Connect with us

জাতীয়

বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন, নেই পর্যাপ্ত ত্রাণ, ছড়িয়ে পড়ছে রোগবালাই

Avatar photo

Published

on

floof picদেশেরপত্র ডেস্ক:
দেশের বড় বড় নদীগুলোতে বেড়েই চলেছে পানি। অব্যাহত ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা নদীর পানিতে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় পানি নদীর দুই কূল ছাপিয়ে চলে এসেছে বসতবাড়িতে। ঘরে প্রবেশ করেছে পানি। গবাদি পশুর খাবার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। খাবার পানির উৎস দূষিত পানির সাথে মিশে যাওয়ার ফলে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া, আমাশয়ের মতো রোগব্যাধি। মওসুমি বায়ু বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বেশ সক্রিয় রয়েছে। ফলে এসব স্থানে গত দুই সপ্তাহ মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের সব বড় নদীর উৎস ভারতে। শুষ্ক মওসুমে বাংলাদেশে এসে পড়েছে এমন প্রায় সব নদীতেই বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকে দিলেও বর্ষা মওসুমে ভারত সব নদীর বাঁধ খুলে দেয়। ফলে বর্ষা এলেই বাংলাদেশের নদীগুলো দ্রুত ভরে গিয়ে দুই কূল উপচে বন্যার সৃষ্টি করে। এবারো এর কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। বাংলাদেশের সব বড় নদীই বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়া নদীর পানি অপরিবর্তিত থাকলেও তিস্তার পানি গত ২৪ ঘন্টায় আবারও ২০ সে.মি. বেড়েছে। গতকাল সকালে ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ২৪ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ঐ সময়ে যমুনা নদীর পানি বগুড়ার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ধীর গতিতে পানি কমলেও, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ধলিরকান্দি থেকে রৌহাদহ পর্যন্ত পৌনে ৪ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বাঁধের ৫টি পয়েন্টে প্রায় ৩০০ মিটার ধসে গেছে। যমুনায় পানি অপরিবর্তিত থেকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি থাকায় এ ঝুঁকি আরো বেড়ে গেছে। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে নতুন নতুন এলাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সারিয়াকান্দির উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি বৃদ্ধি না পেলেও এখনো বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সকালে বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার ধলিরকান্দি থেকে রৌহাদহ পর্যন্ত পৌনে ৪ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পুরোটাই হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধের ৫টি পয়েন্টে ৩০০ মিটার ধসে গেছে। টপ থেকে এখন যমুনার পানি ২মিটার উপরে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সরকার জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চন্দনবাইশার শেখ পাড়া ও রৌহাদহ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
জামালপুরে যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ির ২৫টি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। জামালপুর জেলার বিভন্ন ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ, চুকাইবাড়ী, চিকাজানী ৩টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে। ইসলামপুর উপজেলার যমুনার তীরবর্তী ৭টি ইউনিয়ন, বিশেষ করে পার্থর্শী, কুলকান্দি, বেলগাছা, চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, ইসলামপুর সদর ও সাপধরী ইউনিয়নের প্রায় ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে অত্যন্ত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ সব ইউনিয়নের মধ্যে চিনাডুলী ও নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যমুনার উলিয়ার পয়েন্টে ১২শ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পানিতে বিলিন হয়েছে। অপর দিকে যমুনার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করেছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। ইসলামপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়েনের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। ইউনিয়ন গুলোর মধ্যে পলবান্ধা,গোয়ালের চর, গাইবান্ধা, চরগোয়ালিনী ও চরপুটিমারী ইউনিয়ন নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর উঠতি ফসল রোপা আমন ধান, বীজতলা, তরিতরকারী, পুকুরের মাছ। এছাড়া জেলার বকসিগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষিয়া, বগারচর, মেরুরচর ও সাধুরপাড়া ইউয়িন, মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর, ঘোষের পাড়া, ঝাউগড়া ইউনিয়ন নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। জামালপুরের জেলা প্রশাসক শাহাব উদ্দিন খান এরইমধ্যে ইসলামপুর বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে ২৪ মে. টন চাউল ও ৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ শুকনা খাবর বিতরণ করেছেন।
গতকাল যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়। সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর ও তাড়াশ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ এখনো পানিবন্দি। এদিকে যমুনার প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবাতে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে এনায়েতপুরের সলিড ¯পার ও রিং বাঁধের প্রায় ২শ মিটার এলাকা। হুমকির মুখে উপমহাদেশের বৃহৎ এনায়েতপুর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েক হাজার ঘর-বাড়ী। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে পানি গত ২৪ ঘণ্টায় দুই সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে গত ১২ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি না পেয়ে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এদিকে জেলা জুড়ে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে যমুনার ভাঙন অব্যহত রয়েছে। বন্যার পানিতে জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলার দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় দুই লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দী। কাজিপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নেই অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কাজিপুরের মেঘাই-সোনামুখী আঞ্চলিক সড়কের ধারে বন্যার পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। নদীর পানি আর সামান্য বাড়লেই এই সড়কে পানি উঠতে পারে বলে এলাকাবাসী জানায়। এই সড়কে পানি উঠলে কাজিপুর থেকে বগুড়া যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষ তাদের সাধারন কাজকর্ম না করতে না পারায় কষ্টে জীবন যাপন করছে। বিশেষ করে ব্রক্ষ্মপূত্র বাঁধের ওপর আশ্রয় নেয়া মানুষ এখন বেশি কষ্টে রয়েছে। খাবার ও পানির অভাবের পাশাপাশি গবাদি পশু নিয়ে কোনো রকম তারা জীবন যাপন করছে। এখন পর্যন্ত তাদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি বলে অভিযোগ করেছে বন্যা কবলিত মানুষ। এদিকে অব্যাহত পানির প্রবল চাপে বেলকুচি উপজেলার কয়েকটি গ্রাম এখন প্রচণ্ড ভাঙনের কবলে পড়েছে। এই উপজেলার আগুরিয়া, রান্ধুনীবাড়ি, হরিনাথপুর, আগুরিয়াচর, বিল মহিষা গ্রামগুলো এখন প্রচণ্ড ভাঙনের মুখে পড়েছে। একই সঙ্গে চৌহালী উপজেলার নদীতীরবর্তী অঞ্চলেও শুরু হয়েছে ভাঙন। এসব এলাকার মানুষ একদিকে ভাঙন অন্যদিকে বন্যার মধ্য পড়ে নাজেহাল অবস্থায় জীবন যাপন করছে।
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ধরলার পানি সামান্য কমলেও ১৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে তিস্তার পানি। দুর্গত এলাকার প্রায় ৫০ হাজার পরিবার গত ৭ দিন ধরে পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন। বন্যায় তলিয়ে আছে জেলার নয় উপজেলার ৫০ ইউনিয়নের চর, দ্বীপচর ও গ্রাম। অনেক পরিবার উঁচু মাচা ও কলা গাছের ভেলায় অবস্থান নিয়ে দুর্বিসহ দিন পার করছে। এসব পরিবারের মাঝে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানি তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি সংকট দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের। গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। কলা গাছের ভেলা ও নৌকাই তাদের এখন একমাত্র ভরসা। সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা না পাওয়া বানভাসী মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে অনেক পরিবারের। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের আছিয়া বেগম জানান, গত শনিবার থেকে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। কোন মেম্বার চেয়ারম্যান এ পর্যন্ত খোঁজ নিল না। এদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৩০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন, শাক-সবজি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, বন্যার্তদের জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাউল ও এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ মেট্রিক টন চাউল ও নগদ ৭০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। আরো বরাদ্ধ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় চিলমারী ব্রহ্মপুত্রের পানি সাত সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও এখনও বিপদসীমার চার সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি কিছুটা বেড়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সরকারি সহযোহিতা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ দুর্যোগ কবলিত এসব মানুষ। প্রথম দফা বন্যার ধকল কাটতে না কাটতেই রংপুরে দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। নতুন করে পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা তীরবর্তী গংগাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেড়েছে নদীভাঙ্গন।
এদিকে আবহাওয়া অফিস আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়া বার্তায় ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে। তার মানে আরো কিছু নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে এবং বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

ওরা সওমকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করেছে : হেযবুত তওহীদের এমাম

Avatar photo

Published

on

রাজধানীতে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে বিশাল আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ ২০২৪) সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-আইডিইবি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হেযবুত তওহীদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মো. তসলিম উদ্দীন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম সওমের নিয়ম, উদ্দেশ্য, শিক্ষা এবং দেশ ও সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বিদ্যমান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি, মুসলমানদের দুর্দশা এবং এ থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সওম মানে আত্মসংযম, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা, বিরত থাকা। রোযা তথা সওমের উদ্দেশ্য এই যে, মো’মেন ব্যক্তি সারাদিন পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন, নিজের আত্মাকে শক্তিশালী করবেন। তিনি অপচয় করবেন না, পশুর ন্যায় উদরপূর্তি করবেন না। তিনি হবেন নিয়ন্ত্রিত, আত্মত্যাগী। বঞ্চিত, ক্ষুধার্ত, দরিদ্র মানুষের দুঃখ অনুভব করে তিনি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেবেন। আল্লাহর হুকুম মানার ক্ষেত্রে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন অর্থাৎ তিনি হবেন তাকওয়াবান। তার এই চরিত্রের প্রতিফলন ঘটবে সামাজিক ও জাতীয় জীবনে। গড়ে উঠবে এমন এক সমাজ যেখানে সবাই একে অপরের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে উৎসাহী হবে, বিরাজ করবে পরস্পর সহমর্মিতা, সহানুভূতি, ভ্রাতৃত্ব। প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি।

তিনি আরও বলেন, আজকের বাস্তবতা এই যে, বর্তমানে এই মৌলিক শিক্ষা হারিয়ে সওম বা রোযা যেন হয়ে গেছে কেবল না খেয়ে থাকা। দেখা যায়, রমজান আসলেই মুসলিমদের মধ্যে হুলুস্থুল পড়ে যায়। নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে ওঠে আকাশছোঁয়া। সংযমের মাস এলেই মুসলিমদের সংযমের সব বাঁধ যেন ভেঙে যায়। আজ রোযাকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানুষ বাজারে গিয়ে নিত্য পণ্যের দাম শুনে অসহায় হয়ে পড়ে। সবাই যেন অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি। ধর্মব্যবসাও জমজমাট হয়ে ওঠে এই মাসে। এ জাতীয় অপরাধ ঢাকা দেয়ার জন্য আত্মপ্রচারের আশায় কিছু দান-খয়রাত করতে দেখা যায় মাত্র। কিন্তু রোযা তথা সওমে সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়ের বোধ অর্থাৎ তাকওয়া সৃষ্টি হয়না, প্রকৃত সিয়ামের সাধনা হয় না মন্তব্য করেন তিনি।

উপস্থিত অতিথি ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, রোজার নির্দেশনাটা মূলত মো’মেনদের জন্য। তার মানে মো’মেনরা রোজা পালন করবে। প্রশ্ন হচ্ছে- এই মো’মেন কারা? তারাই মো’মেন যারা আল্লাহ ও রাসুলের উপর ঈমান আনে, কোনো সন্দেহ পোষণ করে না এবং সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করে। এই মো’মেনের জন্যই হলে রোজা, নামাজ, হজ্ব সবকিছু। আমরা হেযবুত তওহীদ আমাদের জীবন ও সম্পদ আল্লার রাস্তায় কোরবান করে দিয়ে প্রকৃত মোমেন হবার চেষ্টা করছি বলেন তিনি।

এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তোলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তোলওয়াত করেন কারি মো. আসাদ। এরপর দলীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিন তার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের প্রধান উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন, ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, হেযবুত তওহীদের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা প্রমুখ।

এক পর্যায়ে হামদ নাত ও গজল পরিবেশন করেন মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর নিয়মিত শিল্পী শাহীন আলম, রাফে আহমেদ, তাহমিনা আক্তার চাঁদ, তাহী ও ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ। তাদের পরিবেশনায় মুগ্ধ হয় দর্শকরা।

দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তার আগমনে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল।

নামাজ শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। বক্তব্য শেষে তিনি মানবজাতির শান্তি কামনা করে দোয়া করেন। মোনাজাত শেষে মাগরিবের আযান দিলে সবার মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়। অতিথিরা সবাই মিলে একাকার হয়ে ইফতার করেন।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, হেযবুত তওহীদের সাহিত্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, মিরপুর শাখার সভাপতি আব্দুল হক বাবুল, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আহমেদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান, ঢাকা জেলার সভাপতি ইউনুস মিয়া, উত্তরা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিনসহ ঢাকার বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

Continue Reading

Highlights

দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জাতীয় ঐক্যের ডাক হেযবুত তওহীদের

Avatar photo

Published

on

হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ ২০২৪) বিকালে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন তেলিপাড়াস্থ সাগর সৈকত কনভেনশন হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, রাজতন্ত্রের কবর হয়ে গেছে বহু আগে। ফ্যাসিবাদ মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বহু ফ্যাসিস্ট আত্মহত্যা করেছে। সমাজতন্ত্রও ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্রও লাইফ সাপোর্টে আছে- মন্তব্য করেন তিনি।

হেযবুত তওহীদের এই নেতা বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য আমরা দেখেছি। প্রতি ৫ বছর পর পর মহা সংকটে পরতে হচ্ছে জাতিকে। একদল ক্ষমতায় গেলে পরের দিন থেকেই শুরু হয় তাকে টেনে নামানোর চেষ্টা। সমানে চলে জ্বালাও পোড়াও। বাসে আগুন দিয়ে নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। সাপের মত পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করা হচ্ছে। ক্ষমতায় যাবার লড়াইয়ে হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটের নামে নৃশংসতা মানুষ দেখেছে। এই সিস্টেম আর মানুষ দেখতে চায় না। মানুষের তৈরি সব সিস্টেমই তো আমরা অ্যাপ্লাই করলাম। সবগুলো ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের তৈরি তন্ত্রমন্ত্র বাদ দিয়ে আল্লার দেওয়া সিস্টেমে প্রত্যাবর্তন করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পশ্চিমারা আমাদের ব্যাপারে মাতব্বরি করে আসছে বরাবরই। তারা একে একে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন তাদের শকুনি দৃষ্টি পড়েছে আমার প্রিয় জন্মভূমির উপর। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের কূট চাল চালছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, শকুন যত ভয়ঙ্করই হোক না কেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে কোনো সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। হেযবুত তওহীদ থাকতে তাদের এই দুরাশা কোনো দিন পূর্ণ হবে না। প্রয়োজনে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য জীবন দেব তবুও দেশকে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান হতে দিব না- বলেন এই নেতা।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় ও ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের আন্তর্জাতিক প্রচারণা বিষয়ক সম্পাদক মো. মশিউর রহমান, হেযবুত তওহীদের সমন্বয়কারী মো. নিজাম উদ্দিন, দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান, হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও গুলশান শাখার সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন রাব্বানী, ঢাকা বিভাগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস মিয়া ও মো. তসলিম উদ্দিন এবং হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা সভাপতি মো. শাহজাহান প্রধান, মহানগর সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Continue Reading

Highlights

রাজধানীতে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা

Avatar photo

Published

on

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচি-কাচার মেলা হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হৃদয়ে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদ।

সংগঠনটির উপদেষ্টা শাহ মুহাম্মদ সেলিম রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘বাংলা ভাষা বিকৃত করার প্রবণতা তরুণদের মধ্যে বেশ লক্ষণীয়। অফিস-আদালত, চলচ্চিত্র, নাটক, বিজ্ঞাপনসহ প্রায় জায়গাতেই চলছে বিদেশি ভাষার ব্যবহার। বিদেশি ভাষার আগ্রাসনে খাঁটি বাংলা ভাষার চর্চা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয় হলো, আমাদের সমাজে কিছু সুশীল ব্যক্তিবর্গ আছেন যারা বেশি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন। যার প্রভাব পড়ে দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে। তারাও মিশ্র ভাষায় কথা বলতে শেখে। বেসরকারি বেতারগুলোর উপস্থাপকরা তো বাংলা বলেন না বললেই চলে। পৃথিবীর প্রায় ২৮ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলা ভাষার স্থান সপ্তম। বাংলা ভাষার ঐতিহ্য এবং সাহিত্যসম্ভারও বিপুল। অথচ নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার প্রতি উৎসাহী ও মনোযোগী নয়। আরেকদিকে ইংলিশ মিডিয়ামের দৌরাত্বে অনেক ছেলেমেয়ে যদিও বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে কিন্তু লিখতে পারে না। একটু শিক্ষিতরা বাংলার সাথে ইংলিশ শব্দ মিশ্র করে ককটেল বানিয়ে ব্যবহার করে গৌরব করে। অন্যদিকে একজন অশিক্ষিত কৃষক শ্রমিকের কথায় যদি আঞ্চলিকতা প্রকাশ পায় তাকে আমরা ক্ষেত বলে পরিহাস করতে ছাড়ি না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু আমরা কি বাংলা ভাষাকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারছি? আমরা কি বিশুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারি? আমরা কি বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধ করতে পেরেছি? ১৯৪৮ সালে করাচিতে নিখিল পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলনে পাকিস্তানিরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রয়াসে আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব করেছিল। আমরা কিন্তু তাদের অযৌক্তিক প্রস্তাব গ্রহণ করিনি। হয়েছে প্রতিবাদ, আন্দোলন। কিন্তু এখন তরুণ প্রজন্মের বড় অংশই ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লিখছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কোনো মহল থেকেই এর কোনো প্রতিবাদ উঠছে না -বলেন এই বক্তা।

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলা ভাষার শুদ্ধ ও সঠিক ব্যবহারের প্রতি অনেকের আগ্রহ কমছে বলে মনে হয়। বিশেষ করে আমাদের শিশু ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভাষার প্রতি মমত্ব ও আগ্রহ নিয়ে উদাসীনতা মোটেও ভালো কিছু নয়। শিশু ও তরুণদের একাংশ বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। এর জন্য আমাদের বিদ্যমান পরিস্থিতিও অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি ভাষা শিক্ষা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু নিজের ভাষাকে অবহেলা করার পক্ষেও আমি নইÑ বলেন হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

তিনি বলেন, ‘বিমা-ব্যাংকে গেলে বাংলার ব্যবহার প্রায় অদৃশ্য। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানেও ইংরেজিতে প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা হয়; এমনকি কর্মরতদের নাম, পদবিও থাকে ইংরেজিতে। ব্রিটিশরা আমাদের মনে পরনির্ভরতা ও বিদেশি ভাষার প্রতি যে অনুরাগ তৈরি করে গেছে, সেটি বদলাতে হবে। বিদেশি শব্দ ও ভাবধারার প্রতি আমাদের দুর্বলতা দূর করতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশ সরকারিভাবে তাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহারে সাফল্য দেখিয়েছে; তাহলে আমরা কেন পারব না?”

সবশেষে তিনি বলেন, মানবজাতি এক জাতি। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ইসলামের নিষিদ্ধ। সব ভাষাই আল্লাহর দেওয়া। প্রকৃতির বৈচিত্র্য যেমন স্বাভাবিক তেমনি ভাষার বৈচিত্র্যও স্বাভাবিক। ইসলাম ভূপ্রকৃতির কারণে জাতীয়তাবাদ এবং ভাষার কারণে বিভিন্নতার কারণে জাতীয়তাবাদ কোনটাকেই স্বীকার করে না। ইসলামের বিধানে সমস্ত মানুষ এক জাতি ভাষার কারণে কোনো জাতি অন্য জাতির উপরে শ্রেষ্ঠ হতে পারে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, লায়ন কেফায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি সৈয়দ হুমায়ুন কবির, অতিথি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও লায়ন সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ নারী উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রূপা আহমেদ, দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান প্রমুখ।

বিশেষ অতিথি মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান তার বক্তব্যে বর্তমানের বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা ইংরেজি ভাষার বিভিন্ন দুর্বলতা তুলে ধরে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধ সুশৃঙ্খল রূপ তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথি দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা তার বক্তব্যের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ আদালতে ইংরেজি ভাষার ব্যবহারের নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে এসব দপ্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশিত ভাষার গানে দেশের গানে মুখরিত হয় মিলনায়তন।

Continue Reading