দোয়ারাবাজারে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে হয়রানীর অভিযোগ
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: দোয়ারাবাজারে অহেতুক মামলায় জড়িয়ে এক নিরীহ মুক্তিযোদ্ধা কে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রামীণ ঝগড়া ফ্যাসাদকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় সালিশী করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের রোষানলে পড়ে বর্তমানে জেল কাটতে হচ্ছে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধার পরিবার সুত্রে জানাযায়, প্রায় এক বছর আগে একই গ্রামের লোকমান হোসেন ও রফিক উদ্দিন দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টারের নির্দেশে দু’পক্ষকেই ঝগড়া থেকে বিরত রাখতে সালিশীর জন্য ঘটনাস্থলে যান। পরে প্রতিপক্ষের ইন্ধনে লোকমান হোসেন ও নুরুল ইসলাম মাস্টার পক্ষের লোকজন তাকে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করেন।
ওই মামলার প্রধান আসামী রফিকুল ইসলাম জানান, জমিজমা নিয়ে প্রতিপক্ষ লোকমান হোসেন ও তার আতœীয় স্বজনের বিরোধ আমাদের সাথে। প্রতিপক্ষ অন্যায় ও জোরপূর্বকভাবে আমাদের জমি দখল করতে ওই দিন বাড়ী ঘরে হামলা চালানোকালীন সময়ে তিনি সালিশী করতে এসেছিলেন। এখানে মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ন কবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মিথ্যা কথা সাজিয়ে মামলায় তাকে আসামী করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী শাহিনা আক্তার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, আমার স্বামীকে হয়রানী করতেই প্রতিপক্ষের ইন্ধনে ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। বর্তমানে স্বামী জেলে থাকায় আমার পরিবারের লোকজনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বিভিন্নভাবে আরো মামলা-হামলার ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। দু’পক্ষই দীর্ঘদিন ধরে আপোষ মীমাংসার কথা বলে ঝুলন্ত রাখায় জেল কাটতে হচ্ছে তাকে।
এ দিকে নিরীহ মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবিরকে কে মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করায় তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। তারা দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটনা প্রবাহ ভিন্ন খাতে নিয়ে তৃতীয় পক্ষের ওই মুক্তিযোদ্ধাকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করার নিন্দা জানিয়েছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সফর আলী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির এলাকার একজন বয়োবৃদ্ধ শান্তি প্রিয় লোক। তাকে হয়রানী করতে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় অহেতুক তাকে জড়ানো হয়েছে। মামলার চার্জসিট দেয়ার আগে আমি ও মুক্তিযোদ্ধারা বারবার থানার ওসি সাহেব কে তার নাম বাদ দিতে অনুরোধ জানিয়েছি কিন্ত কোনো ধরণের তদন্ত ছাড়াই উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে চার্জসিটে তার নামদেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে তার মুক্তি ও মামলা থেকে অব্যহতি না দিলে প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবেন বলেও জানান ওই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার বলেছেন, দু’পক্ষের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় সালিশী করতে যাওয়ার কথিত অপরাধে বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির কে মামলায় জড়িয়ে হয়রানী সত্যিই দুঃখজনক। আমি অবিলম্বে মামলা থেকে তার অব্যাহতি ও মুক্তি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি সেলিম নেওয়াজ বলেছেন, মামলার বিষয়টি এখন সম্পূর্ণই আদালতের বিষয়। তবে অনেক দিনের আগের ঘটনা তো মামলার তদন্তের বিষয়টি এব্যাপারে জেনে বলা যাবে।