বিয়ের আসর থেকে দুই মেয়ের পলায়ন, বাবার আত্মহত্যা
অনলাইন ডেস্ক: বিয়েতে মত না থাকায় বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছেন কনে। তাও আবার একজন নয়। দুইজন! প্রথমে মেজো। পরে সেজো। মেজো মেয়ে বিয়ের আসর থেকে পালানোর পর সেজো মেয়ের সঙ্গে ওই বরের বিয়ের আয়োজন করা হয়। পরে সেজো মেয়েও আসর থেকে পালিয়ে যান। এরপরই অপমানে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন ভারতের রামপুরহাট থানার খাঁপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার মাল।
বিয়ের পিঁড়ি থেকে দুই মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ছোট মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন বাবা। কিন্তু ছোট মেয়ে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। ফিরে যায় বরযাত্রী।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এরপরই অপমানে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বীরভূমের রামপুরহাট থানার খাঁপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার মাল।
মাড়গ্রাম থানার কয়েম্বা গ্রামের অমরেশ মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল রাজকুমারের মেজো মেয়ে গীতার। বৃহস্পতিবার জমজমাট বিয়েবাড়িতে শোরগোল শুরু হয় রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ।
সাতপাকে বাঁধা পড়ার পরই গীতা জানান, তিনি কিছুক্ষণের জন্য বাইরে যেতে চান। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও বিয়ের মণ্ডপে ফিরে আসেননি গীতা। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি গীতার।
অপ্রস্তুত হয়ে রাজকুমার সিদ্ধান্ত নেন, অমরেশের সঙ্গে তার সেজো মেয়ে রীতার বিয়ে দেবেন। রাজি হয়ে যায় পাত্রপক্ষ।
ফের নতুন করে বিয়ের তোড়জো়ড় শুরু হয়। কিন্তু দিদির পথই অনুসরণ করেন রীতা। বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তিনিও। ফের খোঁজাখুঁজি। ফের বিফল চেষ্টা। রাজকুমার ছোট মেয়েকে বিয়ের পিঁড়িতে বসার অনুরোধ করেন। কিন্তু ছোট মেয়ে বাবার অনুরোধ মানতে চায়নি। বরসহ বরযাত্রীরা কয়েম্বা ফিরে যান। একই সঙ্গে ঘর ছাড়েন রাজকুমারও। শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখেন, বাড়ির পাশে একটি গাছে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে রাজকুমারের দেহ।
রাজকুমারের মৃত্যুর খবর শুনে ঘর ছাড়েন তার স্ত্রী লক্ষ্মী। এদিন দুপুরে রীতা ফিরে এলেও রাত পর্যন্ত গীতা এবং লক্ষ্মীর খোঁজ মেলেনি।
রীতা বলেন, দিদি গ্রামের যুবক মলয় মালকে ভালবাসত। মলয়ের সঙ্গেই পালিয়েছে দিদি। তারপর বাবা ওই পাত্রের সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক করে। কিন্তু আমি এবার মাধ্যমিক দেব। তাই আমি বিয়েতে রাজি হইনি। বাধ্য হয়ে বাড়ি ছেড়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম।
রাজকুমারের বাবা দীনবন্ধুর প্রতিক্রিয়া, কোথা থেকে কী হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না। অপমান সহ্য করতে না পেরে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। সূত্র: এবেলা।