Connect with us

জাতীয়

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ রক্ষা কমিটির সুন্দরবন লংমার্চ

Published

on

sundarbanস্টাফ রিপোর্টার:সুন্দরবনে ট্যাঙ্কার ডুবিতে তেল নিঃসরণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে সুন্দরবন অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। গত কাল রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে উক্ত কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভা থেকে আগামী ১১ থেকে ১৬ মার্চ ঢাকা থেকে সুন্দরবন অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। ‘শেলা নদীতে তেল বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে সরেজমিন প্রতিবেদন উপস্থাপন ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভা থেকে আগামী ৬ ফেব্র“য়ারি বিজ্ঞানী, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, পেশাজীবী ও রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে জাতীয় কনভেনশনের ঘোষণা দেয়া হয়। কর্মসূচির শহীদুল্লাহ বলেন, “সুন্দরবন শুধু আমাদের জাতীয় সম্পদ নয়, এটা বিশ্বের জনগণের সম্পদ। সেখানে যে তেল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিকারের জন্য প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি। আমরা সুন্দরবন রক্ষার দাবিতেই এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।” সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে ‘ব্যাপক মাত্রায় জনসম্পৃক্ততা’র লক্ষ্যেই দুইমাস আগে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। গত ৯ ডিসেম্বর ভোরে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে শেলা নদীতে একটি মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় সাড়ে তিন লাখেরও বেশি জ্বালানী তেলসহ ডুবে যায় ‘সাউদার্ন স্টার-৭’ নামের একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার। দুর্ঘটনার পর নদীর বিশাল এলাকাজুড়ে তেল ছড়িয়ে পড়ায় সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ ও জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এই তেল বিপর্যয়ের প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। তবে সুন্দরবনের ওই দুর্ঘটনার প্রভাব খতিয়ে দেখতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের দল সরেজমিন ঘুরে ও অনুসন্ধান করে ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলন করে। গত ৩১ ডিসেম্বরের ওই সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান এমিলিয়া ভলস্ট্রম বলেন, “এ দুর্ঘটনা একটা ওয়েকআপ কল। এতে ম্যানগ্রোভ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের ওপর আপাতত তেলের প্রভাব সীমিত। তবে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মোকাবেলায় নিয়মিত তদারকি ও সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌ চলাচল বন্ধ করা উচিত।” এদিকে গত ১৯ ডিসেম্বর এই ঘটনার সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন শিক্ষক, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মীদের একটি দল। আলোচনা সভায় উপস্থিত ওই দলের প্রতিনিধি শিল্পী আনুশেহ আনাদিল বলেন, “আমরা গিয়ে দেখলাম, শেলা নদীর প্রায় ৭১ কিলোমিটার পর্যন্ত তেল ছড়িয়েছে, এবং এই নদীর আশপাশের ১১টি গ্রামের মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” আনুশেহ বলেন, “ওই গ্রামগুলোতে বসবাসকারীদের মূল পেশা মৎস আহরণ। নদীতে তেল ছড়ানোর পর থেকে মাছের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। নদীতে নেমে তেল তোলার কারণে গ্রামবাসীরা ব্যাপকভাবে চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের শিকার হচ্ছেন। তাদের যথাযথ চিকিৎসার কোন ব্যাবস্থা আমাদের চোখে পড়েনি।” তেল গ্যাস কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহম্মদ এ বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “সুন্দরবনের যে ক্ষতি হয়েছে তা টাকার অংকে পরিমাপ করা যায় না। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সরকার যদি সিরিয়াস হতো তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া যেত।” অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী
জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *