Connecting You with the Truth

ভারতে মানবপাচার চক্রের এক সদস্য বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের জালে

এম.আর.মিলন (ব্যুরো প্রধান চট্টগ্রাম)

সাম্প্রতিককালে বেশি বেতনের চাকরির প্রলোভনে ফেলে অসচ্ছল কিশোরীদের বিশেষত পোশাক শ্রমিকদের ভারতে পাচার করছিল একটি চক্র। চক্রটির মূল টার্গেট ছিল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করা কিশোরীরা। এর জন্যে তারা অবলম্বন করেছিল অভিনব কৌশলের। কেউ কিশোরীদের একত্রিত করতো; কেউ নিজেকে ভারতে উচ্চ বেতনে চাকরি করছে, তিন মাসেই হয়েছে তার ভাগ্যের পরিবর্তন—এসব বলে প্ররোচিত করতো কিশোরীদের। কিন্তু এসব প্রতারণার কৌশল উন্মোচিত হয়ে গেলো পুলিশের কৌশলের কাছে, শেষমেষ ধরা পড়তে হলো পুলিশের জালে। ধরা পড়ার পর একে একে বেরিয়ে আসে অজানা সব তথ্য।

গত ২৩/০৬/২৪ খ্রি. রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের একটি দল চন্দ্রনগর এলাকার একটি বহুতল ভবনে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে মোঃ তারেক (৩৪) নামের এক যুবককে। ধৃত তারেক চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকাসমূহে তারেক ও তার ডিজে দল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ-গান করতো। সেখান থেকেই পরিচয় হয় মানব পাচার চক্রের সঙ্গে। এই যুবক দীর্ঘদিন ধরে উঠতি বয়সের কিশোরীদের সড়কপথে যশোর নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে অবৈধভাবে ভারতে পাচার করছিল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক যুবক জানায়, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে নিয়ে কিশোরীদের পাচারে সংঘবদ্ধ চক্রের ভারতীয় সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতো তার স্ত্রী। আর তার স্ত্রীর বান্ধবী চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরির আড়ালে সেখানে কর্রর মেয়েদের সাঘে সখ্যতা তৈরি করতো। পরবর্তীতে তাদের অধিক বেতনে ভারতের পার্লারে চাকরি দেওয়ার নাম করে কৌশলে তারেক ও তার স্ত্রীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরবর্তীতে তারাসহ অন্যান্য আসামিদের পরস্পর যোগসাজশে যশোরের অজ্ঞাতনামা সীমান্ত ব্যবহার করে অবৈধ পথে ভারতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিভিন্ন ভয়-ভীতিসহ মারধর করে যৌন-শোষণের কাজে লিপ্ত করে।

উক্ত চক্রের মাধ্যমে পাচার হওয়া এক কিশোরী কৌশলে ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। বাংলাদেশে এসে উক্ত কিশোরী তার ও তার বান্ধবীর সাথে ঘটে যাওয়া সবকিছু বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশকে অবহিত করে। এরপর থেকেই উক্ত চক্রের খোঁজে নেমে পড়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের একটি দল। অবশেষে রবিবার এলো সাফল্য। এ ব্যাপারে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। আটক যুবককে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

Comments
Loading...