জয় পরাজয়ের অনুপাতে বাংলাদেশ অন্য অনেক দলের চেয়েই পিছিয়ে। এখনো পর্যন্ত ৮৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ২৭টি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। হেরেছে ৫৮ ম্যাচে। অর্থাৎ প্রতিটি জয়ের বিপরীতে দুটির বেশি হার আছে বাংলাদেশের। সাকিবদের জয় পরাজয় অনুপাত ০.৪৬৫।
জয়-পরাজয়ের অনুপাতের হিসেবে শীর্ষে থাকা অধিকাংশ দলই র্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে। তবে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে যাওয়া দুটি দল এখানে জায়গা করে নিয়েছে। ৭ ম্যাচ খেলে সাতটিতে জয়ী নামিবিয়ার পরেই আছে ‘জারসি’। ৬ জয়ের বিপরীতে ১ পরাজয় ইউরোপের এই ছোট্ট দেশটির। শীর্ষে থাকা অন্য দলগুলো কেউই বিশ্ব মানচিত্রে এখনো জায়গা করে নিতে পারেনি। অন্তত ১৫টি ম্যাচ খেলার মানদণ্ড ধরলে আফগানিস্তানের ধারেকাছে কেউ নেই। ৭৩ ম্যাচে ৫১টিতেই জয়ী আফগানিস্তান হেরেছে মাত্র ২২ ম্যাচে। ফলে তাদের জয় পরাজয়ের অনুপাত ২.৩১৮। পাকিস্তান (১.৮) ও ভারত (১.৭৮) এই ক্ষেত্রে আছে তিন ও চারে। বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব খেলতে যাওয়া পাপুয়া নিউগিনি ১১ জয়েই টপকে গেছে (১.৮৩৩) তাদের।
টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ১৫টি ম্যাচ খেলেছে ২১টি দল। জয় পরাজয়ের অনুপাতে বাংলাদেশে সে ক্ষেত্রে ১৯তম দল। স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড কিংবা নেদারল্যান্ডসের মতো দলগুলোও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে। এমনকি ক্রিকেট মানচিত্রে এখনো অনেক পিছিয়ে থাকা হংকং, কানাডা, আরব আমিরাত এমনকি নেপালও এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে বাংলাদেশের চেয়ে। নিয়মিত ক্রিকেট খেলছে এমন দলের মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে মাত্র দুটি দল। একটি বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরির সঙ্গে জড়িত ওমান (০.৩৫৭)। অন্যটি জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির বিষয়, আজকের ম্যাচের প্রতিপক্ষ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে। টি-টোয়েন্টিতে ১৪ জয়ের বিপরীতে ৫২ ম্যাচে হারা জিম্বাবুয়ে (০.২৬৯) অবশ্য আপাতত আগামী বিশ্বকাপ খেলার দৌড়েও নেই। বোর্ডের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা তাদের বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে দিয়েছে।
আজ সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই বাংলাদেশের আরও একটি ‘শ্রেষ্ঠত্ব’ ধরে রাখার লড়াই।