পানির কত রঙ
রকমারি ডেস্ক:
পানির রঙ কি? এই প্রশ্নের পুথিগত উত্তর মোটামুটি সবাই জানেন। অবশ্য কেউ কেউ বুদ্ধি খাটিয়ে হরেক রঙয়ের সঙ্গে পানিকে মেলাতেও পারেন, কিন্তু সেটা হবে কৃত্তিম। পানি যে পাত্রে রাখা হবে সেই পাত্রেরই আকার ধারণ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এমন যদি হয়, কোনো রঙ মেশানো ছাড়াই পানির রঙ ভিন্ন হয়ে গেছে আপনার চোখেরই সামনে তখন কেমন হবে। হ্যা, পৃথিবীতে এমন কিছু স্থান আছে যেখানে পানির রঙ স্বাভাবিক পানির রঙয়ের চেয়ে ভিন্ন। এমন কিছু স্থান সম্পর্কে সচিত্র ফিচার তুলে ধরা হলো।
যুক্তরাষ্ট্র: ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক হৃদ আছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির ইয়োলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কে রয়েছে এমনি এক হৃদ যার পানির রঙ ভিন্ন ভিন্ন। প্রায় ৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৫০ মিটার গভীর এই হৃদটির পানির রঙ কেন ভিন্ন ভিন্ন রঙয়ের সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট করে এখনও কিছু বলতে পারেন নি। তবে একদল গবেষকের মতে, তাপমাত্রার ভিন্নতার কারণে পানির রঙ পাল্টে যেতে পারে। স্পটেড লেক, কানাডা: বিভিন্ন খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ লেক কানাডার স্পটেড লেক। গ্রীস্মে যখন কানাডার বেশিরভাগ জলাধারই শুকিয়ে যায় তখনও পানি থাকে এই লেকে। স্থানীয়রা এই লেকটিকে ‘ক্লিলুক’ নামে ডাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিস্ফোরক তৈরিতে এই লেকের লবণ ব্যবহার করা হয়েছিল। লবণের বাইরেও এই লেকে আছে সালফেট, সিলভার এবং টায়টানিয়াম। প্রতিবছর বহু পর্যটক এই লেকের বহু রঙবিশিষ্ট পানি দেখতে আসেন।
রেতবা, সেনেগাল: দূর থেকে দেখতে মনে হবে একটা আস্ত সুইমিং পুল। কিন্তু যতই কাছে যাবেন ততই আপনার ভুল ভাঙতে শুরু করবে। স্থানিক দূরত্বের উপর যেমন এই লেকের পানির রঙ নির্ভর করে তেমনি মনোমুগ্ধকর গোলাপি রঙয়ের পানির জন্য বিখ্যাত এই লেক। বিশেষত শুষ্ক মৌসুমে এই লেকের পানির রঙ পাল্টে যায়। অন্যান্য সময়ও পানির রঙ গোলাপি থাকে তবে শুষ্ক সময়ের মতো অত গাঢ় হয় না।
অ্যান্টার্কটিকা: অ্যান্টার্কটিকার এই ঝর্ণাধারাটির বুক থেকে ধীরে ধীরে গড়িয়ে পরে রক্তের রঙয়ের পানি। গবেষকদের দাবি পানিতে অত্যাধিক আয়রণ থাকার কারণে পানির রঙ এরকম হয়েছে। কিন্তু এটাও সত্যি, যদি পানির রঙ পরিবর্তনের কারণ অত্যাধিক আয়রণই হয়ে থাকে তাহলে যে বরফের চাইয়ের বুক চিড়ে লাল রঙয়ের পানি বেরুচ্ছে সেই বরফের রঙও লাল হওয়ার কথা। কিন্তু ধবধবে সাদা বরফের মাঝের পানির রঙ কিভাবে লাল হয় সেটা আজও রহস্য। খনিজ সমৃদ্ধ লেকের মতো তুরস্কের ত্রাভারতিন লেকটিও বেশ অদ্ভুত। পানির ধার ঘেষে যাওয়ার সময় আপনার মনে হতেই পারে পানির তলায় অজস্র ফুল ফুটে আছে। কিন্তু একটু কাছে গেলেই দেখা যাবে, বিভিন্ন রঙয়ের পানির ঘুর্ণি অবিরত পাঁক খাচ্ছে। তুরস্কের সরকারের পক্ষ থেকে এই স্থানটিকে প্রথমদিকে জনসাধারণের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে কিন্তু জাতিসংঘ এই স্থানটিকে বিশ্বের দর্শনীয় স্থানগুলোর একটিতে স্থান দেয়ার পর তুরস্ক সরকার নিশেধাজ্ঞা তুলে নেয়।