তাঁতীর ছেলে বিসিএস ক্যাডার
আব্দুস ছালাম সফিক, সাটুরিয়া(মানিকগঞ্জ): সদ্য প্রকাশিত ৩৫তম বিসিএস (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) পরীক্ষায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল চেীধুরী ইংরেজি প্রভাষক হয়েছেন। তিনিই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী যিনি মানিকগঞ্জের সাটুৃরিয়া উপজেলার তাঁতীর ছেলে।
তিনি জানান, “জীবনে সফলতার মূল হলো সৎ থাকা”। তিনি জানান, স্বপ্ন ছিল জনগনকে সরাসরি সেবা দেওয়ার জন্য জন-প্রশাসন বা পুলিশ প্রশাসনের ক্যাডার হয়ে নতুন করে পথচলা। তবে অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমের ফল স্বরূপ পেয়েছেন শিক্ষা ক্যাডার।
মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার হামজা গ্রামে জন্ম সোহেল চেীধুরীর। বাবা আশরাফ উদ্দিন তাঁত শ্রমিক, বড় ভাই আতিকুর রহমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মেঝো ভাই রফিকুল ইসলাম স্কুলশিক্ষক, মা জুলেখা বেগম গৃহিণী। প্রথম অবস্থা থেকে সোহেল অন্যের বাড়িতে টিউশনি করতো। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট সোহেল চেীধুরী।
লেখা পড়ায় উৎসাহ দিতে বড় ভাই আতিকুর রহমান ও মোঝো ভাই রফিকুল ইসলাম দিয়েছেন আর্থিক সুবিধা। বৃদ্ধ বাবা আশরাফ উদ্দিন অন্যের বাড়িতে তাঁত শ্রমিকের কাজ করে কিনে দিয়েছেন বই-খাতা । এভাবেই চলেছে সোহেলের শিক্ষা জীবন।
২০০৬ সালে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের এম বোরহান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পান তিনি। টাঙ্গাইলের মাহমুদুল হাসান কলেজ থেকে এইচএসসি। কিন্তু এইচএসসির রেজাল্ট পাওয়ার পর ব্যথিত হন তিনি। কারণ এইচএসিতে পান জিপিএ-৪.৮০। তবে থেমে থাকেননি তিনি। ভর্তি হন দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জাহাঙ্গীরনগর বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে। এরই ধারাবাহিকতায় স্নাতকে জিপিএ ৩.৩৫ নিয়ে প্রথম হন তিনি। বিসিএস ক্যাডার স্বপ্নে বিভোর হয়ে জিপিএ ৩.৫৫ অর্জন করে মাস্টার্সেও ভালো ফল করেন।
তিনি জানান, বিসিএস প্রিলিমিনারি পরিক্ষার আগে দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেছেন। প্রিলিতে টেকার পর পড়ালেখা বাড়িয়ে দেন। লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে ১৫ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেন। বই কেনার টাকা না থাকায় বিভিন্ন লাইব্রেরিতে ঘুরে ঘুরে পড়েছেন।
তার স্বপ্ন তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাবেন তিনি। দেশের জনগণের সেবা নিশ্চিত করাই তার মূল লক্ষ্য বলে জানান এই তরুণ