বিনা খরচে মালয়েশিয়ায় ১৫ লাখ শ্রমিক পাঠাবে সরকার
মালয়েশিয়া সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে অর্থাৎ ‘জি টু জি প্লাস’ প্রক্রিয়ায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী পাঠাবে সরকার। এ লক্ষ্যে উভয় পক্ষের এক সমঝোতা স্মারকের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার সকালে সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এই সমঝোতা স্মারক কার্যকর হলে ২০১২ ও ২০১৪ সালের এ সংক্রান্ত চুক্তি বা সমঝোতাগুলো বাতিল হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আগের নেওয়া উদ্যোগগুলোর ক্ষেত্রে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তবে জি-টু-জি প্লাস চুক্তির ক্ষেত্রে বায়রা সহযোগিতামূলক কিছু কাজে অংশ নেবে। এ ক্ষেত্রে তারা নির্ধারিত কিছু ফি-ও নিতে পারবে।
তিনি জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে দুই দেশ সমঝোতা স্মারকে সই করার পর জনশক্তি রপ্তানির মূল কাজ শুরু হবে। এ প্রক্রিয়া আগের তুলনায় স্বচ্ছ হবে, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে, নারী-কর্মীদের যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে।
শফিউল আলম আরো জানান, এ সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী অভিবাসন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার ‘সোর্স কান্টি’ হিসেবে মর্যাদা পাবে। এর আগে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কর্মীরা শুধু ‘প্ল্যান্টেশন’ (বৃক্ষরোপণ) খাতে কাজ করতে পারতেন। নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশি কর্মীরা সেবা খাত, ম্যানুফেকচারিং এবং নির্মাণ খাতে কাজ করতে পারবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় কাজের ক্ষেত্র ব্যাপকভাবে প্রসারিত হলো। তবে, সংশ্লিষ্ট খাতে কাজ করতে হলে কর্মীকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কর্মী নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়া থেকে চাহিদা আসবে। তার প্রেক্ষিতে বিএমইটি’র তথ্য ভাণ্ডারে নিবন্ধিতদের থেকে আগ্রহীদের মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে। অভিবাসন ব্যয়ের সবটুকু নিয়োগকর্তা বহন করলেও প্রাথমিক কিছু খরচ অভিবাসন প্রত্যাশীকে বহন করতে হবে।
জি টু জি (সরকার টু সরকার) প্রক্রিয়ায় কর্মী প্রেরণের প্রচেষ্টা সফল না হওয়ার পরিপ্রক্ষিতে জি টু জি ‘প্লাস’ প্রক্রিয়ায় নতুন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ পেতে যাচ্ছে। জি টু জি প্রক্রিয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ধরনের সুযোগ ছিল না।