রাজধানীতে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের নিয়ে হেযবুত তওহীদের গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত
প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক করেছে হেযবুত তওহীদ। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বাগিচা রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টারে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় ধর্মান্ধতার উত্থান: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন হেযবুত তওহীদের এমাম ও জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ-সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সোসাইটির চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- এটিএন বাংলার চিফ এক্সিকিউটিভ এডিটর জ. ই. মামুন, দেশটিভির এডিটর ইন চিফ সুকান্ত গুপ্ত অলোক, মাইটিভির হেড অব নিউজ মাহমুদ আল ফয়সাল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাহী সদস্য মো. জাকির হোসেন, বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জাকারিয়া কাজল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী সোহেল, ঢাকা সাংবাদিক ফোরামের কার্যকরী সদস্য আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেক্রেটারীয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম এর কার্যকরী সদস্য লায়ন কে এম আসাদুজ্জাামান, ঢাকা বিভাগ সাংবাদিক ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কচি সহ আরো অনেকে। দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক ও হেযবুত তওহীদের নারী বিষয়ক সম্পাদক রূফায়দাহ পন্নীর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন- হেযুবত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী, সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ বিভিন্ন প্রশ্ন এবং প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, মুসলিমপ্রধান দেশগুলোয় গত চার দশক ধরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সমাজতন্ত্র এবং দুই দশক ধরে পশ্চিমা বিশ্ব কর্তৃক পুঁজিবাদী গণতন্ত্র গেলানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় উত্থান ঘটে উগ্রবাদী তালেবানের। তালেবানের ক্ষমতা দখলের প্রেক্ষাপটে আবারও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিগত সময়ে ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন মুসলিম বিদ্বেষী ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে। মূলত এ ধরনের মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনাগুলোই ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ সৃষ্টিতে ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে থাকে। বক্তারা আরো বলেন, শুধুমাত্র শক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা সম্ভব নয়। এরজন্য প্রয়োজন একটি সঠিক আদর্শ; যা জঙ্গিবাদের অসারতা প্রমাণ করতে সক্ষম। যেহেতু জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলো কোর’আন, হাদিস ও ইসলামের ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা দ্বারা উদ্বুদ্ধ, কাজেই তাদেরকে কোর’আন হাদিসের সঠিক আকিদা দিয়েই বোঝাতে হবে জঙ্গিবাদের পথ ভুল।
মূল বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, “রাজনৈতিক অঙ্গনে ধর্মের অপব্যবহার হওয়ায় দিনদিন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, হুজুগ, গুজব, ধর্মীয় উন্মাদনা ইত্যাদি বেড়েই চলছে। আর ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি সরাসরি রাজনীতির সাথে যুক্ত না থাকলেও বিভিন্ন ইস্যুতে একজোট হয়ে জ্বালাও-পোড়াও সহিংসতা করতে দেখা যায়। যারা রাষ্ট্রধর্ম ইস্যু, কথিত নাস্তিকদের ফাঁসির দাবি, ভাস্কর্য-মোদীবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন ইস্যুতেএসব গোষ্ঠীকে রাস্তায় নামতে ও সহিংসতা করতে দেখা গেছে। এরাই বিভিন্ন সময় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও ভিন্নমতের মুসলিমদের উপর হামলা চালিয়ে এসেছে, যাদের বিরুদ্ধে কোনো সরকারই শক্ত ব্যবস্থা নেয় নি।” ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর বর্বরোচিত হামলা ও দুইজন সদস্যকে জবাই করে হত্যার ঘটনাটি এমনই এক যৌথ আক্রমণের ঘটনা ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
হেযবুত তওহীদের এমাম আরো বলেন, জঙ্গিবাদসহ ধর্মের নামে যাবতীয় অধর্মের বিরুদ্ধে আদর্শিক মোকাবেলায় হেযবুত তওহীদ দেশব্যাপী জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণকে নিয়ে হাজার হাজার আলোচনা সভা, মতবিনিময়, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, র্যালি, পথসভা, মানববন্ধন ইত্যাদি করেছে। এছাড়া হেযবুত তওহীদ গণমাধ্যমকর্মী, সাংস্কৃতিককর্মী ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সাথে মতবিনিময়, সভা-সেমিনার ইত্যাদি আয়োজন করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ভূমিকা রাখার উপায় প্রস্তাব রেখেছে বলে যোগ করেন তিনি।
বিশিষ্ট গণমাধ্যমকর্মী এটিএন বাংলার চিফ এক্সিকিউটিভ এডিটর জ. ই. মামুন বলেন, হেযবুত তওহীদের সাথে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘হিযবুত তাহরীরের’ নামের মিলের কারণে হেযবুত তওহীদ অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছে। এরফলে অনেক গণমাধ্যমও বিভ্রান্ত হয়েছে। এই বিভ্রান্তি নিরসনে আপনাদের কাজ করা উচিত।
‘হেযবুত তওহীদ বাংলাদেশকে সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তানের মত জঙ্গিবাদ কবলিত রাষ্ট্রে পরিণত হতে দিবে না’ -অঙ্গীকার ব্যক্ত করে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম সকল শান্তিকামী মানুষকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, অপরাজনীতি, ধর্মান্ধতা ও ধর্মের নামে যাবতীয় অধর্মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ কণ্ঠস্বরের অনলাইন বিভাগের সম্পাদক মুসফিকুর রহমান তার বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের মা-মাতৃভূমিকে রক্ষার কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। হেযবুত তওহীদের আদর্শ প্রচারের জন্য তিনি বলেন, সঠিক আদর্শ প্রচারের জন্য গ্রামে গঞ্জে মসজিদ নির্মাণের পাশাপশি আপনাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করুন। হেযবুত তওহীদের কার্যক্রম দেশব্যাপি এগিয়ে নিতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ে হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও ‘গণমাধ্যমে হেযবুত তওহীদ’, ‘হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিমকে হত্যার হুমকি’ ও ‘ধর্মান্ধতার কবলে বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।