রংপুরে ইভটিজিংয়ে বাধা দেয়ায় দুই ছাত্রকে কুপিয়ে জখম; সংঘর্ষের আশঙ্কায় নগরীর দুই গ্রামবাসি
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর: ইভটিজিংয়ে বাধা দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই মাদরাসা ছাত্রকে বেধড়ক মারপিট ও কুপিয়ে জখম করেছে বখাটেরা। আহত দুই ছাত্র বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর মহানগরীর ট্রাক স্ট্যান্ড হাবিবনগর (আকালিটারী) এলাকায়। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দুটি গ্রামের মধ্যে।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, নগরীর নিউ আদর্শপাড়ার মাদরাসা ছাত্র জুয়েল মাহমুদ তার ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে হাবিবনগর (আকালিটারী) এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বেড়াতে যায়। এসময় মোসাদ্দেক হোসেন বাপ্পী, মনিরুজ্জামান জনি, আখেনুর রহমান, মাহমুদ হাসান, মোশাররফ হোসেনসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন যুবক তাদের পথ আগলে ধরে অশালীন ভাষায় উত্তক্ত করে। প্রেম নিবেদনের প্রস্তাব দেয়। এতে মাদরাসা ছাত্র জুয়েলের সাথে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হলে ওই বখাটেরা তাদেরকে আটক করে মারপিট করে এবং ব্ল্যাকমেইলের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। অন্যথায় তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেয়ার হুমকি ধামকিও দেয়। এসময় খবর পেয়ে জুয়েলের বড় ভাইসহ বেশ কয়েকজন সেখানে উপস্থিত হলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়াধাওয়ি শুরু হয়। উত্তেজিত বখাটেরা মাদরাসা ছাত্র জুয়েল মাহমদু ও মেহেদী হাসানকে বেধড়ক মারপিট করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এলাকাবাসি।
অন্যদিকে এঘটনা জানাজানি হলে টার্মিনাল রোড হাজীপাড়া এলাকার অবস্থিত হাবিবনগরের হাসিদুর রহমান পুটুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মোসাদ্দেক হোসেন বাপ্পী ও মোশাররফ হোসেনসহ তার আতœীয় মনিরুজ্জামান জনি, আখেনুর রহমান ও মাহমুদ হাসানের ব্যপারে অবগত করতে গেলে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা বেঁধে যায় এবং বিক্ষিপ্ত ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এব্যপারে স্থানীয় কাউন্সিলর, ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাটিকে ভুল বোঝাবুঝি থেকে সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে তা মীমাংসার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেন। কিন্তু তাতে সায় না দিয়ে ইভটিজিংয়ের ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে হাসিদুর রহমান পুটু ও হাসানুর রহমান মিথ্যা তথ্য দিয়ে থানায় অভিযোগ করার পাশাপাশি শুক্রবার স্থানীয় বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন করায় নতুন করে ফের উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসিদুর রহমান পুটুসহ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা। তারা জানান, ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরেই স্থানীয়রা তার প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
এ ব্যপারে স্থানীয় ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবার রহমান মঞ্জু বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আজকালের মধ্যেই উভয়গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে এটির মীমাংসা করা হবে বলে জানান তিনি।