মাদ্রাসার ৬ ছাত্রের চুল কেটে দিলেন শিক্ষক, স্থানীয়দের মাঝে সমালোচনা ও ক্ষোভ
লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মাদ্রাসায় ক্লাস চলাকালীন ৬ ছাত্রের চুল কেটে দিয়েছেন শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির। শুক্রবার ঘটনাটি জানাজানি হয়। এনিয়ে অভিভাবকসহ স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এরআগে গত বুধবার উপজেলার বামনী ইউনিয়নের হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদ্রাসায় ওই ছাত্রদের চুল কাটার ঘটনা ঘটে। তারা মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র। চুল কাটার লজ্জায় তারা ক্লাস না করে বের হয়ে যায়।
চুল কেটে দেওয়া শিক্ষার্থীরা জানায়, ঘটনার দিন তারা ইংরেজী ক্লাস করছিল। হঠাৎ করে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির এসে শ্রেণিকক্ষ থেকে তাদেরকে ডেকে নেয়। এরপর তিনি একে একে তাদের ৬ জনের মাথার চুল কাঁচি (কেঁচি) দিয়ে কেটে দেন। পরে লজ্জায় তারা ক্লাস না করে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে যায়।
মাদরাসার দাখিল শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী চুল কাটার বিষয় নিশ্চিত করে।
জানতে চাইলে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির বলেন, আমি সবাইকে চুল কেটে মাদ্রাসায় আসার জন্য বলেছি। কিন্তু ওই ৬ ছাত্র আমার কথা শোনেনি। অবাধ্য হওয়ায় তাদের চুল আমি কেটে দিয়েছি। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই তাদের চুল কাটা হয়েছে।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বালাগাত উল্যাহ বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। শিক্ষার্থীরাও আমাকে জানায়নি। সম্প্রতি আমি জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন মুন্সী বলেন, মঞ্জুরুল কবির জামায়াতে ইসলামের বামনী ইউনিয়নের আমির।প্রায়ই তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। শিক্ষার্থীরা ছাড়া অন্যান্য শিক্ষকরাও তার কাছে নিরুপায় হয়ে থাকে। মাদ্রাসাটিকে তিনি জামায়াতের স্টাইলে চালাতে চায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম সাইফুল হক বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। তবে কেউ কোন অভিযোগ করেননি। সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবুও ঘটনাটি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরীন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।