নীলফামারী সৈয়দপুরে মেলার কারণে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি
মাহবুব-উল-হাসান, সৈয়দপুর:
নীলফৈামারী সৈয়দপুরে মেলার কারণে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি সৈয়দপুর রেলওয়ে মাঠে অনুষ্ঠিত পুতুল নাচের নামে অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শন, জুয়ার আসর, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটছে বলে একাধিক মহলের অভিযোগ। মেলার কারণে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় মেলা বন্ধ না হয়ে উল্টো মেলা উদযাপন করতে বাড়ানো হয়েছে তার মেয়াদকাল।
সূত্রমতে, সম্প্রতি সৈয়দপুর রেলওয়ে মাঠে মাত্র ১০ দিন মেলা উদযাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে উদ্বোধন করেন নীলফামারী-৪ আসনের সাংসদ ও বিরোধী দলীয় হুইপ আলহাজ্ব শওকত চৌধুরী। সেখানে তিনি বলেছিলেন, সৈয়দপুরবাসীল বিনোদনের জন্যই মেলাটির উদ্বোধন করা হয়েছে। এ মেলায় যাত্রা, জুয়া বা পুতুল নাচের নামে কোন প্রকার অশ্লীল কার্যক্রম পরিচালনা করা চলবে না। যদি কেউ প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযোগ করেন বা পেপার-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ওইদিন এমপির ভাষণে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলেও বর্তমানে তা ঘৃণার চোখে দেখছেন এলাকাবাসী। মেলার উদ্বোধনের মাত্র ২ দিন পরই শুরু হয়ে যায় পুতুল নাচের নামে অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শন ও র্যাফের ড্রর নামে জমজমাট জুয়ার আসর। আর এ কারণেই অপরাধী চক্ররা মাদকাসক্ত হয়ে সম্প্রতি উপজেলার পশ্চিম বেলপুকুর কুঠিপাড়ার সিপাইগঞ্জ বাজারের এক ফাঁকা জায়গায় ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে। চিকলী বাজারের আরমান টেলিকম, বাবুল মুদি দোকান, লোকমান সারের দোকান ও কাদের হোটেলে ২০/২২ জনের একটি ডাকাত দল দুর্ধর্ষ ডাকাতি করে। ওই সময় ডাকাতদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ৪ জন নৈশ প্রহরী গুরুতর জখম হয়। এর মাত্র দুইদিন পর গত রবিবার রাতে উপজেলার কামারপুকুর এলাকায় ১৫/১৬ জনের একটি ডাকাত দল রফিকুল চৌধুরীর নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি করে। ওই সময় ডাকাতরা রফিকুল চৌধুরীসহ তার দুই ছেলেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করে একটি ১০০ সিসি বাজাজ মোটর সাইকেল, একটি ল্যাপটপ, ৩টি মোবাইল সেট, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে। এছাড়া চুরি, ছিনতাইসহ যুবতি মেয়েদের ইভটিজিং হচ্ছে যেন নিত্যদিনের ঘটনা। এলাকাবাসী বলছেন, মেলার কারণে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় মেলা বন্ধ হওয়ার কথা। কিন্তু সেটি বন্ধ না হয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে মোটা অংকের চুক্তির বিনিময়ে মেয়াদকাল আরও ১৫ দিন বাড়ানো হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ঘুষ বাণিজ্যের কারণেই দিন দিন আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে বলে মন্তব্য সুধী মহলের।