Connecting You with the Truth

বাঘায় ভেজাল খেজুর গুড়ে হাট বাজার সয়লাব

Bagha (Khejur Gur & Suger)-13-01-16

সেলিম ভান্ডারী, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: অধিক মুনাফার আশায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় চিনি মেশানো ভেজাল খেজুর গুড় তৈরির হিড়িক পড়েছে। প্রতিদিন ট্রাক ট্রাক চিনি মেশানো হচ্ছে খেজুর গুড়ে। উপজেলার ২টি পৌরসভা বাঘা, আড়ানী ও ৬টি ইউনিয়নের বাজু বাঘা, দাদপুর গড়গড়ী, পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, বাউসা, আড়ানীসহ প্রতিটি গ্রামে উৎপাদিত সুমিষ্ট খেজুরের গুড়ের সুনাম থাকায় দেদার খেজুরের গুড় তৈরি করা হচ্ছে চিনি মিশিয়ে। মুনাফালোভী চাষীরা খেজুর রসের সঙ্গে চিনি ও হাইড্রোজ মিশিয়ে গুড় তৈরি করে বাজারজাত করছে। আর এসব গুড় ছড়িয়ে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গুড়ের চেয়ে চিনির দাম কম হওয়ায় খেজুর গুড়ে চিনি মেশাচ্ছেন চাষীরা। ভোরবেলা গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে এসে কড়াইয়ে রসজাল করে লালচে বর্ণের হলেই চিনি ঢেলে দেয় কড়াইয়ে। তারপর একটু জাল দিলেই চিনিগুলিয়ে রসের সঙ্গে মিশে তৈরি হচ্ছে গুড়। খেজুর রসের সমপরিমাণ চিনি মেশানো হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি চিনির দাম ৩৮-৩৯ টাকা আর গুড় বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। গুড়ে চিনি মিশিয়ে চাষীরা প্রতিকেজি গুড়ে পাচ্ছে ৭-৮ টাকা বেশি। কোন কোন সময় গুড়ের দাম বেড়ে ৫৫-৬০ হয়। তখন প্রতি কেজি গুড়ে অতিরিক্ত লাভ হয় ১৫-২০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চাষী বলেন, রস জাল করে লালচে বর্নের হলেই চিনি মিশিয়ে দেয়া হয়। চিনি গলে গেলে হাইড্রোজ, ফিটকারিতে রস গাড়ো হয়ে গুড়ের রং হয় উজ্জ্বল। চিনি, হাইড্রোজ, ফিটকিরি মিশ্রিত গুড় দেখতে চকচকে ও অনেক সুন্দর লাগে। সে কারণে বাজারে চাহিদাও অনেক বেশি। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিটি গ্রামের চাষীরা একইভাবে গুড় তৈরি করছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের আমদানি হওয়া খেজুর গুড়ের ৯৮ ভাগই চিনি মিশ্রিত গুড়।
বাঘা উপজেলার গুড় ব্যাবসায়ী জালাল জানান, বর্তমানে হাট-বাজারে আমদানি খেজুর গুড়ের অধিকাংশই চিনি মিশ্রিত ভেজাল। আমরা কেনার সময় টের পেলেও কিছু করার থাকে না। কারণ চিনি মিশ্রিত ব্যতীত স্বচ্ছ খেজুর রসের তৈরি গুড় পাওয়া এখন দুষ্কর।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হামিদুল ইসলাম বলেন, খেজুর রসের সঙ্গে চিনি ও অন্যান্য উপকরণ মেশানোর খবর পেয়েছি। আর এই চিনি মিশ্রিত ভেজাল গুড় দিয়ে কোন খাদ্যদ্রব্য তৈরি করে খেলে মানবদেহের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতিকারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এর ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা চলছে।

Comments