নতুন ৪টিসহ ১৫ জেলার নিম্নিাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত
দেশের প্রধান দু’টি নদী যমুনা ও পদ্মার পানি বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকায় নতুন করে আরো ৪টি জেলার নিম্নিাঞ্চল বন্যা-প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত নতুন চারটি জেলার মধ্যে রয়েছে, নিলফামারী, লালমনিরহাট, মুন্সিগঞ্জ ও গাজীপুর। এ নিয়ে মোট ১৫টি জেলার নদী-সংলগ্ন বিভিন্ন উপজেলার অধিকাংশ নিম্নিাঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। অসময়ে বন্যার কারণে রোপা-আমন চাষীরা বিপাকে পড়েছে। -খবর বাসসের।
বাসস’র জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ বুলেটিন থেকে এ কথা জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বুলেটিনে আজ জানানো হয়েছে,আগামী ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা বেসিনের প্রধান নদী যমুনার পানি-সমতলে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে গঙ্গা-পদ্মা বেসিনের অন্যতম প্রধান নদী পদ্মার-পানি সমতলে বাড়ছে।
দেশের প্রধান দু’টি নদীর পানি বৃদ্ধির এই প্রবনতা আগামী ২৪ ঘন্টায় অক্যাহত থাকতে পারে। তবে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত ২৪ ঘন্টায় স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পাসি স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনার কথাও বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে। আর আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রবাহিত নদ-নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করেছে এবং পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় পানি তমার প্রবনতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, উজানে বৃষ্টিপাতের কারণে, অসময়ে সৃষ্ট বন্যায় যে ১৫টি জেলার নিম্নিাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, সে-জেলাগুলোর মধ্যে রযেছে, কুড়িগ্রাম, নিলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর শরীয়তপুর ও গাজীপুর।
এসব জেলার বাসস’র প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত এলাকার দুর্গত মানুষের মাঝে স্ব-স্ব জেলা-প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি বরাদ্দ অনুসারে শুকনো খাবারসহ অন্যান্য খাবারের সমন্বিত প্যাকেট বিতরণের কার্যক্রম চলছে।
এদিকে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্যা-কবলিত ১২টি জেলার জন্য মোট ১৩ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট/বস্তা এসব জেলার জেলা প্রশাসকের অনুকুলে বরাদ্দ করে স্বল্প-সময়ে ছাড় দেয়া হয়েছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েব-সাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ি কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার জেলা প্রশাসকদের অনুকুলে দেড় হাজার করে ৩ হাজার প্যাকেট এবং জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসকদের প্রত্যেকের অনুকুলে ১ হাজার করে মোট ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও, শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা বেসিনের প্রধান নদ-নদীগুলোর ২২ টি পানি-পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে বিপদ-সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বলেও বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ১৯টি পযেন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহের কথা জানানো হয়েছিল।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়মিত পর্যবেক্ষাণাধীন ১০৯ টি পানি-পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে (বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায়) পর্যবেক্ষণ অনুযায়ি ৫৪ টি পযেন্টে পানি বেড়েছে। অপরদিকে পানি কমেছেও ৫৪টিতে এবং ১টির পানি অপরিবর্তিত ছিল বলে বুলেটিনে জানানো হয়।