বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের কাছে ধরাশায়ী আরব আমিরাত
স্পোর্টস ডেস্ক:
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭৬ রানের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু। দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ১৩০ রানের দাপুটে জয়। বলা চলে বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগুচ্ছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এমন দলের বিরুদ্ধে শনিবার পার্থে মুখোমুখি হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতর। ভারতের সঙ্গে উড়ে যাবে আরব আমিরাত; ম্যাচের আগে এমন ভবিষ্যতবানীই করেছিল সবাই। বাস্তবেও তাই হয়েছে। ভারতের সঙ্গে পাত্তাই পায়নি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামা আরব আমিরাত ভারতের কঠিন বোলিং তোপের মুখে মাত্র ১০২ রানেই অল আউট (৩১.৩ ওভার) হয়ে যায়। ১০৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে মাত্র ১৮.৫ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত (১০৪/১)। সেই সঙ্গে তুলে নেয় নয় উইকেটের দাপুটে জয়। চলতি বিশ্বকাপে ভারতের এটি টানা তৃতীয় জয়, আরব আমিরাতের টানা তৃতীয় হার।
দীর্ঘ দুইযুগ পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে আসা আরব আমিরাত প্রথম দুই ম্যাচে হারলেও লড়াকু মনোভাবে প্রশংসাই পেয়েছিল সবার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৮৫ আর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ২৭৮ রান করে নিজেদের ব্যাটিংয়ের শক্তিটা জানান দিয়েছিল সকলকে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে খেলতে নেমে আরব আমিরাতের অবস্থা যেন ‘ত্রাহি ত্রাহি মধুসুদন’। ভারতীয় স্পিন ঘূর্নিতে নাকাল অবস্থায় পড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। অশ্বিন আর জাদেজার আক্রমণেই মূলত ব্যাটিং দেয়ালে ধস নামে অরব আমিরাতের। ফলে পুরো ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি তারা। ১০২ রানেই অল আউট হয়ে যায়। বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে কোন দলের সর্বনিু স্কোর এটি।
জয়ের জন্য ৫০ ওভারে ভারতের দরকার ১০৩ রান। বিশ্বমানের ব্যাটিং লাইনআপ সমৃদ্ধ ভারতের কাছে এটা ছিল ‘ডাল-ভাতের’ মতোই। ১৮.৫ ওভারে মাত্র এক উইকেট খুইয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় ধোনি শিবির। লক্ষ্য ছোট, তারপরও শুরুটা সতর্কতার সাথেই করেছিল ভারত দুই ওপেনার। কিন্ত অতি সাবধানীর পরও দলীয় ২৯ রানে প্রথম উইকেটের পতন। মাত্র ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ইনিংসের সপ্তম ওভারে মোহাম্মদ নাভিদের বলে রোহান মোস্তফার হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ১৭ বলে ১৪ রানের ছোট ইনিংসে ধাওয়ান দেখা পাননি ছক্কার, তবে হাঁকিয়েছেন তিনটি বাউন্ডারি। তবে জয়ের জন্য বাকি কাজটা সেরেছেন রোহিত আর কোহলি। রোহিত শর্মা অপরাজিত ছিলেন ৫৫ বলে ৫৭ রান করে। এর মধ্যে হাকিয়েছেন ১০টি চার ও একটি ছক্কা। আর কোহলি ছিলেন ৩৩ রানে অপরাজিত। ৪১ বলে কোহলির এই ইনিংসে ছিল না কোনো ছক্কার মার। তবে হাঁকিয়েছেন পাঁচটি বাউন্ডারি।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে আরব আমিরাতের অবস্থা ছিল করুণ। নিয়মতি বিরতিতে উইকেট পতনের মিছিলে যা একটু লড়াই চালিয়েছেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শাইমান আনোয়ার। সর্বোচ্চ ৩৫ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ রান করেছেন খুররম খান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩ রান এসেছে ‘মি এক্সট্রা’র কাছ থেকে! ইনিংসে সবচেয়ে বড় জুটিটা হলো শেষ উইকেটে গিয়ে। শাইমান-মঞ্জুলা গুরুগের ১০ম উইকেটে এল ৩১ রান। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন অশ্বিন। ফলে তিনিই পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার। দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন উমেশ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা।
‘বি’ পুলের পয়েন্ট তালিকায় এই জয়ে শীর্ষস্থান আরও পাকাপোক্ত করল ভারত। তিন ম্যাচে পূর্ণ ছয় পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ধোনির দল। সেখানে তিন ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টানা তিন হারে পয়েন্টের টেবিলের তলানিতে আরব আমিরাতের অবস্থান। আগামী ছয় মার্চ পার্থে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মোকাবেলা করবে ভারত।