প্রবীণ রাজনীতিকদের ত্যাগ ও নিষ্ঠা প্রামাণ্যকরণের ওপর প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবীণ রাজনীতিকদের ত্যাগ ও নিষ্ঠা প্রামাণ্যকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন, যাতে তরুণ প্রজন্ম দেশের অভ্যুদ্বয়ের ইতিহাস জানতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বুধবার বঙ্গভবনে ‘ভাটি শার্দুল মো. আবদুল হামিদ প্রামাণ্য গ্রন্থ’-এর মোড়ক উন্মোচনকালে আরো বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগের বহু রাজনীতিকের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন রয়েছে। তারা দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রেখেছেন। কিন্তু তাদের আন্দোলন-সংগ্রাম অজানাই রয়ে গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পরিবারের সদস্যসহ আমাদের রাজনীতিকরা বিপুল ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাদের ত্যাগের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা আসলেও তা প্রচার পায়নি। শেখ হাসিনা আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি একটি প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উঠে এসেছেন এবং আদর্শ বজায় রেখে রাজনীতি করেছেন। তিনি ধাপে ধাপে জীবনে সাফল্য অর্জন করেছেন। কিন্তু এ সাফল্যের জন্য তাঁকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। এ প্রামান্য গ্রন্থে তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যেসব প্রবীণ রাজনীতিক বিপুল ত্যাগ স্বীকার করেছেন তারাও এ ব্যাপারে লিখবেন বলে আমি আশা করি। তাহলে তরুণ প্রজন্ম দেশের অভ্যুদ্বয়ের ইতিহাস জানতে পারবে।
অনুষ্ঠানে ভাষণে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাঁর জীবনের বাকি অংশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মূল্যবোধ ও নীতিকে ধারণ করে অতিবাহিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই আদর্শ, মূল্যবোধ ও নীতিই একদিন তাঁকে রাজনীতিতে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছিলো।
এ গ্রন্থ সম্পর্কে তিনি বলেন, রাজনীতিক নেতা, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী ও শুভাকাংখীরা তাঁর কাছে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। আমি মনে করি, এটি আমার প্রতি তাদের আগ্রহ, ভালোবাসা ও সৌজন্যেরই বহির্প্রকাশ।
প্রায় ৭৭ জনের মতো লেখক এ গ্রন্থে তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিকের ওপর আলোকপাত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠী, সহকর্মী, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ এবং সাংবাদিক। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাশাপাশি তিনি স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এ গ্রন্থে তাঁর ওপর লিখেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দূর্গাদাস ভট্টাচার্য, রাষ্ট্রপতির সহপাঠী ও সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, সাবেক ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী, সাবেক চিফ হুইপ আবদুস শহীদ, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্ন, সাবেক সচিব শফিক আলম মেহেদী, রাষ্ট্রপতির পুত্র রিয়াদ আহমেদ এবং ভাই অধ্যক্ষ মো. আবদুল হক।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমিরিটাস ড. আনিসুজ্জামান এবং গ্রন্থের সম্পাদক ফারুক আহমেদও বক্তৃতা করেন। এতে স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং সংসদ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।