ঠাকুরগাঁও শিশু তুষার হত্যায় আটক ৯
জেলার রানীশংকৈল উপজেলার মুনিষগাঁও গ্রামে আব্দুল কাফি তুষার (৩) নামের এক শিশুকে গলা কেটে হত্যার সময় ৪ জন সরাসরি জড়িত ছিল বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে তুষারের মামা সেতু।
সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিশু তুষার হত্যার ঘটনা ও ৯ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ ও রানীশংকৈল থানার সার্কেল এসপি মো. হাসিব আটক আসামীদের আদালতে প্রদানকৃত জবানবন্দির উদ্বৃতি দিয়ে জানান, শিশু তুষারের প্রতিবেশি চাচা রাজু তার বিয়ের খরচের জন্য তুষারকে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায়ের জন্য পরিকল্পিত ভাবে ২৬ এপ্রিল বুধবার তুষারকে অপহরন করে। তার আগে তুষারের মামা সেতু, চাচাতো ভাই শান্তসহ কয়েকজনের সাথে টাকার চুক্তি হয় রাজুর।
সেই মোতাবেক সেতু তার মা (তুষারের) নানীর মোবাইল চুরি করেন অপহরনের পর মুক্তিপন দাবির জন্য। অপহরনের দিন সকালে আর এক প্রতিবেশি চাচা সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে গিয়েছিল তুষার।
ওই বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তুষারকে সিরাজুল ইসলামের ছেলে শান্তর (১৫) কোলে দেখা যায়। সেদিনই তুষারকে অপহরণ করা হয়। তুষার নিখোঁজের ছয় ঘণ্টা পর ওই চুরি হওয়া মুঠোফোন দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে রাজু। পরে তুষারের বাবা মাসুদ রানা রানীংশকৈল থানায় অপহরণ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।
বিষয়টি টের পেয়ে অপহৃতরা শিশু তুষারকে চেতনা নাশক ওষুধ দিয়ে একটি বস্তায় ভরে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্যস্থানে নিয়ে যায়। পরে একটি ঘরে রাজু, সেতু, শান্ত ও রিপন শিশু তুষারের গলা ও হাতের রগ কেটে হত্যা করে।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালে বাড়ির পাশে একটি খড়ের গাদা থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয় এবং পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে অর্ধগলিত গলাকাটা অবস্থায় শিশু তুষারের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
পরে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ মূলহোতাসহ ৯ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালালে এ হত্যা রহস্য প্রকাশ পায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রবিবার (৩০ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক ফারহানা আক্তার খানের কাছে শিশু তুষার হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছেন তুষারের মামা সেতু। পরে আদালত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে আটক ৯ জনকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহম্মেদ, রানীশংকৈল থানার সার্কেল এসপি মো. হাসিব, সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মশিউর রহমান, ওসি তদন্ত মান্নান ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদকর্মীগন উপস্থিত ছিলেন।