মনমোহন সিংকে নিয়ে বলিউডে সিনেমা
অক্সফোর্ডের শিক্ষক ছিলেন তিনি, ছিলেন ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর। পরবর্তী সময়ে হন ভারতের অর্থমন্ত্রী। সবশেষে হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পর একমাত্র তিনিই ভারতের প্রধানমন্ত্রী যিনি পরপর দুবার পূর্ণ মেয়াদের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনি ড. মনমোহন সিং। মিতবাক এই মানুষটিকে নিয়ে এবার বলিউডে তৈরি হচ্ছে সিনেমা।
২০০৪ সাল থেকে টানা চার বছর ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মিডিয়া উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা সাবেক আমলা সঞ্জয় বারুর বিতর্কিত বই ‘দি অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার, দ্য মেকিং অ্যান্ড আনমেকিং অব মনমোহন সিং’ অবলম্বনে নির্মিত হতে চলেছে এই সিনেমা। জানা গিয়েছে, সঞ্জয় বারুর বইটির স্বত্ব কিনে নিয়ে ছবি করতে চলেছেন ভারতের প্রায় ১৪০টি সিনেমার প্রযোজক সুনীল বোহরা। ২০১৭ সাল নাগাদ প্রায় এক ডজনেরও বেশি ভাষায় ভারতে ও ভারতের বাইরে মুক্তি দেওয়া হবে মনমোহন সিংয়ের ওপর করা চলচ্চিত্রটি।
তবে এই ছবি মুক্তি পেলে কংগ্রেসে বিড়ম্বনা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ। কারণ, ২০১৪ সালে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের আগে সঞ্জয় বারুর বই ‘দ্য মেকিং অ্যান্ড আনমেকিং অব মনমোহন সিং’ প্রকাশ পেতেই বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। ওই বইতে দাবি করা হয়েছে মনমোহন সিংকে সামনে রেখে মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সিদ্ধান্ত নিতেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এবার বইয়ের সেই বক্তব্য সিনেমার পর্দায় এলে স্বভাবতই কংগ্রেস শিবিরে অস্বস্তি বাড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
এরই মধ্যে এই ছবির জন্য প্রযোজক সুনীল বোহরা সোনিয়া গান্ধীর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিদেশি সংস্থাগুলোর কাছে অভিনেত্রীর খোঁজ চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের এক তরুণ অভিনেতাকে মনমোহন সিংয়ের জন্য বাছা হয়েছে। মনমোহন সিংয়ের সাবেক মিডিয়া উপদেষ্টা সঞ্জয় বারুর চরিত্রে অভিনয় করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে অভিনেতা মনোজ বাজপেয়িকে। ছবিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনমোহনের এক দশককে তুলে ধরা হবে।
চলতি বছরের আগামী ৩০ আগস্ট এই সিনেমার ফার্স্ট লুক টিজার প্রকাশ করা হতে পারে। জানা গেছে, সেখানেই নাকি দেখানো হবে সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওকে দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অন্ত্যেষ্টি করতে রাজি হয়নি। কংগ্রেস নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় যাতে রাওয়ের ছেলেকে বুঝিয়ে শুনিয়ে হায়দরাবাদে তার দাহ করানো হয়। এই রকম নানা ঘটনা যদি ছবিটিতে রাখা হয়, তাহলে তা কংগ্রেস শিবিরে যথেষ্ট বিড়ম্বনার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।