পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীদের চাপ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ঈদের ছুটি শেষে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষ রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে কর্মস্থলে ফিরতে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ভিড় করছেন। অতিরিক্ত যাত্রী থাকার সুযোগে বাসের চালক ও মালিকেরা নির্ধারিতের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পরও গতকাল পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় কোনো কোনো বাসের চালক ও মালিক যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেন। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার দায়ে গতকাল দুপুরে এনএনবি পরিবহনের বাসের চালক লুৎফর রহমান এবং ডি-লিংক পরিবহনের বাসের চালক আলমগীর হোসেনকে ৫০০ টাকা করে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল দুপুরে পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে লঞ্চ ও ফেরিতে হাজারো যাত্রী পাটুরিয়া ঘাটে আসছেন। সেখান থেকে বাসে ওঠার জন্য চালক ও সহকারীদের সঙ্গে ভাড়া ঠিক করছেন। পাটুরিয়া থেকে ঢাকার গাবতলী পর্যন্ত সরকার-নির্ধারিত ১২৭ টাকার জায়গায় ২০০ টাকা ভাড়া ডেকে ডেকে বাসে যাত্রী তুলছেন চালকের সহকারীরা। তবে পুলিশ বাসের কাছে গেলে সহকারীরা সরে গিয়ে গোপনে অতিরিক্ত ভাড়া চূড়ান্ত করে যাত্রীদের বাসে তুলছেন। ছাদে যাত্রী ওঠাতে গেলে পুলিশ সদস্যরা হস্তক্ষেপ করছেন। তবে টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ার পর কিছু দূর গেলে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে যাত্রীদের ছাদে ওঠানো হচ্ছে। এ জন্য প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। বিআরটিসির বাস ছাড়াও স্থানীয় পদ্মা লাইন, এনএনবি, যাত্রীসেবা, ডি-লিংক, জনসেবা, শুভযাত্রাসহ বিভিন্ন পথের বাস পাটুরিয়া থেকে ঢাকায় যাত্রী বহন করছে। তবে বিআরটিসি বাসে নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
অন্তত ১০ জন বাসচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি আয় আশা করেন পরিবহন মালিকেরা। এ ছাড়া পাটুরিয়া থেকে ঢাকায় যাত্রী বোঝাই করে গেলেও খালি বাস নিয়ে ফিরতে হচ্ছে।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার মোখলেছ মিয়া ঢাকার সাভারের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। গতকাল তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে পাটুরিয়া থেকে এনএনবি পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। ভাড়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের তিনজনের ভাড়া ৬০০ টাকা চেয়েছিল। দর-কষাকষির পর ৫০০ টাকায় সিট পেয়েছি।’
পাটুরিয়া ঘাটে দায়িত্বরত শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী ও ভাড়া যাতে কেউ না নিতে পারেন, সে জন্য পুলিশ প্রতি মুহূর্তে বাসের চালক ও সহকারীদের সতর্ক করছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে জরিমানাও করা হচ্ছে। তারপরও কোনো কোনো বাসচালক ও সহকারী যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার চেষ্টা করেন।