বেরোবিতে আমরণ অনশন অব্যাহত-অসুস্থ সংখ্যা ৯
তপন কুমার রায়,বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় দিনের মতো আমরণ অনশন অব্যাহত রয়েছে । আমরণ অনশনের আজ বুধবার ৩য় দিনে ৯ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছে । মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অসুস্থের সংখ্যা ছিল ৩জন। এছারাও সময় গড়ার সাথে সাথে অসুস্থের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে ।
অনশনরতরা জানান, অসুস্থদের মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকটের যাবতীয় সমস্যা সহ ৮ দফা দাবি নিয়ে সাধারন শিক্ষার্থীর পক্ষ অনশনরত শিক্ষার্থী মোঃ শাহাজাহান আলী অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। উপাচার্য , প্রক্টরিয়াল বডির সকল সদস্যের পদত্যাগ দাবি নিয়ে অনশনরত রসায়ন বিভাগের শিক্ষক এইচএম তারিকুল ইসলাম এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান, কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে রসায়ন বিভাগের ল্যাব এটেন্ডেন্ট আব্দুল মালেক মিয়া ও নিরাপত্তা শাখার এম এল এল এস আব্দুল ওয়াহাব, ভুগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমানকে আন্দোলন মঞ্চেই শরীরের অবস্থার অবনতি ঘটায় চিকিৎসকের পরামর্শে তাদের শরীরে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এছারাও ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান (রিপন), ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানের মো. মিল্লাদ হাসান, কর্মচারী আসাদুজ্জামান কবির অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা যায়। এদিকে আমরন অনশনরতদের চিকিৎসার জন্য উপাচার্যের আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত চিকিৎসকবৃন্দ রুটিন মাফিক চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত আছেন বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, গত রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্পের সামনে এই অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীদের ৮ দফা ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেওয়ার পাশাপাশি যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ঢাকায় অবস্থান করায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয়ে সাড়া না দেওয়ায় আবারো নিরাপত্তাহীতায় ভুগছেন অনশনকারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে অনশনকারীদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার বিষয়ে জানালেও তারা নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করে। তবে অনশনের নিরাপত্তার বিষয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার ও রংপুর কোতয়ালি থানার ওসিকে অনশনকারীদের পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়েছে। অনশনরত রসায়ন বিভাগের শিক্ষক এইচএম তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই উপাচার্যের অপসারণ। তাঁর অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নাজমুল হকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। সহকারী প্রক্টর মো: শাহজামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোর্শেদ উল আলম বলেন, ভিসি স্যার ঢাকা থেকে ফিরে এসেই এ বিষয়ে কথা বলবেন। প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি নিজেও প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাচ্ছি না।
বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম নূর-উন-নবী’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এই বিশ^বিদ্যালয়ের জন্যই ঢাকায় পড়ে আছি। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৮৩ টি নতুন পদ এবং শিক্ষকদের বকেয়া পাওনাদি(খাতা দেখার সম্মানী) বাবদ বেশকিছু টাকাও অনুমোদন নিয়েছি। অনশনরতদের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি বিনয়ের সাথে বলতেছি, আপনারা অনশন ভঙ্গ করুন। এভাবে চলতে পারে না। অনশন ভঙ্গ করে আসুন আমরা আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করি। আল্টিমেটামের ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের বাইরে কে বা কারা আল্টিমেটাম দিল সে বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই, অনেকেই এভাবে আল্টিমেটাম দিতে পারে। আগে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো সমাধান করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।