পঞ্চগড়ে সরকারি বন কেটে ড্রেজার বসিয়ে পাথর উত্তোলন: থানায় মামলা
ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে সরকারি বন কেটে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাথর উত্তোলন করায় থানায় মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ।
জানা যায়, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সরকারি বনাঞ্চল ধ্বংস করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাথর উত্তোলন করায় পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) পঞ্চগড় সদর থানায় এই মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ।
মামলার আসামীরা হলো- পঞ্চগড় উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের ভেলকুপাড়া এলাকার মকছেদুল, আজগর আলী, খতিব উদ্দিন, বকশিগছ এলাকার হোসেন আলী, আরিফুল, কাকপাড়া এলাকার জুয়েল রানা ও মহির উদ্দিন।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে সবার চোখের সামনে ওই সরকারি জমির গাছ কেটে পাথর উত্তোলন করলেও বন বিভাগ কোনো ব্যস্থাই নেয়নি। স¤প্রতি ওই বনায়নে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে এখন তারা মামলা করেছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সামাজিক বনায়নের আওতায় ১৯৯৪-৯৫ সালে সাতমেরা ইউনিয়নের ভেলকুপাড়ায় এলাকায় প্রায় একর জমির ওপর ইউক্যালিপটাস, আকাশমনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপন করে বন বিভাগ। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে একটি প্রভাবশালী মহল ওই জমিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করছেন। একই সাথে নির্বিচারে গাছপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
ওই জমিতে ৫ থেকে ৬টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। পুলিশ অভিযান চালালে সাময়িকভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ হলেও পুলিশ চলে গেলে আবারও শুরু হয় পুরোদমে পাথর উত্তোলন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বিভিন্ন জায়গায় ওদের লোকজন পাহাড়া দেয়। দিন দুপুরে ড্রেজার দিয়ে পাথর তুলে বনায়নটি নষ্ট করে ফেলেছে। ওরা অনেক প্রভাবশালী তাই আমরা কিছু বলতে পারছি না।
স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী বদিউজ্জামান জানান, আমরা দীর্ঘদিন থেকেই দেখছি ওই বনায়নের জমিতে ড্রেজার দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই।
এ বিষয়ে জড়িতদের কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিট কর্মকর্তা (ফরেস্টার) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আমাদের যে পরিমাণ বনভূমি রয়েছে তার অনুপাতে আমাদের জনবল অত্যন্ত কম। তাই সঠিকভাবে বনায়ন দেখভাল করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ভেলকুপাড়া এলাকায় আমাদের বনায়নের গাছ কেটে ড্রেজার দিয়ে পাথর উত্তোলনের সাথে যারা যুক্ত তাদের নামে থানায় এজাহার দাখিল করেছি। বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।